প্রসবে সাহায্য ভিখারিনীর, সুস্থ মা ও নবজাতক
বাসস্ট্যান্ডে ভিক্ষা করছিলেন প্রৌঢ়া এক মহিলা। পরনে ময়লা শাড়ি। হঠাৎই তাঁর খেয়াল হয়, প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েছেন এক মহিলা। সবে রিকশা ভ্যানে করে বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন মাসুদা বিবি নামে ওই মহিলা। সঙ্গে কেবল দু’টি বাচ্চা। এক জনের বয়েস ৯ আর এক জনের ৪। সাহায করার কেউ নেই দেখে তখন এগিয়ে আসেন রোকেয়া বেওয়া নামে ওই ভিখারিণী। মায়ের মতোই দাঁড়ালেন পাশে। এগিয়ে আসেন বাস কর্মী ও স্থানীয় যুবকেরা। ওই জায়গাটুকু কাপড় দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পরে রোকেয়া বেওয়ার হাতেই জন্ম নেয় মাসুদা বিবির কন্যাসন্তান। দুই পুত্রের পরে এই মেয়ে।
শুক্রবার বেলা ১১টা নাগাদ রঘুনাথগঞ্জ থেকে নবগ্রামে দুই ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা মাসুদা বিবি। বাসস্ট্যান্ডেই প্রসব যন্ত্রণা ওঠে তাঁর। সাহায্যে এগিয়ে আসেন এক ভিখারিনীও। তাঁর সাহায্যেই মাসুদা বিবি জন্ম দেন এক মেয়ের। পরে তাঁকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিধান মহান্তি বলেন, “শিশু ও মা দুজনেই সুস্থ আছেন।”
হাসপাতালে রোকেয়া বেওয়ার সঙ্গে মাসুদা বিবি। নিজস্ব চিত্র।
মাসুদা বিবির বাড়ি রঘুনাথগঞ্জের দফরপুর গ্রামে। স্বামী রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে মুম্বাইয়ে থাকেন। এ দিন দুই ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাপের বাড়ি। প্রসবের দিন আরও তিন সপ্তাহ পরে হলেও এ দিন বাসস্ট্যান্ডে এসেই যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। ছেলেরাও কাঁদতে শুরু করে। বাস কর্মী সংগঠনের আইএনটিইউসি কর্মী যুবরাজ শেখ বলেন, “পাশেই হাসপাতাল হলেও ওই মহিলা নিয়ে যাওয়ার অবস্থায় ছিলেন না। ইউনিয়ন অফিস থেকে দুটো কাপড় যোগাড় করে কোনও রকমে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের কোনও অভিজ্ঞতা না থাকায় কী করতে হবে বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ এক বৃদ্ধা মহিলা পরিস্থিতি দেখে ছুটে আসেন। তিনি ওখানেই ভিক্ষা করছিলেন। তিনিই চাদর বিছিয়ে শুইয়ে প্রসব করান এবং নাড়ি কাটেন।” ভিখারিণীর নাম রোকেয়া বেওয়া। বাড়ি সাগরদিঘির বিনোদ গ্রামে। প্রতিদিন সকালের ট্রেনে এসে ভিক্ষা করে ফিরে যান। তিনি বলেন, “আমাদের গ্রামে ডাক্তার নেই। প্রয়োজনে দাই ডেকে প্রসব করানো হয়। সেই দেখেই আমার অভিজ্ঞতা। মেয়েটি ছটফট করছে দেখে এগিয়ে গেলাম। স্থানীয় মানুষেরাই গরম জল, তোয়ালে দিলেন। নির্বিঘ্নেই মিটিছে সব কিছু।” মাসুদা বিবি বলেন, “এরকম হবে ভাবতেই পারিনি। তবে মায়ের মতো বাঁচিয়েছেন ওই মহিলা। তিনি এবং বাসের কর্মীরা এগিয়ে না এলে বড় বিপদ হত।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.