বিতর্কিত জমিতে হাল দেওয়ায় হাঁসুয়ার কোপে দুই ব্যক্তির কান কেটে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে। এক জনের বাঁ কান আশি শতাংশ কেটে গিয়েছে। আর এক জনের বাঁ কানও জখম হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুর থানার আড়াগাছি গ্রামে। ঘটনাচক্রে জখমেরা সিপিএম সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। তাঁদের এক জন বুলবুলচণ্ডী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও অন্য জন মালদহ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি। মালদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অশোক রায়ের বাঁ কানটি হাঁসুয়ার কোপে আশি শতাংশ কেটে যায়। চিকিৎসকেরা কোনও রকমে সেলাই করে তা জোড়া দিয়েছেন। সতীশের চিকিৎসা চলছে বুলবুলচণ্ডী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই বলে দাবি রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি সাবিত্রী মিত্রর। তিনি হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। অতিরিক্ত জেলা সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “জমি নিয়ে বিবাদ থেকে এক ব্যক্তির একটি কান জখম হয়েছে। এ ব্যাপারে হবিবপুর থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে। এই হামলার ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক এখনও মেলেনি।” |
আহত অশোক রায়। হাসপাতালে শনিবার। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায় |
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে গ্রামের ধর হেমব্রমের জমিতে লাঙল চালানো নিয়ে অশোক রায় এবং সতীশ হাঁসদার সঙ্গে বিবাদ হয় সুনীল হেমব্রম নামে তৃণমূল সমর্থক এক ব্যক্তির। ধর হেমব্রমের ওই জমি নিয়ে সুনীল হেমব্রমের সঙ্গে বিবাদ রয়েছে। তিনি ওই জমিতে কেউ হাল চালাতে পারবে না বলে হুমকি দিয়েছিলেন। আহতদের বক্তব্য, ধর হেমব্রম তাঁদের আড়াইশো টাকা করে দেবে বলায় তাঁরা চাষ করতে রাজি হয়েছিলেন। সকালে লাঙল চালানোর সময়েই সুনীল হেমব্রমের সঙ্গে তাঁদের বিবাদ হয়। রাতে সুনীল দলবল নিয়ে তাঁদের উপরে হামলা চালায়। অশোকবাবু বলেন, “রাতে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। আচমকা সুনীল হেমব্রম দলবল নিয়ে হামলা করে। কানে হাঁসুয়ার কোপ মারে।” এ দিন মালদহ সদর হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অশোক রায়ের বাবা আশুতোষবাবুও অভিযোগ করেন, “আমরা সিপিএম করি। যারা আমার ছেলের উপর হামলা করেছে তারা আগে বিজেপি করত। এখন ওরা তৃণমূল করে।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা হবিবপুরের বিধায়ক খগেন মুর্মুর বক্তব্য, জমি নিয়ে কারও সঙ্গে বিবাদ থাকতেই পারে। কিন্তু চাষির কান কেটে তাঁকে শাস্তি দেওয়াটা মানা যায় না।
নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র পাল্টা অভিযোগ করেছেন, তৃণমূলকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি দাবি করেছেন, “যারা হামলা চালিয়েছে তারা তৃণমূলের কেউ নয়। পুলিশকে বলেছি যারা ওই চাষির কান কেটেছে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।” |