প্রথমে কোনওরকম মতভেদের কথাই অস্বীকার, খোদ বোর্ড প্রেসিডেন্টের বিবৃতি আর তারপরই চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাকফুটে ভারতীয় বোর্ড। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি বনাম সহবাগের বাগ্যুদ্ধে দাঁড়ি টানতে আসরে নামানো হল বোর্ড সচিব সঞ্জয় জাগদালেকে। দু’জনের সঙ্গেই কথা বলেছেন জাগদালে। মিটমাট করে নেওয়ার বার্তাই দুই ক্রিকেটারকে দেওয়া হয়েছে বোর্ড থেকে। নিজের নিজের বক্তব্য ব্যাখ্যা করতে কাল শুক্রবার সিডনিতে সহবাগ ও ধোনি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করবেন বলে খবর। আরও জানা যাচ্ছে, বোর্ড শুধু জাগদালেকে আসরে নামিয়েই থেমে থাকছে না। কোচ ডানকান ফ্লেচারকে নাকি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে ধোনি বনাম সহবাগ লড়াই থামানোর। ফ্লেচারের সঙ্গেও নাকি আলাদা ভাবে কথা বলেছেন জাগদালে। বক্তব্য এক: জল আরও ঘোলা হওয়ার আগে যে করে হোক বিতর্ক সামাল দিতে হবে। দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ফ্লেচার এবং মিডিয়া ম্যানেজার জি এস ওয়ালিয়াকে। বোর্ড অবশ্য এ সব নিয়ে সরকারি ভাবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। জানা গিয়েছে, ফ্লেচার নাকি ধোনি, সহবাগ ছাড়াও কথা বলবেন সচিন তেন্ডুলকর, গৌতম গম্ভীরদের সঙ্গেও। এ ছাড়া বোর্ডের তরফে গোটা টিমকেই চলতি সিরিজের জন্য বাকি দুটো ম্যাচে শুধু ক্রিকেটে মন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ গত বুধবারই বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসন রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না টিমে কোনও ভেদাভেদ আছে। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছুই হয়নি। আমি মিডিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেছি। মিডিয়া এটা নিয়ে বাড়িয়ে লিখেছে।” শুধু বোর্ড প্রেসিডেন্ট নয়, ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লও টিম অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়কের মধ্যে কোনওরকম মতানৈক্যের কথা অস্বীকার করেছিলেন। বলেছিলেন, “সহবাগকে ভুল ভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে। টিমে কোনওরকম বিভাজন নেই। এটা পুরোপুরি মিডিয়ার একাংশের মন গড়া। ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোর্ডের নিরন্তর যোগাযোগ আছে।”
রোটেশন নীতি ও সিনিয়রদের নিয়ে ধোনির মন্তব্য ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। ধোনি বলে দিয়েছিলেন, সচিন-সহবাগ-গম্ভীরকে চলতি সিরিজে এক সঙ্গে খেলানো হচ্ছে না, কারণ এঁদের সবাইকে এক সঙ্গে খেলালে ‘স্লো ফিল্ডিং’ এর জন্য ২০ রান বাড়তি যাবে। এর পাল্টা হিসেবে গত মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা ম্যাচের পরে সহবাগ জানিয়ে দেন, তাঁকে বা বাকি সিনিয়রদের কেউই বলেনি যে ফিল্ডিং একটা কারণ। সঙ্গে বলেন, “আমার আজকের ক্যাচটা দেখেছেন? গত দশ বছর ধরে এ ভাবেই ফিল্ডিং করছি আমরা।” আর পুরো ঘটনা দেখেশুনে ওয়াসিম আক্রমের মনে হচ্ছে, দলের উপর ধোনির নিয়ন্ত্রণ নেই। |
প্রচারমাধ্যমের সামনে এসে ধোনি-সহবাগ মুখ খোলার জন্যই যে বিতর্ক এত তীব্র হয়েছে, তা নিয়ে ক্রিকেটমহলে কোনও সন্দেহ নেই। এখন দেখার, যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে সেই বিতর্ক সামাল দেন কি না ভারতের অধিনায়ক এবং সহ-অধিনায়ক। |