রানিগঞ্জ বইমেলায় ‘জলসা’, উঠছে প্রশ্ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রানিগঞ্জ |
পরিবর্তনের হাওয়া এ বার রানিগঞ্জ বইমেলাতেও।
তেইশ বছরের পুরনো এই মেলায় ফি বছরের মতোই বই কেনাবেচার পাশাপাশি চলছে নানা অনুষ্ঠান। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের মান নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিশিষ্টদের অনেকে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শহরের চিনকুঠি মোড় সার্কাস ময়দানে শুরু হয়েছে বইমেলা। প্রায় ৬০টি স্টলের পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বইয়ের দোকান হয়েছে মাত্র ১৮টি। আয়োজক সংস্থার পক্ষে অলোক সিংহের দাবি, “চারটি জেলায় একই সময়ে গ্রন্থমেলা চলছে। মাত্র ১৪ দিনের চেষ্টায় মেলার আয়োজন করেছি আমরা। তাই বেশি প্রকাশক পাওয়া যায়নি।”
গোড়ার দিকে এই মেলার আয়োজন করত রানিগঞ্জ সংস্কৃতি সমন্বয় কমিটি। পরে সিপিএম প্রভাবিত গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ মেলা পরিচালনার ভার নেয়। তাদের সাহায্য করত পুরসভা ও পঞ্চায়েত সমিতি। রাজ্যে সরকার পরিবর্তনের পরে তৃণমূল প্রভাবিত মাল্টিলিঙ্গুয়াল কালচারাল ফোরাম মেলার দায়িত্ব নিয়েছে।
কিন্তু সিপিএম-তৃণমূল নির্বিশেষে অনেকেরই অভিযোগ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে মেলায় এমন ‘জলসা’ হচ্ছে, যা বইমেলা ও তার দীর্ঘ ঐতিহ্যের পরিপন্থী। তৃণমূলেরই শিক্ষক সেলের সদস্য তথা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মনোনীত প্রতিনিধি অদ্বৈত কোনারের খেদ, “মেলার সঙ্গীতানুষ্ঠান রুচির বাইরে চলে যাচ্ছে। কর্মকর্তারাই শিল্পীদের এমন গান গাইতে অনুরোধ করছেন যে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।” সিপিএমের রানিগঞ্জ জোনাল কমিটির সদস্য রুনু দত্ত বলেন, “ওই মঞ্চে যা হচ্ছে মানুষ দেখছেন। আয়োজকদের রুচি নিয়ে যা বলার, তাঁরাই বলবেন।”
স্থানীয় বাসিন্দা সজল ধীবর, শুভ্রা কর, মধুসূদন পালেদের আক্ষেপ, “বৃহস্পতিবার আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশন এবং রানিগঞ্জের বিবেকানন্দ সেবাকেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানই এক মাত্র মঞ্চের কৌলিন্য ধরে রাখতে পেরেছে। স্থানীয় শিল্পীরা বইমেলার রুচি ধরে রাখতে পারেননি।”
রানিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সোহরাব আলি বলেন, “লেখক শিল্পী সঙ্ঘের সম্পাদক এবং কয়েক জন সদস্যও আমাদের পাশে রয়েছেন। কিন্তু আমরা নতুন, অভিজ্ঞতা কম। অসুবিধাগুলি যত দ্রুত সম্ভব কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” |