‘আনন’ সিউড়ির একটি প্রাচীন নাট্যসংস্থা। এবার সেই সিউড়ি থেকেই ‘বীরভূমের আনন’ নাট্যসংস্থার জন্ম হল। প্রাচীন নাট্যসংস্থা ‘আনন’ বলতেই এলাকার মানুষ বিশিষ্ট অভিনেতা ও নির্দেশক বাবুন চক্রবর্তীকেই চিনতেন। পরে সংস্থার সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে বাবুনবাবু আননেরই কিছু দক্ষ অভিনেতাকে সঙ্গে নিয়ে ‘নাটকে নাটুয়া’ নামে ভিন্ন একটি নাট্যদল গড়ে তোলেন। এবার বাবুনবাবুর নেতৃত্বেই আত্মপ্রকাশ করল তাঁর নতুন দল ‘বীরভূমের আনন’। ওই নাট্যসংস্থা গত ১১-১২ ফেব্রুয়ারি দু’দিন ব্যাপী স্থানীয় রবীন্দ্রসদন মঞ্চে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ‘আ মিড সামার নাইটস্ ড্রিম’ নাটকের উৎপল দত্ত অনূদিত ‘চৈতালি রাতের স্বপ্ন’ নাটকটি অভিনয় করল।
|
জেলার প্রান্তিক শহর দুবরাজপুরের এক ক্লাব ‘ইয়ুথ কর্নার’। তাদের উদ্যোগে ১৯৭৯ সাল থেকে শুরু হয়েছিল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সম্মেলন। ২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই সম্মেলন চলেছে ক্লাবের কর্ণধার সোমেশ আচার্যের চেষ্টায়। ভারতের আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত শিল্পীরা অনুষ্ঠান করে গিয়েছেন দুবরাজপুরের এই সঙ্গীত সম্মেলনে। বহুদিন ধরেই উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত সম্মেলনের ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান আয়োজন করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন সোমেশবাবু। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর সেই স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। ওই দিন তাঁরই উদ্যোগে স্থানীয় নেপাল মজুমদার ভবনে সারারাত ধরে সঙ্গীত সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। যোগ দেবেন রাশিদ খান (কণ্ঠ), পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার (সরোদ), মালবিকা সেন (ভারত নাট্যম), মানসী মজুমদার (কণ্ঠ), শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (তবলা), উজ্জ্বল ভারতী (তবলা) এবং জ্যোতি গুহ (হারমোনিয়াম)।
|
|
গৌরীহর মিত্র। |
তাঁর লেখা ‘বীরভূমের ইতিহাস’ পড়ে আপ্লুত রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন-- “বীরভূমের ইতিহাস পড়ে তৃপ্তিলাভ করেছি। বাংলার প্রত্যেক জেলার ইতিহাস আলোচনা প্রয়োজন আছে। তোমার এই গ্রন্থ সেই আলোচনায় সাহায্য করবে বলে তুমি কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছ।” যাঁর গ্রন্থ সম্পর্কে এই মন্তব্য, তিনি গৌরীহর মিত্র (১৯০১-১৯৪৮)। বীরভূমের ইতিহাসচর্চায় এক অগ্রগণ্য নাম। পেশায় আইনজীবী গৌরীহরবাবু জেলায় উনিশ শতকের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে চর্চা করেছেন। পাশ্চাত্য বণিকদের বাণিজ্যস্থাপন থেকে শুরু করে বীরভূম জেলায় ইংরেজ রাজত্ব সংক্রান্ত বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রবন্ধ তিনি লিখেছেন। সেই সব প্রবন্ধ রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় সম্পাদিত বিখ্যাত ‘প্রবাসী’ পত্রিকাতেও ছাপা হয়েছে। বীরভূম জেলার একটি পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস লেখার ইচ্ছা তাঁর বরাবরই ছিল। কিন্তু মাত্র ৪৭ বছর বয়সেই তাঁর মৃত্যু হয়। গৌরীহরবাবুর সেই ইচ্ছাকে খানিকটা মর্যাদা দিলেন সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক পার্থ শঙ্খ মজুমদার। গৌরীহরবাবুর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নানা তথ্য ও লেখা সংগ্রহ করে পার্থবাবু ‘বীরভূমের ইতিহাস’ নামে একটি গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। কলকাতার ‘আশাদীপ’ প্রকাশন সংস্থা সম্প্রতি তা প্রকাশ করেছে। বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য আলোকচিত্র এতে মুদ্রিত হয়েছে।
|
রক্তকরবী মঞ্চে নৃত্যানুষ্ঠান। |
রবীন্দ্রনাথের গ্রামোন্নয়ন ভাবনাকে সামনে রেখে শান্তিনিকেতন লাগোয়া দু’টি আদিবাসী গ্রামের আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গত ১২-১৩ ফেব্রুয়ারি নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। উদ্যোক্তা ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক ও ঘোষালডাঙা আদিবাসী সেবাসঙ্ঘ। সাত্তোর পঞ্চায়েতের ঘোষালডাঙা ও বিষ্ণুবাটি গ্রামের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কৃষি ইত্যদি ক্ষেত্রে বিকাশের কথা তুলে ধরেন জার্মান রবীন্দ্র-গবেষক মার্টিন ক্যাম্পচেন। রবীন্দ্রনাথের পল্লী সংগঠন, গ্রামোন্নয়ন, আদিবাসী সমাজ ও অধিকার-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয় ওই অনুষ্ঠানে। দু’দিন ধরে চলা ওই অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন।
|
সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের যদুভট্ট মঞ্চে শিল্পনিকেতনের বার্ষিক অনুষ্ঠানের চিত্র প্রদশনী হয়েছে।
|
সংক্ষেপে:
•
ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে কোটাসুর গ্রামে এ বছর প্রথম বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে রবিবার পর্যন্ত। এই বইমেলার পিছনে সংস্কৃতিপ্রেমী বিডিও বাবুলাল মাহাতোর উদ্যোগ রয়েছে। বইমেলা উপলক্ষে চারদিন ধরে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন রয়েছে।
• সাঁইথিয়া বইমেলায় প্রকাশিত হল ‘প্রগতি’র বীরভূম বিশেষ সংখ্যা। সাঁইথিয়ারই বাসিন্দা দেবাশিস সাহার সম্পাদনায় গত ১৪ বছর ধরে ওই পত্রিকাটি প্রকাশিত হচ্ছে। এবারের সংখ্যায় জেলার ইতিহাসের পুঙ্খানুপুঙ্খ দিকগুলিকে ধরা হয়েছে। সংগ্রহে রাখার মত ওই সংখ্যায় বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য ছবিও ছাপা হয়েছে। পত্রিকার ভূমিকায় মিরিটি তথা কীর্ণাহারের বাসিন্দা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় লিখেছেন-- “বীরভূমের আর এক গর্বের জায়গা বাউল। আজ বিশ্বের কাছে ভারতবর্ষের ত্যাগ-শান্তি ও প্রগতির বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে বাংলার তথা বীরভূমের বাউল।”
• রামপুরহাটের ‘সায়ম’ সংস্থার চক্ষুদান অঙ্গীকার শিবির উপলক্ষে সম্প্রতি এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রখ্যাত শিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র সেখানে গান পরিবেশন করেন। সংস্থার শিল্পীরাও সুদৃশ্য নৃত্য পরিবেশন করে।
• লাভপুর ব্লকের কুরুম্বা হাইস্কুলে প্রতিমাসেই নাচ, গান, আবৃত্তি প্রভৃতি হয়। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের সেরাদের এবং পড়াশোনায় কৃতীদের গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে পুরস্কৃত করা হয়।
• বড়জোড়ার ‘দীপাবলি সব পেয়েছি আসর’-এর উদ্যোগে শুরু হতে চলেছে ‘শিশু উৎসব’। উদ্যোক্তা কমিটির সম্পাদক প্রণবরঞ্জন বসু জানান, কাল রবিবার থেকে বড়জোড়ার বান্ধব সমিতির মুক্তমঞ্চে এই উৎসব শুরু হচ্ছে। চলবে তিনদিন। বড়জোড়া ব্লকের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আবৃত্তি, নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করবে।
• প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে দু’দিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠান হল রাইপুর ব্লকের ডুমুরতোড় বাগ্বাদিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক, প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা এলাকায় প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। ওইদিন দুপুরে স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও জীবনী নিয়ে একটি আলোচনাসভাও হয়।
|
স্বামী বিবেকানন্দ ও শিক্ষা প্রসঙ্গে আলোচনা |
• বুধ ও বৃহস্পতিবার লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজে স্বামী বিবেকানন্দ ও শিক্ষা প্রসঙ্গে একটি আলোচনা সভা হয়। উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ স্বামী আত্মপ্রভানন্দ। বিভিন্ন কলেজের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
• বড়জোড়ায় শ্রীরামকৃষ্ণ ভাব-প্রচার সঙ্ঘের তিনদিন ব্যাপী স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবর্ষ উৎসব হয়ে গেল। গত শুক্রবার এই উৎসবের শুরু হয়েছিল বড়জোড়া শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির প্রাঙ্গণে। ওই সঙ্ঘের সম্পাদক সমীরকুমার পাণ্ডে বলেন, “উৎসবের তিনদিনই ভক্তিমূলক ও বাউলগানের অনুষ্ঠান-সহ ধর্মসভা ও স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল।”
• মানবাজার গার্লস হাইস্কুলে শুক্রবার মা ও মেয়ে মেলা হল। মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিডিও সায়ক দেব। মানবাজার এক নম্বর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ইরা সুবুদ্ধি বলেন, “সর্বশিক্ষা মিশনের আর্থিক সহায়তায় মেলাটি হয়। বালিকাদের শিক্ষার আঙ্গিনাতে নিয়ে আসা ও সচেতনতা বৃদ্ধি এর মূল লক্ষ্য।” অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, বসেআঁকো, সঙ্গীত প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রভৃতি হয়।
|
রাজলক্ষ্মী গার্লস হাইস্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব |
• রাইপুর ব্লকের মণ্ডলকুলি রাজলক্ষ্মী গার্লস হাইস্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুক্রবার দিনভর নানা অনুষ্ঠান হয়েছে। এ দিন এই স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করার কথা ঘোষণা করেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। অনুষ্ঠানের পাশাপাশি স্কুলের মাঠে বিবেকবেলা শুরু হয়েছে। কাল রবিবার এই মেলা শেষ হবে।
• প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে দু’দিন ব্যাপী নানা অনুষ্ঠান হল রাইপুর ব্লকের ডুমুরতোড় বাগ্বাদিনী উচ্চ বিদ্যালয়ে। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক, প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা এলাকায় প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। ওইদিন দুপুরে স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও জীবনী নিয়ে একটি আলোচনাসভাও হয়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গান, আবৃত্তি, নৃত্য, যেমন খুশি সাজো-সহ নানা প্রতিযোগিতা হয়। শুক্রবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা।
• বড়জোড়ার ‘দীপাবলি সব পেয়েছি আসর’-এর উদ্যোগে শুরু হতে চলেছে ‘শিশু উৎসব’। উদ্যোক্তা কমিটির সম্পাদক প্রণবরঞ্জন বসু জানান, কাল রবিবার থেকে বড়জোড়ার বান্ধব সমিতির মুক্তমঞ্চে এই উৎসব শুরু হচ্ছে। চলবে তিনদিন। বড়জোড়া ব্লকের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আবৃত্তি, নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করবে। |