অ্যাডমিট কার্ড না-আসায় স্কুল কর্তৃপক্ষ দুই ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি না-দিলে গোলমাল হয় মালদহ সুজাপুরে। শুক্রবার অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখালে কালিয়াচক-১ ব্লকের বিডিও ও জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে মুজমপুর এইচএসএসবি হাই স্কুলের দুই ছাত্রীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়। এ দিন গোটা রাজ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনেই কয়েকটি গোলমালের খবর মিলেছে। মাদ্রাসার অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা পড়ে উত্তর দিনাজপুরে করণদিঘির রসাখোয়া হাইস্কুলের এক ছাত্র। শুক্রবার মানিক বিশ্বাস নামে ওই ছাত্র এক আত্মীয়ের মাদ্রাসার অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে দোহারিন হাই স্কুলে পরীক্ষা দিতে যায়। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার পরে প্রথমে সে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানায়, তার অ্যাডমিট কার্ড হারিয়ে গিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে ওই ছাত্রটি পরে মাদ্রাসা পরীক্ষার ওই অ্যাডমিট কার্ডটি দেখায়। খোঁজ নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, ওই ছাত্র এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ করেনি। ফর্ম ফিলআপের টাকা দিয়ে সে মোবাইল কিনেছিল। বাড়ির লোকেরা যাতে টের না-পায় সেই জন্য মাদ্রাসা অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এদিন স্কুলে যায়। এ দিন জেলার চোপড়ার কালীগঞ্জ স্কুলে মাধ্যমিকের ‘রেগুলার’ হিন্দিভাষী পরীক্ষার্থীদের ‘এক্সার্নাল’দের জন্য নির্দিষ্ট প্রশ্নপত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে ওই ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগ জানালে প্রশ্নপত্র বদলে দেওয়া হয়। ইসলামপুরের বিডিও শমিক ঘোষ বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উত্তরবঙ্গের আধিকারিক দেবাশিস দত্ত বলেন, “যা খবর পেয়েছি তাতে ছোটখাটো কয়েকটি সমস্যা ছাড়া মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্বিঘ্নে শেষ করতে সমস্ত রকমের ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। আজ প্রথম দিনের পরীক্ষা সর্বত্র নির্বিঘ্নে শেষ হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।” পষর্দ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার উত্তরবঙ্গ থেকে মোট ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৯৮২ জন ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। গত কয়েক বছরের মতো এ বারও দেখা গিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যাই বেশি। উত্তরবঙ্গ জুড়ে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ১ লক্ষ ১১ হাজার ৮১৩ জন। ছেলেদের সংখ্যা ১ লক্ষ ১ হাজার ১৬৯ জন। উত্তর দিনাজপুরে এ বছর ১৫ জন দৃষ্টিহীন ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় দিচ্ছে। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন ১২ জন পরীক্ষার্থী।পরীক্ষা চলাকালীন জেরক্সের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ এ বারও জারি করা হলেও শিলিগুড়ির বহু দোকানে সেই নির্দেশ পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ। শিলিগুড়িতে এতদিন ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্থ বেঙ্গলের (ফোসিন) পক্ষ থেকে পর্ষদের ওই নির্দেশ সমস্ত জেরক্সের দোকানে পাঠানো হত। ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আজই সকালে ওই নির্দেশ হাতে পেয়েছি। তার পরেই যত দ্রুত সম্ভব সেগুলি সমস্ত দোকানে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। অন্যান্যবার অনেক আগেই এই নির্দেশ আমাদের হাতে পৌঁছে যেত।” পর্ষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি লাগোয়া বেলাকোবার মুদিপাড়া নগেন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ে এদিন নির্বিঘ্নে পরীক্ষা হয়েছে। স্কুলে মৌমাছির চাক তৈরি হওয়ায় নির্বিঘ্নে পরীক্ষা শেষ করা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার রাতে সমস্ত চাক ভেঙে দেন তাঁরা। |