কংগ্রেস নেতার ‘দাদাগিরি’, বেধড়ক মার স্কুল ছাত্রকে
মোবাইল চুরির অভিযোগে ৩ ছাত্রকে আটকে রাখা হয়েছিল একটি দোকানে। তাদের এক সহপাঠী এর প্রতিবাদ করলে তাকে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই তিন ছাত্রকে পুলিশ গ্রেফতার করে। দোকানের মালিক সঞ্জীব সাহা যুব কংগ্রেসের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি শাখার সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করলেও তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি। প্রহৃত ছাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ধৃত তিন ছাত্রকে আদালতে হাজির করানো হলে তাদের হোমে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে ভক্তিনগর থানার হায়দরপাড়া বাজার এলাকায়। সঞ্জীববাবুর দাদা দেবশঙ্কর সাহা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র পারিষদ (ট্রেড লাইসেন্স)। পুলিশ জানায়, প্রহৃত ওই ছাত্রের নাম সুমন ভৌমিক। তাকে মারধরে অভিযুক্ত সঞ্জীববাবুকে গ্রেফতার করা হয়নি কেন, সেই প্রশ্নে ভক্তিনগর থানার অফিসারদের কয়েকজন জানান, প্রাথমিক তদন্তের পরেই গ্রেফতার করা হবে। তবে, কংগ্রেস নেতার দোকানে মোবাইল চুরির অভিযোগে ৩ ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের মধ্যে এক জন একাদশ শ্রেণির এবং দু’জন নবম শ্রেণির ছাত্র। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “দু’টি অভিযোগেই মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। দু’টি ক্ষেত্রেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিলিগুড়ি হাসপাতালে সুমন ভৌমিককে দেখতে এসেছে তার স্কুলের বন্ধুরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
অভিযুক্ত সঞ্জীববাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি কাউকে মারধর করেননি। তাঁর দাবি, “আমি কাউকে মারধর করিনি। ওই ছাত্রেরা মোবাইল ফোন চুরি করলে তাদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিই। পরে শুনেছি, আমার নামে অভিযোগ করা হয়েছে।” সঞ্জবীববাবুর দাদা তথা ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবশঙ্করবাবু বলেন, “ভাইয়ের দোকানে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে ৩ জন ছাত্র ধরা পড়ে। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই সময় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র বিষয়টি নিয়ে ভাইকে খারাপ ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করলে এলাকার এক বাসিন্দা একটি চড় মারে। এখন শুনছি ভাইয়ের নামে থানায় অভিযোগ হয়েছে।”
এই ঘটনার পরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকাতেই। অভিযোগ, ছেলেটিকে যে ভাবে মারধর করা হয়েছে তা ‘দাদাগিরি’ ছাড়া কিছু নয়। ঘটনাটি যাঁরা দেখেছেন তাঁদের অনেকেই শঙ্কিত। প্রহৃত সুমনের বাবা সত্যেনবাবু বলেন, “মারধরের সময়ে প্রতিবাদ করলে আমাকেও শিলিগুড়ির যে কোনও প্রান্তে গিয়ে মারা হবে বলে সঞ্জীববাবু হুমকি দিয়েছেন।
তবে সঞ্জীববাবু হুমকির কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ওই দিন দুপুরে কয়েকজন ছাত্র ‘ক্যাশ-কার্ড’ কিনতে দোকানে ঢোকে। ওই সময়ে এক জন মোবাইল নিয়ে পালায়। তিনি তা টের পেয়ে অন্য দু’জনকে আটকে রাখেন। তার পরে মোবাইল-সহ তৃতীয় ছাত্রকে ধরে দোকানে আনেন তিনি। ওই সময়ে সুমন সেখান দিয়ে যাচ্ছিল। সে দোকানে ঢুকে তাঁর স্কুলের পোশাক পরা ছাত্রদের কেন আটকে রাখা হয়েছে তা জানতে চাইলে কয়েকজন বাসিন্দা উত্তেজিত হয়ে পড়েন বলে সঞ্জীববাবুর দাবি। কিন্তু, হাসপাতালে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে সুমন বলে, “আমাদের স্কুলের ছেলেদের ওভাবে আটকে রাখা হয়েছে দেখে প্রশ্ন করেছিলাম। হেড স্যারকে ডেকে আনব বলেছিলাম। তাতেই মার খেলাম। আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। ভীষণ ভয় করছে। আমাকে আবার মারতে পারে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.