কেতুগ্রামের তদন্ত রাজ্য পুলিশকেই দিল রেল
কেতুগ্রামে ট্রেন থেকে নামিয়ে ধর্ষণের ঘটনার তদন্তভার রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দিল রেল পুলিশ। রবিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে এ কথা জানান রেলপুলিশের ডিজি দিলীপ মিত্র। তিনি বলেন, “আমরা যে এলাকায় তদন্ত করতে পারি, তার পরিধি বড় নয়। তাই ঘটনার তদন্তভার রাজ্য পুলিশকে দেওয়া হল।” রাজ্য পুলিশের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) গঙ্গেশ্বর সিংহ জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। এ দিন ভোরেই বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদ থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের খাতিরে তাদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যায় আমোদপুর থেকে কাটোয়াগামী চার কামরার লোকালে চালক ও গার্ডকে আটকে রেখে লুঠপাট চালায় জনা আটেক সশস্ত্র দুষ্কৃতী। এক মহিলাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে পাশের ঝোপে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। কেতুগ্রামের পাচুন্দি ও অম্বলগ্রাম স্টেশনের মাঝে গোমাই গ্রামের কাছে ঘটনাটি ঘটে। ওই মহিলা বীরভূমের কীর্ণাহারে কাপড় বিক্রি করে ছোট মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাতে কাটোয়ায় রেলপুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ জানান তিনি।
ওই রাতেই কাটোয়া হাসপাতালে ডাক্তারি-পরীক্ষার পরে ভাসুর-জায়ের সঙ্গে বাড়ি ফেরেন অভিযোগকারিণী। তার কিছুক্ষণ পরেই ফের তাঁদের বাড়িতে যায় পুলিশ। ওই মহিলা ও তাঁর জা-কে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। মহিলার কাছ থেকে বিশদ বিবরণ শুনে ‘ঘটনা পুনর্গঠন’ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় বেশ কিছু মোবাইলের সিম কার্ড ও কয়েকশো টাকা। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ পুলিশ ওই মহিলাকে কাটোয়া জিআরপি অফিসে নিয়ে আসে। সেখানে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁর সঙ্গে কথা বলেন রেল পুলিশ সুপার (হাওড়া) মিলন দাস এবং ডিজি (রেল পুলিশ) দিলীপ মিত্র। এর পরে কাটোয়া থানায় তাঁর সঙ্গে কথা বলেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) ও বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মহিলার ছোট মেয়ের আশঙ্কা, “মাকে তো কাজের জন্য হামেশাই ওই ট্রেনেই যাতায়াত করতে হয়। ওই লোকগুলো সাংঘাতিক। কখনও ট্রেনে একা পেয়ে গেলে ওরা মাকে মেরে ফেলবে না তো?” বস্তুত, একই আশঙ্কা করছেন মহিলার পরিবারের অন্য সদস্যেরাও। এ দিন রেল পুলিশের কাছে সে কথা জানিয়েওছেন তাঁরা। পরে ওই মহিলা বলেন, “পুলিশের কাছে আমি দোষীদের চরম শাস্তি চেয়েছি। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। সে কথা পুলিশ-কর্তাদের জানিয়েছি। পুলিশ আমাকে আশ্বাস দিয়েছে।” মহিলার জা বলেন, “ঘটনার পরে বাড়ি ফিরে লজ্জায় ও কিছু বলতে পারেনি। কান্নাকাটি করছিল। পুলিশ আসার পরে ও প্রথম মুখ খোলে।”
এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ ঘটনাস্থলে যান রেলপুলিশের ডিজি এবং রাজ্য পুলিশের আইজি (পশ্চিমাঞ্চল)। আইজি বলেন, “ধর্ষণ ও ডাকাতি-- একই দুষ্কৃতীরা ঘটিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ভোরেই কয়েকজনকে জেরার জন্য কেতুগ্রাম থানায় আনা হয়েছে। কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষার প্রাথমিক রিপোর্ট রেলপুলিশের কাছে জমা দিয়েছেন। দিলীপবাবু বলেন, “মহিলার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। ফরেন্সিক রিপোর্ট পেলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।” এ দিনই হাওড়া ডিভিশনের অতিরিক্ত ডিআরএম (সাধারণ) কমলকৃষ্ণ পাত্রের কাছে যাত্রী সুরক্ষার দাবি জানিয়ে কাটোয়ার সিপিএম এবং কংগ্রেসের তরফে আলাদা ভাবে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ডিআরএম (সাধারণ) দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। পরে তিনি বলেন, “পুলিশকর্মীর অভাব থাকায় ট্রেনে নিরাপত্তা দেওয়ায় সমস্যা রয়েছে।” রেল পুলিশ সুপার (হাওড়া) মিলন দাস অবশ্য বলেন, “ওই লাইনে ট্রেনে রেলপুলিশ থাকবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ব্যাপারটা দেখছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.