শৌচাগার না হলে শ্বশুরবাড়ি নয়, ‘বিপ্লব’ বধূর
বিয়ের দু’দিনের মাথায় শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছিলেন বছর তেইশের অনিতা নারে। ফিরিয়ে নিয়ে যেতে তড়িঘড়ি হাজির স্বামী। তরুণী কিন্তু নাছোড়। যত দিন না তাঁর ‘দাবি’ মানা হচ্ছে কিছুতেই ফিরবেন না তিনি।
কী ‘দাবি’? ওই তরুণীর সাফ কথা, শ্বশুরবাড়িতে শৌচাগার বানাতে হবে। তবেই করবেন স্বামীর ঘর।
মধ্যপ্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে এই ঘটনা ঘটিয়ে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছেন অনিতা। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সঙ্গে গোটা গ্রামেরই চেহারা পাল্টে দিয়েছে তাঁর ওই জেদ। শুধু তাই নয়, নিজের বিবাহিত জীবনকে পণ রাখা ওই আদিবাসী কন্যা এখন অনেকের প্রেরণা। গোটা রাজ্যেই!
বেতুল জেলার ঝিতুধানা গ্রামের শিবরাম নারের সঙ্গে অনিতার বিয়ে হয় গত বছরের ১১ মে। শ্বশুরবাড়ি গিয়েই অনিতা আবিষ্কার করেন, বাড়িতে শৌচাগার নেই। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে খোলা মাঠঘাটই ভরসা। বিষয়টি মুখ বুজে মেনে নেননি সদ্যবিবাহিত অনিতা। দু’দিন পরই চিচোঁলিতে বাপের বাড়ি চলে যান তিনি। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে শিবরামের। গোটা গ্রামেই তো ছবিটা একই রকম। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছেন, মাঠেই যায় সকলে। তার জন্য নতুন বউ চলে যেতে পারে! শিবরাম ছুটে যান চিচোঁলিতে। অনিতার কথায়, “স্বামী এসেছিলেন নিয়ে যেতে। কিন্তু তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলাম, শৌচাগার না বানালে ফিরব না।” শিবরাম এর পর নিজের গ্রামে ফিরে পঞ্চায়েতে জানান বিষয়টি। বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্চায়েত। পঞ্চায়েত এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় শিবরামের বাড়িতে তৈরি হয় শৌচাগার। ‘দাবি’ পূরণ হওয়ায় অবশেষে আট দিন পর শ্বশুরবাড়িতে ফেরেন অনিতা।
এক আদিবাসী বধূর এই ‘বিপ্লব’-এর গল্পটার অবশ্য এখানেই শেষ নয়। বরং বলা যায় এটাই শুরু। অনিতা স্বামীর ঘরে ফেরার পরে গত ন’মাসে তাঁর দেখানো রাস্তায় হেঁটেছে ঝিতুধানা গ্রামের আরও বেশ কিছু পরিবার। ওই গ্রামে শৌচাগার বানিয়ে দেওয়ার মোট একশোটি আবেদন জমা পড়েছে এই পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই বানিয়ে দেওয়া হয়েছে আশিটি। নিজের বিবাহিত জীবন ‘বিপন্ন’ করে এই দৃঢ় পদক্ষেপের স্বীকৃতি হিসেবে অনিতার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। অনিতার ‘কাজ’ নজর কেড়েছে জেলা প্রশাসনেরও। বেতুলের কালেক্টর চন্দ্রশেখর বোরকার জানিয়েছেন, শৌচাগার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত প্রচারে অনিতার কথা তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। মধ্যপ্রদেশের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে তিনিই এখন ‘রোল মডেল’।
‘প্রতিবাদী’ স্ত্রীর জন্য এখন গর্বিত স্বামী শিবরামও!

শৌচাগার নয়, ফোন চান মহিলারা: জয়রাম

মহিলাদের শৌচাগারের থেকে মোবাইলের চাহিদাই বেশি বলে মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে আজ জয়রাম বলেন, “আমাদের ভাবনাচিন্তা পাল্টাচ্ছে। মহিলারা আজকাল মোবাইল ফোন চান। শৌচাগার নয়। এই আমাদের মানসিকতা।” জয়রামের মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েন অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, কিছু দিন আগেই কী ভাবে মধ্যপ্রদেশের এক আদিবাসী তরুণী শৌচাগারের দাবিতে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তাতে অবশ্য থামানো যায়নি জয়রামকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.