আটলান্টায় গুলিতে হত বাদকুল্লার ব্যবসায়ী
মাত্র বারো বছরেই তরতর করে উন্নতি। আর তাতেই স্থানীয় দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য হয়ে পড়েছিলেন আমেরিকার আটলান্টা প্রবাসী সুহৃদ দাস। বুধবার স্থানীয় সময় রাত দশটা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করে বেরোনোর সময় তাঁকে পরপর দু’টি গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান নদিয়ার বাদকুল্লার উত্তর সুরভিস্থানের বাসিন্দা সুহৃদবাবু।
সুহৃদকুমার দাস।
বরারবরই বিদেশে পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছা ছিল সুহৃদবাবুর। একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে মার্কিন মুলুকে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তবে ওই সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে নিজেই একটি দোকানে চাকরি খুঁজে নেন। সেখান থেকে একে একে সুহৃদবাবু দু’টি দোকানের মালিক হয়েছেন। মেসে আর পাঁচ জনের সঙ্গে মাথা গুঁজে দিন কাটাতেন যিনি, তিনিই কিনে ফেললেন বিরাট এক অ্যাপার্টমেন্ট।
রানাঘাটের মহকুমাশাসক সুমনকুমার ঘোষ বলেন, “এই মহকুমার বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু ছেলে কাজের সন্ধানে বিদেশে পাড়ি দেয়। যত দূর জানি, নানা সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা সেখানে যান। পরে সেখানে প্রতিষ্ঠা পেলে, পরিবারের অন্যদের নিয়ে যান।” সুহৃদবাবুও তাঁর এক ভাই সুজয়কে নিয়ে গিয়েছিলেন আটলান্টাতে।
তিনিও একটি বড় শপিং মলে কাজ করেন। তাঁর বাকি ছয় ভাই বাদকুল্লাতেই থাকেন। তাঁদের কাপড়, পাথরের ব্যবসা রয়েছে। সুহৃদবাবুর স্ত্রীও থাকেন বাদকুল্লার বাড়িতেই। সুহৃদবাবুর আর এক ভাই অজয় দাস বলেন, “দাদা চেয়েছিল আমাদের আরও দুই ভাইকেও নিয়ে যেতে।” তিনি বলেন, “দাদা চাইছিল ওই শহরেরই উপকণ্ঠে একটি রেস্তোরাঁ কিনতে। আমার সঙ্গে দাদার যখন শেষ কথা হয় তখন দাদা গাড়ি চালাচ্ছিলেন। বলেছিলেন, রেস্তোরাঁ যেখানে কিনতে চান সেখানেই যাচ্ছেন। আমাদের দু’জনকেও নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।” অজয়বাবু জানান, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের ভয়েই তিনি তাঁর দোকান দু’টি বিক্রি করে দিয়ে শহরের অন্য দিকে ওই রেস্তোরাঁ কিনতে চেয়েছিলেন। তবে এলাকার লোকজন সুহৃদবাবুকে পছন্দ করতেন। মার্কিন মুলুকের ওই পাড়ায় ‘দাসবাবু’ বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সুহৃদবাবুর দোকান ছিল শহরের আরউইন স্ট্রিটে।
বাদকুল্লার বাড়িতে সুহৃদবাবুর স্ত্রী ও পুত্র।
ফেসবুকে তারিয়া ক্যামেরিনো নামে এক মহিলা জানিয়েছেন, যে বাড়িতে সুহৃদবাবুর দোকান, সেই বাড়িরই উপরের একটি তলায় তিনি থাকেন। সুহৃদবাবুর দোকানের পাশে তাঁর একটি দোকানও রয়েছে। ক্যামেরিনো জানিয়েছেন, সেই রাতেই তাঁর ফ্ল্যাটেও চোর ঢুকেছিল। কে কী উদ্দেশ্যে সুহৃদবাবুকে খুন করেছে, তা জানাতে পারেনি ওই শহরের পুলিশ। অজয়বাবুর দাবি, “তর তর করে উন্নতিতেই স্থানীয় দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য হয়ে পড়েছিলেন দাদা।”
সুহৃদবাবুর দেহ শনিবার কলকাতায় আসার কথা। রাজ্য এই ব্যাপারে দাস পরিবারকে সাহায্য করছে। সুহৃদবাবুর স্ত্রী বীণা দাস বলেন, “স্বামীর এক বন্ধু ফোন করে প্রথমে বিষয়টি জানায়।” সুহৃদবাবুর আর এক ভাই সঞ্জয় দাস বলেন, “আমি ও অজয় দিল্লিতে ছিলাম। বিদেশ যাওয়ার জন্য কিছু কাগজপত্রের কাজে গিয়েছিলাম। তখনই ফোনে দাদার এক বন্ধুর কাছ থেকে খবরটা পাই।” সঞ্জয়বাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তখন দিল্লিতে। আমরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাই। বিষয়টি শুনে তাঁদের এক জন আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন। তিনি মুকুল রায়কে বিষয়টি দেখতে বলেন। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে দাদার পাসপোর্ট নম্বর সহ বিভিন্ন বিষয় ফ্যাক্স করার কথা বলা হয়েছে।”
ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

আত্মঘাতী হামলা পেশোয়ারে

পেশোয়ারের এক থানায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় মারা গেলেন তিন জন পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক জন অফিসারও রয়েছেন। সংঘর্ষে মারা গিয়েছে তিন জঙ্গিও। এই ঘটনায় আহত আরও আট। পেশোয়ারের অন্যতম বড় এই কোতোয়ালি থানা শহরের অত্যন্ত জনবহুল জায়গায়। গতকাল গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে ১৫ জন মারা যাওয়ার পর আজ আবার জঙ্গি হামলা শিকার হল পেশোয়ার। আজ প্রথমে পুলিশের সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে গুলির লড়াই চলে জঙ্গিদের। থানা লক্ষ্য করে গ্রেনেডও ছোড়ে তারা। পাল্টা আক্রমণের সময় মারা যায় এই জঙ্গিরা। খাইবার-পাখতুনখোওয়া প্রদেশের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলায় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত থাকতে পারে। তবে এখনও কেউ ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.