গোলমালে জড়িত অভিযোগে ধৃত তিন দলীয় সমর্থককে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল ক্যানিংয়ের তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুরে ক্যানিংয়ের জীবনতলা থানার মউখালি গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মউখালির একটি মেছোভেড়ি দখলকে কেন্দ্র করে কিছু দিন ধরেই বিবাদ চলছে তৃণমূলের ক্যানিং-১ ব্লক সভাপতি শৈবাল লাহিড়ির অনুগামীদের সঙ্গে ক্যানিং-২ ব্লক সভাপতি মানিক পাইকের অনুগামীদের। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ওই ভেড়ির ধারে দু’পক্ষের গুলির লড়াই চলে। তবে তাতে কেউ হতাহত হননি। সকালে এসডিপিও (ক্যানিং) পিনাকীরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তিনটি গাড়িতে ওই এলাকায় তল্লাশিতে গিয়ে গুলির লড়াইয়ে জড়িত অভিযোগে তিন জনকে ধরে। ধৃত গোলাম মোল্লা, শাহ আলম মোড়ল এবং সন্টু মোল্লা (সঞ্জু) মানিক পাইকের অনুগামী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁদের নিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালানোর সময়ে মানিক পাইকের কয়েকশো অনুগামী পুলিশকে ঘিরে ধরে ওই তিন জনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। অত লোকের সামনে পুলিশকর্মী ছিলেন মাত্র ১৫ জন। তাঁদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব হয়নি। এর পরে পুলিশ রাত পর্যন্ত তল্লাশি চালিয়েও ওই তিন জনকে ধরতে পারেনি। তবে, গোলমালের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, “ভেড়ি দখলকে কেন্দ্র করে দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গুলির লড়াইয়ে জড়িত অভিযোগেই ওই তিন জনকে ধরা হয়েছিল। কিন্তু অল্প সংখ্যক পুলিশকর্মীকে ঘিরে ধরে যে ভাবে ধৃতদের ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তাতে পুলিশের কিছু করার ছিল না।”
তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ধৃত তিন জনকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি মানিকবাবু। তাঁর দাবি, “ওই ঘটনায় আমি বা দলের কেউ জড়িত নই। নির্দোষ বলে গ্রামবাসীরাই দলীয় তিন সমর্থককে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।” পুলিশ গোলাম মোল্লাকে বেধড়ক মারধর করে বলে তাঁর অভিযোগ। যদিও পুলিশ সে অভিযোগ মানেনি।
ভেড়ি দখলকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গে মানিকবাবু বলেন, “বাম আমলে যাঁরা ওই ভেড়ির পাট্টা পেয়েছিলেন, তাঁদের তাড়িয়ে দিচ্ছে শৈবাল লাহিড়ি ও তাঁর অনুগামীরা। আমরা সেটারই প্রতিবাদ করছি।” গুলির লড়াইয়ের কথা তিনি মানেননি। পাল্টা শৈবালবাবুর দাবি, “আগের রাতে গুলির লড়াইয়ের ঘটনায় আমি বা দলের কেউ যুক্ত নই। মানিকবাবুর লোকজনই এ দিন পুলিশের থেকে আসামী ছিনতাই করে।”
এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশকে বলেছি, দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।” |