নিহত প্রদীপের বাড়িতে দুর্ব্যবহার, অভিযুক্ত আইসি
র্ধমানে নিহত সিপিএম নেতা প্রদীপ তা-র বাড়িতে তদন্তে গিয়ে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠল বর্ধমান থানার আইসি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। জেলা সিপিএম তাঁর বিরুদ্ধে ‘আইনি ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথাও ভাবছে।
শুক্রবার দুপুরে বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে দেওয়ানদিঘিতে প্রদীপবাবুর বাড়িতে যান আইসি। নেতার স্ত্রী চিত্রলেখা তা এবং মেয়ে পৃথা ছাড়াও বেশ কিছু আত্মীয়স্বজন তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। চিত্রলেখাদেবীর অভিযোগ, “কী ভাবে সে দিন বাড়ির সামনে অবরোধ করা হয়, ফোনের তার ছিঁড়ে দেওয়া হয়, তা ওঁকে বলার চেষ্টা করছিলাম। যে কয়েক জনকে চিনতে পেরেছি, তাদের নামধাম বলতে চাইছিলাম। কিন্তু সব কথাতেই উনি ‘জানি জানি’ বলে অন্য প্রসঙ্গ তুলতে থাকেন। তার পরেও আমি বলতে চাইলে ঝাঁঝের সঙ্গে বলেন, যা জানতে চাইছি, তারই উত্তর দিন।”
পৃথা যোগ করেন, “যে ছেলেটি টেলিফোনের তার ছিঁড়েছিল, আমি তার নাম বলার চেষ্টা করতেই আইসি বলেন, চুপ করুন, যখন আপনাকে জিজ্ঞাসা করব তখন উত্তর দেবেন।” চিত্রলেখাদেবীর আক্ষেপ, “হঠাৎই মাঝপথে জেরা থামিয়ে আইসি আমার আত্মীয়দের বলেন, ‘উনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, অন্য ঘরে নিয়ে শুইয়ে দিন। পুলিশের জোরাজুরিতে আত্মীয়েরা আমাদের দু’জনকে অন্য ঘরে নিয়ে যান।”
নিহত প্রদীপ তা-র বাড়িতে গিয়ে মেয়ে পৃথাকে সান্ত্বনা অশোক ভট্টাচার্যের।
ঘরে তখন ছিলেন চিত্রলেখাদেবীর ভাইপো, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক অরিত্র কোনার। তাঁর অভিযোগ, “দু’জন অন্য ঘরে চলে যাওয়ার পরে আইসি বলেন, এই মামলায় অভিযোগ সমর্থন করার মতো কোনও সাক্ষী আমরা পাইনি। ঘটনাস্থলের আশপাশের লোকজন কিছু বলতে চাইছেন না। আমাদেরই সাক্ষী খুঁজে দিতে হবে জানিয়ে উনি নিজের ফোন নম্বর দেন। আমি জানতে চাই, চার জনকে আপনারা ঘটনাস্থল থেকে ধরেছেন। (পুলিশ হেফাজতে না চাওয়ায় আদালত তাদের হাজতে পাঠিয়েছে) তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে মামলার তথ্য জোগাড় করলেন না কেন? ওদের থেকেই তো অনেক কিছু জানতে পারতেন। আইসি বলেন, সেই কৈফিয়ত আপনাকে দেওয়া হবে না।”
ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ।
সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “যে ভাবে এক জন পুলিশ অফিসার নিহত নেতার পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন, তাঁদের এক রকম ভীতি প্রদর্শনের চেষ্টা করেছেন, তাতে আমরা ক্ষুব্ধ। আমরা ঠিক করেছি, ওঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব। কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করা হচ্ছে।” আইসি অবশ্য কোনও অভিযোগ স্বীকার করেননি। তাঁর বক্তব্য, “আমি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু কোনও দুর্ব্যবহার করিনি। সাক্ষী খুঁজে দেওয়ার কথা ওঁদের কেন বলতে যাব! ওঁরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আছেন বুঝেই ওঁদের আমার ফোন নম্বর দিয়েছি। বলেছি, পরে আবার আসব।” বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “সম্ভবত ওঁরা আইসি-কে ভুল বুঝে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করছেন। উনি আসলে বলতে চাইছিলেন, যিনি পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন, প্রদীপবাবুর ভাই সেই প্রবীর তা-কে সাক্ষ্য দিতে হবে।” এ দিন শিলিগুড়ি থেকে বর্ধমানে গিয়ে প্রদীপবাবুর স্ত্রী-কন্যার দেখা করেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “চিত্রলেখা খুবই সাহসী। এ দিনও ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখেছি, হামলাকারীদের ছোড়া ইটের টুকরো ছড়ানো। ওঁরা যে ভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন, তা শিক্ষণীয়।”

নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.