গভীর রাতে সবাই লঞ্চে ঘুমোচ্ছিলেন। কেউই টের পাননি লঞ্চের গায়ে ছোট্ট ফুটো দিয়ে জল ঢুকছে। টের পেলেন দুই সারেঙ। তাঁদেরই তৎপরতায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচলেন ৩৭ জন পর্যটক। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে সজনেখালির কাছে গোমর নদীতে। লঞ্চটি রাজ্য পর্যটন দফতরের। নাম এম ভি চিত্ররেখা। লঞ্চের সব যাত্রীকেই উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁদের পর্যটন দফতরের বাসে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পর্যটন দফতরের সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহ বলেন, “পর্যটকদের বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরিয়ে এনে ওই রাতে এম ভি চিত্ররেখা গোমর নদীতে নোঙর করেছিল। রাতে লঞ্চের দুই সারেঙ দেখেন লঞ্চের গা চুঁইয়ে জল ঢুকছে। যাত্রীদের অন্য লঞ্চে করে সজনেখালি ট্যুরিস্ট লজে নিয়ে যাওয়া হয়। এম ভি চিত্ররেখাকে মেরামতের জন্য সোনাখালি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি।’’ বৃহস্পতিবার সকালে ৩৭ জন যাত্রীকে নিয়ে এম ভি চিত্ররেখা সোনাখালি থেকে রওনা হয়। কয়েকটি দ্বীপ ঘুরে রাত ১২টা নাগাদ লঞ্চটি গোমর নদীতে নোঙর করে। |
পর্যটকদের প্রায় সকলেই তখন ঘুমিয়ে। সবকিছু ঠিক আছে কি না দেখার জন্য দুই সারেঙ জীবেন্দু গায়েন ও মনিরুল শেখ লঞ্চের চারদিক ঘুরে দেখছিলেন। জীবেন্দুবাবু ও মনিরুলের কথায়, “হঠাৎ একটা শব্দ কানে আসতে থাকে। দেখি লঞ্চের গা ফুটো হয়ে জল ঢুকছে। একটু থমকে গিয়েছিলাম। তার পরেই সজনেখালি ট্যুরিস্ট লজের ম্যানেজার সোমনাথ দত্তকে ফোন করে জানাই।” সোমনাথবাবু বলেন, “ওঁদের ফোন পেয়েই সব কথা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালির রেঞ্জার জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাই। এর পরে দু’জনেই দু’টি লঞ্চ নিয়ে গিয়ে পর্যটকদের উদ্ধার করে সজনেখালি ট্যুরিস্ট লজে নিয়ে আসি।”
এম ভি চিত্ররেখার পর্যটক কল্পনা মুখোপাধ্যায়, অমৃতা মণ্ডল, অমলকুমার সরকার বলেন, “আমরা ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ ডেকে তুলে বলা হয় লঞ্চে জল ঢুকছে। এখনই অন্য লঞ্চে যেতে হবে। অন্য লঞ্চে করে সজনেখালি ট্যুরিস্ট লজে এসে উঠি। অত রাতে এমন ঘটনায় ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে পর্যটন দফতরের কর্মীদের সহযোগিতায় নিরাপদে ফিরতে পেরেছি।” |