বোনের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ, প্রহৃত দাদা
বোনের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করে প্রহৃত হলেন দাদা। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়া স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। এক বছর আগে, ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে এই জেলারই আর এক প্রান্ত বারাসতে দিদি রিঙ্কুর শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় খুন হতে হয়েছিল ভাই রাজীব দাসকে।
বুধবার রাতের ঘটনায় প্রহৃত যুবকের আঘাত তত গুরুতর নয়। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টার সময় প্ল্যাটফর্মে তখনও যথেষ্ট লোকজন ছিল। কিছু দোকানপাট খোলা। আপ নৈহাটি লোকাল স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পরে অনেকে নামেন প্ল্যাটফর্মে। এত জনের কেউ এগিয়ে না আসায় বিস্মিত ওই তরুণী। তাঁর কথায়, “সকলে দাঁড়িয়ে যেন মজা দেখছিল। কেউ এগিয়ে এল না। ওরা তো দাদাকে টেনেহিঁচড়ে ট্রেনের সামনেই ফেলে দিতে চেয়েছিল।” বৃহস্পতিবার সকালে নৈহাটি জিআরপি-র কাছে শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ করেছেন নৈহাটির বাসিন্দা দুই ভাই-বোন। বুধবার রাতেও তাঁরা গিয়েছিলেন নৈহাটি জিআরপি-র কাছে। কিন্তু তখন অভিযোগের যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ঘটনার পরে কাঁকিনাড়া স্টেশনে জিআরপি ফাঁড়িতে কারও দেখা পাননি। রেল পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই ভাইবোনের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। এসআরপি শিয়ালদহ তাপসরঞ্জন ঘোষ বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
কী হয়েছিল বুধবার রাতে? ওই তরুণী গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কাঁকিনাড়া স্টেশনের কাছে অঙ্কের কোচিং নিতে গিয়েছিলেন। রাত হয়ে যাওয়ায় দাদা তাঁকে আনতে যান। ওই যুবক কল্যাণীর একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র। তিনি বলেন, “রাত তখন প্রায় সাড়ে ১০টা। ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আপ নৈহাটি লোকাল ঢোকার সময় হয়ে গিয়েছে। বোনকে নিয়ে প্ল্যাটফর্ম ধরে হাঁটছিলাম। হঠাৎই ও বলে, কে যেন পিঠে হাত রেখে চলে গেল। সামনে দেখি তিনটে ছেলে। আমি এগিয়ে গিয়ে ওদের ডেকে বলি, এমন কেন করা হল আমার বোনের সঙ্গে।” যুবকের অভিযোগ, এ কথা বলতে না বলতেই তিন জন ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর উপরে। শুরু হয় কিল-চড়-ঘুষি।
ইতিমধ্যে ট্রেন ঢুকে পড়ে প্ল্যাটফর্মে। তখনও ধস্তাধস্তি চলছে। তরুণী জানান, ট্রেন থেকে নেমে এক জন মাত্র যাত্রী এগিয়ে আসেন। তত ক্ষণে মেয়েটির তিন সহপাঠীও চলে এসেছেন প্ল্যাটফর্মে। তাঁদের দেখে মারমুখী যুবকেরা পিছু হঠে। নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রহৃত যুবকের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। তরুণী বলেন, “ছেলেগুলোকে আগে কখনও দেখিনি।”
এ দিন তাঁর বাবা গিয়েছিলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারেট-এ। রেল পুলিশ ঘটনার তদন্ত করলেও মেয়ের ‘সার্বিক নিরাপত্তা’র কথা ভেবে উদ্বিগ্ন তিনি। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওঁকে বলেছি লিখিত অভিযোগ করতে। আমরা মেয়েটির নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চয়ই দেখব। রেল পুলিশ চাইলে তদন্তে সহযোগিতাও করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.