পারিবারিক ‘বন্ধু’র দেওয়া কেক ও পানীয় খেয়ে একটি বাড়ির সবাই বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। সেই সুযোগে ‘বন্ধু’ বাড়ি থেকে সর্বস্ব নিয়ে গা ঢাকা দিল। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির বলাগড়ের আব্দুলপুর গ্রামে। শনিবার সকালে মহিলা-সহ বাড়ির ১২ জন সদস্যকে গ্রামবাসীরা বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান।
জেলা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বলাগড়ের সোমরা-১ পঞ্চায়েতে আব্দুলপুর গ্রাম। ওই গ্রামের প্রফুল্ল ঘোষের বাড়ির প্রত্যেকে শুক্রবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই বাড়ির ছেলে শিবানন্দ ঘোষ ওরফে শিবু নবম শ্রেণিতে পড়ে। তার সঙ্গে বাপ্পা নামে এক যুবকের বন্ধুত্ব হয় বছর দেড়েক আগে। সেই থেকেই ঘোষ বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত বাপ্পার। বছর পঁচিশের বাপ্পার সঙ্গে শিবুর আলাপ হয় তার মামার বাড়ি কালনার সর্বমঙ্গলা গ্রামে। ক্রমশ তার নম্র ব্যবহারে বাড়ির অন্য সদস্যদের মন জয় করে নেয় সে। হাসপাতালে শিবু জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ৮টা নাগাদ তাদের বাড়িতে আসে বাপ্পা। তার হাতে ছিল একটি বড় কেকের বাক্স এবং এক লিটারের ঠান্ডা পানীয়। তার আবদারে বাড়ির সকলেই তা খান। |
কালনা হাসপাতালে ভর্তি ঘোষ পরিবারের সদস্য। ছবি:কেদারনাথ ভট্টাচার্য |
শনিবার সকালে উঠে প্রতিবেশীরা দেখেন ঘোষ বাড়ি থেকে কোনও সদস্য বাইরে আসেননি। সকাল ৮টা নাগাদ কয়েক জন গ্রামবাসী তাদের বাড়িতে যায়। গ্রামের বাসিন্দা অখিলবন্ধু ঘোষ জানান, সেখানে গিয়ে স্থানীয় মানুষ দেখেন কোনও দরজা খোলা, আবার কোনওটা বন্ধ। বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছেন সবাই। ঘরগুলিতে ছড়নো রয়েছে আলমারির জিনিসপত্র সমেত নানা আসবাবপত্র। জ্ঞান ফিরলে হাসপাতালে পরিবারের মেয়েরা দেখেন তাঁদের গায়ের গয়নাও নেই। এর পর আর তাঁদের বুঝতে কোন অসুবিধাই হয়নি, ঠান্ডা পানীয় ও কেকের মধ্যে মেশানো ছিল চড়া মাদক।
প্রফুল্লবাবুর ছেলে উত্তম ঘোষ বলেন, “হাসপাতাল থেকে বাড়ি না যাওয়া পর্যন্ত সঠিক ভাবে বলতে পারছি না আরও কী কী খোওয়া গিয়েছে। এ ভাবে প্রতারিত হব ভাবিনি।” কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি থাকা ঘোষ পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বলাগড় থানার পুলিশ। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “ওই ঘটনায় অসুস্থদের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে পুলিশ তাঁদের সঙ্গে বিস্তারিত ভাবে কথা বলবে। ওই ঘটনায় শুধু বাপ্পা না আরও কেউ জড়িত তা তদন্ত করে দেখা হবে।” |