মুজিবের খুনিরা কি এ রাজ্যে, খুঁজছে সরকার
শ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবর রহমানের কয়েক জন খুনি আত্মগোপন করে আছে কি না, রাজ্য সরকার তা খোঁজ নিয়ে দেখছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেই এ বিষয়ে বার্তা পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। তার পরেই অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু করেছে রাজ্য। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনকে পাশে নিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম আজ এই খবর জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সাহারা খাতুন প্রতিশ্রুতি দেন যে বাংলাদেশের মাটিতে ভারত-বিরোধী জঙ্গিদের আগেও বরদাস্ত করেনি তাঁর সরকার, এখনও করবে না।
তিন বছর আগে নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শেখ হাসিনা সরকার ধারাবাহিক ভাবে বিষয়টি নিয়ে অনুরোধ করে চলেছে নয়াদিল্লিকে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, রিসেলদার মসলেউদ্দিন এবং মজিদ নামে দুই আসামি তাদের মৃত্যুদণ্ড এড়াতে পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। গত বছর জুলাই মাসে ঢাকা সফরে গিয়ে চিদম্বরম আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তাদের খুঁজে বার করতে ভারতের পক্ষে যা করা সম্ভব, করা হবে।
আজ দু’দেশের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সরব হন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। পরে চিদম্বরম বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি তৈরির কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে শেখ মুজিব হত্যার আসামিদের খুঁজে পাওয়া গেলে ঢাকায় ফেরত দিতে আটকাবে না।” এর পরই তিনি বলেন, “তাদের ব্যাপারে খোঁজ চলছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও চেষ্টা করছে।” কূটনৈতিক সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে ভারতের হাতে ওই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে নতুন কিছু তথ্য-প্রমাণ তুলে দিয়েছেন বাংলাদেশ নেতৃত্ব। আততায়ীরা মুর্শিদাবাদের কাছাকাছি কোথাও রয়েছে, এমন সম্ভাবনার কথা বাংলাদেশের গোয়েন্দা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সঙ্গে মনমোহন সিংহ। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পি টি আই
কূটনীতিকদের মতে, মুজিব হত্যাকারীদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ। বিরোধী রাজনীতির প্রবল হাওয়ার মধ্যে মুজিব-কন্যা শেখ হাসিনা চাইছেন মুজিব হত্যাকারীদের বাকি ছ’জনকে (১১ জন আসামির মধ্যে পাঁচ জনকে ইতিমধ্যেই ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার পর আগামী নির্বাচনে লড়তে। কিন্তু এখনও ফেরার ছ’জনকে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ গোয়েন্দা দফতরের মতে, অনেকেই আত্মগোপন করেছে কানাডা, লিবিয়া, কেনিয়া বা ভারতে।
মুজিব হত্যা মামলাটি প্রথম আদালতে ওঠে যখন ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হন। মুজিব পরবর্তী জমানায় বাংলাদেশের সামরিক শাসকেরা হত্যাকারীদের আড়াল করার জন্য যে সব আইনি বাধা তৈরি করেছিলেন ৯৬ সালে সে সব উঠিয়ে দেন তিনি। মোট ১১ জন সেনা অফিসারকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় আসার পর অপরাধীদের খোঁজা শুরু হয়। ফেরার ছ’জন আসামির বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ‘রেড কর্নার নোটিস’ জারি করে ইন্টারপোল। সে দেশের পুলিস সূত্রে জানানো হয়, ওই ছ’জনের মধ্যে এক জন, খন্দকর আব্দুর রসিদ আত্মগোপন করেছেন লিবিয়ায়। অন্য এক আসামি নূর চৌধুরী রেয়েছেন কানাডায়। বাকি দু’জন (শরিফুল হক ডালিম ও রাশেদ চৌধুরি) রয়েছে যথাক্রমে কেনিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বাকি দু’জন ভারতে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.