চন্দ্রকেতুগড়ে বাংলার প্রাচীন মুখের আশায় অমর্ত্য
বিষ্কারের পরে মহাসমারোহে একচোট উৎখনন চলেছিল। তার পরে বহু বছর ধরে ফের প্রায় ঘুমিয়েই আছে চন্দ্রকেতুগড়। সম্প্রতি তাকে নিয়ে নতুন করে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে রাজ্য হেরিটেজ কাউন্সিলের। সেই আগ্রহে সামিল হয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও। তিনি শুক্রবার বলেন, “চন্দ্রকেতুগড়কে নিছক একটা গড় হিসেবে দেখলে চলবে না। চন্দ্রকেতুগড় ঘিরে একটা বড় সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।” অমর্ত্যবাবুর আশা, চন্দ্রকেতুগড়ে নতুন করে উৎখনন হলে সেখানে বাংলার ইতিহাস পুনর্নির্মাণের বহু মূল্যবান উপাদান মিলতে পারে।
সেই কাজ যাতে ফের শুরু করা যায়, সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য হেরিটেজ কাউন্সিল। চন্দ্রকেতুগড়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সংগ্রহশালা গড়ে তুলবে তারা। কিন্তু খনন বা সংগ্রহশালা সব কিছুতেই মূল বাধা জবরদখল। কয়েক বছর আগে তদানীন্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গাঁধীর সঙ্গে অমর্ত্যবাবু গিয়েছিলেন চন্দ্রকেতুগড়ে। উৎখনন শুরু করার অসুবিধাটা উপলব্ধি করেছেন তিনিও। অমর্ত্যবাবু বলেন, “যে-সব জায়গায় উৎখনন হয়েছে, তারও চার পাশে এত ঘন বসতি গড়ে উঠেছে যে, সেখানে নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি করাই মুশকিল।” এটা স্বীকার করে নিয়েছেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান শুভাপ্রসন্নও। তাঁর কথায়, “খননে বাধা পড়ছে। প্রত্ন এলাকা চিহ্নিতকরণে বাধা পড়ছে। চার পাশে প্রচুর বসতি। কিছু করতে গেলেই জমির প্রয়োজন হবে। তার জন্য কাউকে সরাতে গেলে তার বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।”
ফের উৎখননের অপেক্ষায় চন্দ্রকেতুগড়। ফাইল চিত্র।
সে বড় সহজ কাজ নয়। মেনে নিচ্ছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুগত বসুও। চন্দ্রকেতুগড়ের মতো একটি দুর্লভ প্রত্ন নিদর্শন বিশ্বের সামনে নতুন করে তুলে ধরার জন্য ওই এলাকাতেই একটি আন্তর্জাতিক আলোচনাচক্রের আয়োজন করতে চান সুগতবাবু। তিনি বলেন, “অমর্ত্যবাবুর সঙ্গে আলোচনা করে এটা চূড়ান্ত করব।” সুগতবাবু জানান, প্রাক্-মৌর্য যুগ তো বটেই। তারও অনেক আগে ছিল চন্দ্রকেতুগড়। ইতিহাসের ওই অধ্যাপকের কথায়, “চন্দ্রকেতুগড় নিয়ে আমরা আবার করে কাজ শুরু করলে বাংলার ইতিহাস নতুন করে লেখা যাবে। বাংলার সঙ্গে সেই সময় পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল কি না, জানা যাবে তা-ও।”
কিন্তু যা নিয়ে আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি, তা হল চন্দ্রকেতুগড়ের অমূল্য প্রত্নসামগ্রীর অবাধ লুঠপাট। সেই আশঙ্কা প্রকাশ করে সেন্টার ফর আর্কিওলজিক্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের অধিকর্তা কৃষ্ণা বসু বলেন, “আমাদের চেষ্টা হবে লুণ্ঠন বন্ধ করা।”
সমস্যা রাস্তা নিয়েও। চন্দ্রকেতুগড়ে পৌঁছনোর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে অমর্ত্যবাবু বলেন, “এ বার একটা অতি বাস্তব কথা বলব। রাজ্যপালের সঙ্গে মাত্র ৩৪ কিলোমিটার দূরে চন্দ্রকেতুগড়ে পৌঁছতে আমার সময় লেগেছিল দু’ঘণ্টা। রাস্তা না-হলে কিছুই করা যায় না।” তাই চন্দ্রকেতুগড়ে যে-কোনও কাজ শুরু করার আগে রাস্তাটা সুগম করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.