রামলীলা-কাণ্ড
পুলিশের সঙ্গে রামদেবকেও দুষল সুপ্রিম কোর্ট
রামলীলা ময়দান থেকে মধ্যরাতে রামদেবকে উৎখাতের ঘটনায় দিল্লি পুলিশকে সিংহভাগ দায়ী করল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু রেহাই পেলেন না রামদেবও। পুরো ঘটনার পিছনে তাঁরও দায়িত্ব আছে, এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শীর্ষ আদালত বলেছে, রামদেব তখন যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা-ও সঠিক ছিল না।
শীর্ষ আদালতের এই রায়ে পুরোপুরি ‘সন্তুষ্ট’ নন রামদেব। তিনি রায় পর্যালোচনার আবেদন জানাচ্ছেন। তবে একই সঙ্গে তিনি এবং তাঁর আইনজীবী রাম জেঠমলানী জানিয়েছেন, জয় তাঁদেরই হয়েছে।
বিদেশ থেকে কালো টাকা উদ্ধারের দাবিতে গত বছর ৪ জুন ধর্নায় বসা রামদেব ও তাঁর অনুগামীদের হঠাতে মাঝরাতে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। এই ঘটনায় রাজবালা নামে এক মহিলা নিহত হন। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, রামলীলা কাণ্ড থেকে সরকার ও মানুষের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। দিল্লি পুলিশও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। খর্ব করা হয়েছে মানুষের মৌলিক অধিকার। জড়িত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরুর নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
কিন্তু দিল্লি পুলিশকে দায়ী করার পাশাপাশি রামদেবও সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি বলে মনে করে শীর্ষ আদালত। আদালতের মতে, রামদেবের অনেক আগেই ধর্না তুলে নেওয়া উচিত ছিল। দিল্লি পুলিশের রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত মনে করছে, রামদেবের কিছু অনুগামী হিংসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিহত রাজবালার পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। ঘটনায় গুরুতর আহতদের জন্য ৫০ হাজার ও অপেক্ষাকৃত কম আহতদের জন্য ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছে। এই ক্ষতিপূরণের ৭৫ ভাগ দেবে দিল্লি পুলিশ। বাকি ২৫ ভাগ দেবে রামদেবের ট্রাস্ট।
দিল্লি পুলিশ প্রত্যক্ষ ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে। তাই এই ব্যাপারে পি চিদম্বরমকে টেনে আনার সব রকম চেষ্টা করেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব এবং রামদেব। কিন্তু আজ দিল্লি পুলিশ সম্পর্কে কড়া ভাষা ব্যবহার করলেও চিদম্বরম সম্পর্কে শীর্ষ আদালত সরাসরি কিছু বলেনি। এটা যে কংগ্রেস তথা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্বস্তির বিষয়, সেটা অনেকেই মেনে নিয়েছেন। উল্টো দিকে, এই ঘটনায় বিজেপি কিছুটা হলেও ‘হতাশ’। এর আগে টুজি কেলেঙ্কারি নিয়ে তারা চিদম্বরমকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আদালত সেখানে স্পষ্ট করে দিয়েছে, পুরো বিষয়টির পিছনে ছিলেন আন্দিমুথু রাজা। সেই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য আজ শীর্ষ আদালতে যান সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।
তবে এ দিনই রামদেবকে উৎখাতের ক্ষেত্রে চিদম্বরমের নাম এড়িয়ে যাওয়ায় বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে তেড়েফুঁড়ে নামার আর একটি সুযোগ হারাল বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তাই আদালতের রায়ে চিদম্বরমের নাম না থাকলেও তাঁকে যুক্ত করার একটা মরিয়া চেষ্টা করলেন বিজেপি মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর।
রায় শোনার তিনি বলেন, “চিদম্বরমের নির্দেশেই পুলিশ এই কাজ করেছে।” একই সঙ্গে সনিয়া গাঁধীর নামও তিনি এই ঘটনায় জড়িয়ে দেন। জাভড়েকরের বক্তব্য, সনিয়া-চিদম্বরম না চাইলে এমনটা সম্ভব হত না। একই সঙ্গে রামদেবকে দায়ী করা নিয়ে তাঁরা যে রায়ের সঙ্গে সহমত নন, সে কথাও জানিয়ে দিলেন। তবে বিজেপি হাল ছাড়ছে না। রামদেবের কৌঁসুলিদের মাধ্যমে রায় পর্যালোচনা করে ফের চিদম্বরমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কৌশল নিচ্ছে তারা।

‘ঘুম কেড়ে’ ধমক খেল পুলিশ
মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে রামলীলা ময়দানের ‘ঘুম কেড়ে’ সুপ্রিম কোর্টের ভর্ৎসনা শুনল দিল্লি পুলিশ। বিচারপতি বি এস চৌহান আজ এক পৃথক রায়ে বলেছেন, কাউকে ঘুম থেকে বঞ্চিত করা তার মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। তাঁর কথায়, “কিছু লোক এক জায়গায় জড়ো হয়ে যদি ঘুমোন, তা হলে সেটাকে কোনও ভাবেই ‘বেআইনি’ বলা চলে না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.