|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
বাঙালির আওয়াজ তোলার দমটাই চলে গেছে |
সাড়ে চারশো কর্মচারী। বেশির ভাগই বাঙালি। এখন ইতিহাস। বাঙালি রিক্রুটমেন্ট কমিয়ে দিয়েছেন।
বীতশ্রদ্ধ তিনি। খানিকটা অভিমান। তার চেয়েও বেশি রাগ। মোহভঙ্গ? মিঠুন চক্রবর্তী। সামনে গৌতম ভট্টাচার্য |
পত্রিকা: প্রতি বছর ২৫ জানুয়ারির রাতে মিঠুন সমর্থকদের মন খারাপ হয়ে যায়। আবার একটা নিশ্চিত ধাক্কা। পদ্মশ্রী বা পদ্মবিভূষণ পেলেন বলিউড থেকে কেউ না কেউ। কিন্তু তার মধ্যে অনিবার্য ভাবেই মিঠুন নামটা নেই। কখনও থাকে না। ভাবলে আপনার নিজের মন খারাপ হয় না?
মিঠুন: জবাবটা কী ভাবে দেব! হৃদয় যদি কোনও কিছু এক্সপেক্ট করে সেই চাহিদাটা মনে রেখে দেয়। তা বলে তার জন্য তেল মারতে পারি না। ভিক্ষা করতেও পারি না। পদ্মশ্রী যারা পায়-টায় তাদের অনেক রাজনৈতিক যোগাযোগ-টোগ রয়েছে। আমি তো এই সব সুপারিশওয়ালাদের কাউকে চিনি না। কে বলবে আমার কথা!
পত্রিকা: প্রতি বছর যখন নিজের ওপর অবিচার হচ্ছে ভাবেন, তখন কি নতুন জেদ এসে ভিড় করে? নতুন সংকল্প মাথায় চাপে যে এই বঞ্চনাটাকেও কোনও দিন হারিয়ে দেব!
মিঠুন: মোটিভেট করব কী করে? আমি তো সত্যিটা জানি যে আমাকে মোটিভেট করার কেউ নেই। আগে নিজেকে বলতাম, আমি হয়তো ডিজার্ভ করি না। কিন্তু এখন যারা পাচ্ছে-টাচ্ছে তাদের দেখলে মনে হয় এদের চেয়ে আমার যোগ্যতা বোধহয় কম ছিল না। হাসিও পায় আমার। যখন শুনি অমুক এ বার পাচ্ছেন যেহেতু তিনি দেশের সর্বোচ্চ আয়করদাতা। আমি তখন ভাবি ৩৬ বছর ধরে আমি কি তা হলে অন্য কোনও দেশে থাকলাম আর ইনকাম ট্যাক্স দিলাম! হায়েস্ট ইনকাম ট্যাক্স পেয়ার? হা হা হা। একটা ফুটপাথ থেকে উঠে আসা ছেলে নিজের যোগ্যতায় দেশের সর্বোচ্চ করদাতা হল ১৯৮৮-তে। এমন সময় হল যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে চালু কথা ছিল, এইটি পার্সেন্ট নাও ব্ল্যাক-এ। টোয়েন্টি পার্সেন্ট টাকা হোয়াইটে। সেই অ্যাটিটিউডের কদর হল কোথায়?
পত্রিকা: তখন মনে হয় একটা গডফাদারের খুব দরকার ছিল!
মিঠুন: আমি গডফাদারে বিশ্বাস করি না। আমি মনে করি তোমার মধ্যে যদি মাল থাকে পাতাল ফুঁড়ে তুমি বেরোবে। কিন্তু সরকারি অ্যাওয়ার্ডটা অন্য ব্যাপার। রেকমেন্ড করার কেউ না থাকলে ইউ আর আ বিগ জিরো। সেই মুহূর্তগুলোয় মনে হয় আমি কি তা হলে অন্য কোনও দেশের হয়ে এত কিছু করলাম?
পত্রিকা: কখনও কি মনে হয় যে আপনার জীবনটা বাণিজ্যিক হিন্দি ছবির মতো? এত উত্থান-পতন, এত সাসপেন্স, এত অবিচার, এত সংঘর্ষ, এত রক্ত। আবার এত সাফল্য!
মিঠুন: ঠিকই। হিন্দি ছবির গল্পের মতো, বারবার নিজেকে নিয়ে লড়াই। পড়া-ওঠা। আবার ফেল করা। আবার ওঠা। নিজেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বারবার বলি, “ইউ হ্যাভ টু ফাইট। ফাইট ছেড়ে দিয়ো না।” আজও তাই করি।
পত্রিকা: যে মিঠুন গরিব অবস্থা থেকে লড়াই করে উঠেছিল তার মোটিভেশনের অনেক উপাদান ছিল। এই মিঠুন সফল। সুখী কোটিপতি। শিল্পপতি। সে এখন কী করে মোটিভেট করবে?
মিঠুন: সাকসেসের কি কোনও লিমিট আছে? শিল্পেও নেই। জীবনেও নেই। আমি নতুন নতুন লক্ষ্য সেট করি। চেষ্টা করি ছেলেমেয়ের জন্য কিছু করে যাওয়ার। নিজেকে বিশাল বড় হোটেলিয়ার বানানো। সেগুলো নিয়েই সারা দিন ভাবতে থাকি।
পত্রিকা: এখন তো মুম্বইতে আপনি আবার সেই মাড আইল্যান্ডের বাংলোতে ফিরে গিয়েছেন।
মিঠুন: হ্যাঁ, সবাই আমরা এখন ওখানেই থাকি।
পত্রিকা: ওই বাড়ির সঙ্গে তো আপনার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে।
মিঠুন: তা জড়িয়ে।
পত্রিকা: সেই সব হৃদয়ের খুব কাছে থাকা স্মৃতি ধাক্কা দেয় না? দুর্বল করে দেয় না মনকে?
মিঠুন: আমি অতীতে বাস করি না। পাস্ট যা আছে তাকে আমি কাঁধে করে নিয়ে সামনের দিকে তাকাই। আপনি যা বলতে চাইছেন সেগুলো পাস্ট। |
|
পত্রিকা: ইদানীং আপনার সাফল্যের মধ্যে ‘দাদাগিরি’র কথা যে কেউ বলবে। এটা সৌরভের এমন ট্রেডমার্ক শো যে অনেকের অবাক লেগেছিল, এটা নিতে আপনি কী করে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। শো-টা সফল করে ছাড়লেন সেটা দ্বিতীয় আশ্চর্য।
মিঠুন: আমার সঙ্গে জি টিভির একটা ইনডাইরেক্ট এক্সক্লুসিভ ব্যবস্থা আছে যে বছরে দু’টো করে শো ওদের জন্য আমি করব। ‘ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স’-এর পরে এই শো-টা ওরা নিয়ে আসে। তখন আমি ওদের বলেছিলাম আমাকে অন্য কোনও শো দিন। কিছু একটা তৈরি করুন। কিন্তু ওদের কিছু অসুবিধে ছিল। ওরা বলল, ওই ফর্ম্যাটেই অনেক চেঞ্জ করে দেবে। জানতাম ‘দাদাগিরি’ খুব পপুলার শো। শো হিট করানো ঠিক সৌরভের বিষয় নয়। তবু দারুণ করেছিল। আমি এসে ঠিক করলাম একেবারে নিজের মতো করে করব। আমি ব্যক্তিগত জীবনে যেমন তেমনই থাকব। যে ভাবে আমি কমফর্টেবল। আমি এন্টারটেনমেন্টের লোক। এই দুনিয়াটা ভাল বুঝি। ক্যুইজ শো মানে একটা গম্ভীর গম্ভীর ব্যাপার হয়। হাল্কা মিউজিক। গম্ভীর কথাবার্তা। প্রতিযোগী প্রশ্ন পাবে। ওয়েট করবে। উত্তর দেবে। খেলা শেষ। আমি ঠিক করলাম এটা বদলাতে হবে। হাসিঠাট্টা আনতে হবে। একই সঙ্গে আবার লাগাম ছেড়ে বেরোলেও চলবে না। তা হলে অন্য শো-র সঙ্গে মিলে যাবে।
পত্রিকা: কবে বুঝলেন আপনার নতুন মডেল নিয়ে আর টেনশন নেই?
মিঠুন: শো-টা ফোর্থ উইকে পড়ার পর।
পত্রিকা: সৌরভকে ডাকবেন না একদিন শো-তে?
মিঠুন: আই হ্যাভ নো আইডিয়া। কাকে ডাকা হবে সে ব্যাপারে আমার কোনও বক্তব্য নেই। চ্যানেল ঠিক করে।
পত্রিকা: বাঙালির ‘দাদাগিরি’র দুই স্টেশন। সৌরভ আর মিঠুন। কে আসল দাদা?
মিঠুন: দু’জনেই। এত দিনেও তো তিনটে দাদা হল না। যখন হবে তখন বলব।
পত্রিকা: এই যে বনি কপূর কলকাতার অভিনেতাদের নিয়ে ক্রিকেট টিম করলেন। উদ্বোধনে বনি আর শ্রীদেবী এলেন। আপনাকে তো আশেপাশেও দেখা যায়নি। আপনাকে কেউ ডাকেনি?
মিঠুন: (ব্যাপক ইন্টারেস্টের অভাব দেখিয়ে) না না, আমায় কেউ অ্যাপ্রোচ করেনি। করলেও অবশ্য রাজি হতাম না।
পত্রিকা: যদি আপনাকে বলা হয় পরের বছর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হতে?
মিঠুন: না।
পত্রিকা: কেন?
মিঠুন: নট মাই কাপ অফ টি। আমার সিন নয়।
পত্রিকা: নয় কেন? আপনি তো আইসিএল-এ কলকাতার ক্রিকেট টিম কিনেছিলেন।
মিঠুন: ছাড়ুন ছাড়ুন। |
|
পত্রিকা: চার দিকে এই যে বাঙালিদের ওপর সো-কলড অবিচার। কেন্দ্র টাকা দেয় না। আপনি পদ্মশ্রী পান না। সৌরভকে আইপিএল টিম নিলাম থেকে নিমেষে মুছে ফেলা হয়। দেখলে কী মনে হয়?
মিঠুন: মনে হয় এর জন্য একমাত্র বাঙালিই দায়ী। আমরাই সব কিছুর জন্য রেসপনসিবল।
পত্রিকা: কেন?
মিঠুন: কারণ বাঙালি একটা জায়গায় আটকে রয়েছে। তারা প্রশ্ন করেই খালাস। এই যে আপনি জিজ্ঞাসা করলেন, আমি পদ্মশ্রী পাচ্ছি না কেন? আপনার মুখে শুনে আর এক জন বলবে কেন পাচ্ছে না? প্রশ্নতেই সব আটকে থাকবে। উত্তর দেওয়ার কেউ নেই। প্রতিবাদ করার কেউ নেই। বিপ্লবের কেউ নেই। সোচ্চার আওয়াজ দেওয়ার কেউ নেই যে দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছবে। আরে বাবা দেশের লোক তো তুমি। আওয়াজ তোলো। আসলে আমরা বাঙালিরা নিজেদের নিয়েই একটা ছোট জায়গার মধ্যে বিভোর।
পত্রিকা: শুনেছি ‘বাঙালি জাগো’ স্লোগান দেওয়া অনেক কমিয়ে দিয়েছেন এত নাকি মোহভঙ্গ হয়েছে আপনার।
মিঠুন: আমার সাড়ে চারশোর ওপর কর্মচারীর মধ্যে একটা সময় বড় অংশ ছিল বাঙালি। অনেককে এখান থেকে নিয়ে গিয়েছিলাম। অথচ আজ মাত্র ক’জন থেকে গিয়েছে। বাঙালিদের সব চেয়ে বড় গুণ হল সৎ। বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু ততটাই খারাপ কাজের প্রতি মনোভাব। দু’দিন জয়েন করেই বলে বাড়ি যাব। মা অসুস্থ। এক জন তো নিজের দাদুকে চোখের সামনে কত বার মারল। আমি বললাম, দাদু যে আগের বছর মারা গেলেন। তুমি বাড়ি গেলে। আর কত বার দাদুকে মারবে ভাই? সে বলল, না, ওটা দাদুর দাদু ছিল! এদের কত রকম বাহানা। আমার প্রিয় মাসিমার ছোট ছেলের শালা খুব অসুস্থ তাকে দেখতে যাব। সব এক্সকিউজ। জানে চাকরি সিকিওরড। কিছু দিন কলকাতায় আড্ডা-টাড্ডা মেরে আবার চলে গেল। দেখে-টেখে আমি বাঙালি রিক্রুটমেন্ট কমিয়ে দিয়েছি।
পত্রিকা: এ তো এমন লোকের কণ্ঠস্বর শুনছি যে বীতশ্রদ্ধ হয়ে নিজের জাত সম্পর্কে ভরসা হারিয়ে ফেলছে।
মিঠুন: সিক্সটি পার্সেন্ট আমি হাল ছেড়ে দিয়েছি। ফর্টি পার্সেন্টএকটা ক্ষীণ আশা এখনও আছে।
পত্রিকা: টাটারা যে সিঙ্গুর ছেড়ে চলে গেল, এর কি কোনও নেগেটিভ সিগন্যাল গোটা দেশ দেখেছে?
মিঠুন: রাজনৈতিক কথাবার্তা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু টাটাদের ফিরে যাওয়া বাকি ভারত ভাল ভাবে নেয়নি এটা তো ঘটনা। একই সঙ্গে অবশ্য উল্টো বক্তব্যও শুনেছি যে বাংলা কৃষিপ্রধান রাজ্য। সেখানে শিল্পের জন্য কৃষির জমি ছাড়া উচিত নয়। এত মানুষের জীবনের স্বার্থ জড়িত সেখানে। সত্যি যদি কৃষি জেগে ওঠে দারুণ হয়। কিন্তু কবে জাগবে জানি না।
পত্রিকা: আপনি নিজেও তো এক জন শিল্পোদ্যোগী। পশ্চিমবঙ্গে লগ্নি করেননি কেন?
মিঠুন: আমি চেষ্টা করেছি বহু। লাক ফেভার করেনি। আই হ্যাভ ট্রায়েড অ্যান্ড ফেলড।
|
বন্ধু মহল |
‘নোবেল চোর’-এর গেট টুগেদার। ‘মাছ, মিষ্টি অ্যান্ড মোর’-এর ক্যালেন্ডার লঞ্চ। দুই পার্টি। এক রকমের হইচই। ঝলক... |
‘নোবেল চোর’-এর পার্টিতে ফাটিয়ে আড্ডা |
|
|
মিঠুন চক্রবর্তী, সন্দীপ ভুতোরিয়া,
অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, গার্গী রায়চৌধুরী। |
চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়
আর সুদীপ্তা চক্রবর্তী |
রবীন্দ্রনাথের চিঠি |
|
|
স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়
আর সৃজিত মুখোপাধ্যায় |
‘মাছ, মিষ্টি অ্যান্ড মোর’-এর পার্টিতে
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আর পার্নো মিত্র |
|
|
|
সুমন ঘোষ |
|
|
|
পত্রিকা: একটা ধারণা হল সুভাষ চক্রবর্তীর মতো মিঠুনকেও সিপিএম নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে নিয়েছে। কখনও প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি। আপনি একমত?
মিঠুন: এটা কি আর আমার নিজের মুখ দিয়ে বলাতে হবে! ওরা নিজেরাই এখন বুঝেছে। দেরিতে বুঝেছে। তবে একটা কথা বলি, সুভাষদার সঙ্গে কখনও এই জন্য থাকিনি যে রাজনৈতিক ফায়দা পাব। লোকটাকে ভালবেসে সঙ্গে ছিলাম।
পত্রিকা: তাপস পাল নাকি আপনাকে বলেছিলেন, রাজনীতিতে ঢোক। অভিনয়ে থেকে গিয়ে তুই তো আর দ্বিতীয় বার মিঠুন হতে পারবি না! বরঞ্চ নতুন জগতে চল।
মিঠুন: তাপস বলেছিল। কিন্তু আমার তো কোনও পলিটিক্যাল অ্যাম্বিশন নেই। ক্ষমতায় আসার পর আমি অমুক করব তমুক করব। করে ওপরে উঠব এ সব তো কখনও ভাবিনি।
পত্রিকা: তবু আপনার সমাজসেবামূলক কাজকর্ম তো রাজনৈতিক ক্ষমতা পেলে আরও গতিশীল হবে।
মিঠুন: ক্ষমতাটাই তো ডেঞ্জারাস। ক্ষমতায় আসার পর মানুষ মানুষ থাকে কি না তা নিয়েই অনেক প্রশ্ন থেকে যায়।
পত্রিকা: নন্দীগ্রাম ইস্যু নিয়ে টালিগঞ্জে বিভাজন ঘটে গিয়েছিল জানেন? তার রেশ তো আজও রয়েছে।
মিঠুন: বিভাজনটা খুব দুঃখের। মুম্বইতেও শিল্পীদের মধ্যে কত রকম রাজনৈতিক মতবাদ। কেউ শিবসেনা, কেউ বিজেপি, কেউ কংগ্রেস করে। কিন্তু আমাদের মিটিংয়ে যখন আসে ওরা রাজনীতির কথা মোটেও বলে না। সব এক হয়ে যায়।
পত্রিকা: আচ্ছা আপনি তৃণমূল না সিপিএম?
মিঠুন: এ তো ভারী অদ্ভুত প্রশ্ন! এই প্রশ্নের জবাব হল বাংলার যে ভাল করবে আমি তার।
পত্রিকা: এই এক সাবধানী উত্তর কত বছর ধরে দিয়ে যাচ্ছেন!
মিঠুন: আজও তাই দিচ্ছি। বাংলার ভাল হলে চিৎকার করে বলব ভাল হয়েছে। আমার খালি মনে হয়, আমরা বাই বার্থ বিপ্লবী। বিপ্লব আমাদের রক্তে। সে আগুন আজ কোথায় গেল?
পত্রিকা: আপনার মতো কোটিপতি শিল্পপতি কী করে বিপ্লবের কথা বলেন? তারও তো বিপ্লবের অ্যান্টেনা হারিয়ে যাওয়ার কথা।
মিঠুন: শিল্পপতি হলে কি বিপ্লবী হওয়া যায় না নাকি? নাকি কেউ হতে পারে না?
পত্রিকা: আপনার নতুন রিলিজে ফিরছি। ‘নোবেল চোর’ ছবিটা নিয়ে নানা জায়গায় অনেক রকম কথা বলেছেন। সেগুলো প্রচারধর্মী স্বাভাবিক কথাবার্তা ধরে নিচ্ছি। সত্যি ভিতর থেকে বলুন তো ফিল্মটা কেমন?
মিঠুন: আমার সাতটা সেরা ছবির মধ্যে একটা।
পত্রিকা: বলছেন কী।
মিঠুন: একদম। ছবিটা দেখতে বসার আগে আমার পরিচালক সুমন ঘোষ সম্পর্কে ভয় ছিল যে নির্ঘাত ও একটা আঁতেল ছবি বানিয়ে ছাড়বে। কিন্তু গল্পের ট্রিটমেন্ট দেখে অবাক হয়ে গেছি। কোথাও কোথাও বাস্তব আর সিনেমা মিশে গেছে।
পত্রিকা: আপনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মনে করা যাক, আপনার আমলে নোবেল চুরি গেছে। কী করতেন?
মিঠুন: আই উড হ্যাভ গন অল আউট। আমাদের রাজ্যের এত বড় সম্পদ। আমি শেষ দেখে ছাড়তাম! প্রবলেম হল, প্রশ্নটা সাংবাদিকেরাই কেবল করে। আমরা শুধু প্রশ্নেই আটকে গেছি। নেক্সট স্টেপ, যেটা সমাধানের হওয়া উচিত, সেটা আর কখনও আসে না। বললাম না, বাংলার যেন লড়াই করার দমটাই চলে গেছে।
পত্রিকা: ‘অগ্নিপথ’-এর রিমেক হল। কৃষ্ণন আইয়ার নারিয়েল পানিওয়ালার রোলটা কিন্তু কেউ করল না। আপনার চরিত্রটা যে রিমেকওয়ালাদের কাছে অধরা থেকে গেল দেখে কী মনে হল?
মিঠুন: (মুখে তৃপ্তির হাসি) মনে হল রোলটা অমরত্ব পেয়ে গেল।
পত্রিকা: কাল ছবির রিলিজ ছিল। টেনশন হল?
মিঠুন: শুক্রবারের টেনশন জীবন থেকে চলে গেছে। বহু বছর চলে গেছে। ইট ইজ অল ওভার।
পত্রিকা: এখন তা হলে এই ধরনের ছবিই করবেন। ঝালমুড়ি নয়?
মিঠুন: ঝালমুড়িও খাব। মনে রাখবেন, এত বছর ধরে ওরাই আমায় দেখেছে। ‘এম এল এ ফাটাকেষ্ট’ কী ‘হাঙ্গামা’কে যারা ও রকম সাপোর্ট দিয়েছে সেই হার্ডকোর ফ্যানদের আমি পুরো ভুলে যেতে পারি না। ওদের জন্যও চেষ্টা থাকবে। কী আর। আমার ১০ বছর বয়স কমেছে।
পত্রিকা: হৃদয় তার মানে খুব ব্যস্ত। ১০ বছর কমল যখন।
মিঠুন: না না, হৃদয়কে শান্ত রেখেছি। শান্ত পরিবেশটাকে আর ঘাঁটাতে চাই না।
পত্রিকা: সে কী! এই যে শোনা যাচ্ছে আপনার ছেলে মিমো আর আপনার সাবেকি গার্লফ্রেন্ড লিস্টে কিছু কমন পাওয়া গেছে?
মিঠুন: উফ্ আবার। আমি গুনছি। এই নিয়ে চারটে বাউন্সার হল।
পত্রিকা: খেলছেন না তো।
মিঠুন: খেলব কেন? আমি তো লক্ষ করছি সেই কখন থেকে (কপট ক্রোধ)!
|
ছবি: কৌশিক সরকার |
|
|
|
|
|