মন্তব্য করে বিতর্ক বাধার পরে তা থেকে সরে আসার ‘চেনা’ পথেই হাঁটলেন কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রাহুল গাঁধীর প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে করা মন্তব্য থেকে সরে এলেন শ্রীপ্রকাশ। এবং ‘ভুল বোঝার’ দায় চাপিয়ে দিলেন সংবাদমাধ্যমের ঘাড়ে! শুধু তা-ই নয়, তিনি আজ এ-ও জানান, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রীর কাজে খুশি। তাই প্রধানমন্ত্রী বদলের কোনও সম্ভাবনা এখন নেই।
শনিবারই মথুরার একটি জনসভায় ‘রাহুল গাঁধী চাইলে যে কোনও সময়ে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন’ বলে বিতর্কে জনিয়ে পড়েন কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী। তাঁর মন্তব্যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েন কংগ্রেসেরে শীর্ষ নেতৃত্ব। এর পরেই আজ নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসতে বাধ্য হন শ্রীপ্রকাশ। বলেন, “মনমোহন সিংহের কাজে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব খুশি। এই মুহূর্তে দেশ চালাবার জন্য মনমোহন সিংহের থেকে যোগ্য ব্যক্তি কেউ নেই। এবং দল চায় তিনি সেই দায়িত্ব পালন করুন।” পাশাপাশি রাহুল সংক্রান্ত নিজের বক্তব্য নিয়ে সাফাই দিতে তিনি বলেন, “রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য লালায়িত নন। তিনি পদ নন, উত্তরপ্রদেশ তথা গোটা দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে চান।” তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হওয়ার যে সম্ভাবনা একেবারে তিনি। |
রাহুল গাঁধীকে স্বাগত জানাচ্ছেন দলীয় প্রার্থী সমীর ভাটি। রবিবার
উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে একটি নির্বাচনী জনসভায়। ছবি: পি টি আই |
শ্রীপ্রকাশের কথায়, “রাহুলই সিদ্ধান্ত নেবেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হবেন কি না।” শ্রীপ্রকাশের মন্তব্যের পরে অনেকেই মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন চলাকালীন রাহুল-বন্দনা থেকে আপাতত সরে আসছে না তাঁর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতারা।
দিন কয়েক আগে এই শ্রীপ্রকাশই ‘উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকার না হলে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে’ বলে বিতর্ক বাধিয়েছিলেন। এর ফলে এক দিকে যেমন নির্বাচন কমিশন কয়লামন্ত্রীকে শো-কজ নোটিস পাঠায়, অন্য দিকে ওই মন্তব্য ঘিরে মতান্তর দেখা দেয় কংগ্রেস শিবিরের মধ্যেও। দলের একাংশ এখন মনে করছে, ওই মন্তব্যের জেরে উত্তরপ্রদেশের মানুষ বাকি দু’দফা ভোটে স্থায়ী সরকার গড়ার দিকেই ঝুঁকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মায়াবতী-মুলায়মের মতো আঞ্চলিক দলগুলির দিকেই ভোটের মেরুকরণ হতে পারে বলে আশঙ্কা কংগ্রেসের একাংশে।
রাষ্ট্রপতি শাসন সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক থিতিয়ে যাওয়ার আগেই গত কাল রাহুল-প্রশস্তি করতে গিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি করেছেন শ্রীপ্রকাশ। অনেকেই মনে করছেন, ওই বক্তব্য আসলে কংগ্রেসের মধ্যেকার বিভাজনকে সামনে এনেছে। উত্তরপ্রদেশ নির্বাচন চলাকালীন দলীয় বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠুক তা মোটেই কাম্য নয় কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে। তাই দলের নির্দেশেই আজ ক্ষত মেরামতিতে সক্রিয় হয়ে শ্রীপ্রকাশ জানান, “মনমোহন সিংহ কঠিন সময়ে দেশের হাল ধরেছিলেন। দলের সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও সাধারণ সম্পাদক রাহুল গাঁধী প্রধানমন্ত্রীর কাজে সন্তুষ্ট। এই মুহূর্তে নেতৃত্ব পরিবর্তনের কোনও প্রশ্নই নেই।” |