পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেওয়া যাবে না বলে দাবি উঠেছিল। যাকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরে হাসনাবাদের টাকি উত্তরপল্লি হাইস্কুলে ভাঙচুর চালায় জনতা। পুলিশ কর্মীদের মারধর করা হয়। জখম তিন পুলিশ কর্মীকে ভর্তি করা হয়েছে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালে। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালালে কয়েক জন জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও লাঠি চালানোর কথা স্বীকার করেনি পুলিশ। কড়া নিরাপত্তায় পরীক্ষা অবশ্য হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের এ দিন ছিল মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষা। বসিরহাট মহকুমার ১৬২ জন পরীক্ষার্থীর সিট পড়েছিল টাকির স্কুলটিতে। দুপুরে পরীক্ষা শুরুর আগে থেকেই স্কুলের বাইরে পরীক্ষার্থীদের আত্মীয়-স্বজনেরা ভিড় করেছিলেন। স্কুল সূত্রের খবর, ব্যাপক টোকাটুকি চলছিল। বহিরাগতেরা সেই অনৈতিক কাজে সাহায্য করছিলেন পরীক্ষার্থীদের। প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের সঙ্গে বচসা বাধে অন্য পক্ষের। স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রে সে সময়ে মাত্র দু’জন পুলিশ কর্মী ছিলেন। তাঁদের প্রতিবাদ ধোপে টেঁকেনি। উল্টে ব্যাপক মারধর করা হয় ওই দুই পুলিশ কর্মীকে। তাঁরা স্কুলের ভিতরে আশ্রয় নিলে জনতা পিছু-ধাওয়া করে। গেট ভেঙে ঢুকে পড়ে আর এক প্রস্থ মারধর করা হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন হাসনাবাদের ওসি। জখম পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। ইট-পাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে উত্তেজিত জনতা। চোট পান হাসনাবাদের আইসি লিটন রক্ষিত। অন্য দুই জখম পুলিশ কর্মী হলেন, আবদুল লতিব এবং সুদর্শন গিরি। বসিরহাটের এসডিপিও আনন্দ সরকার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেন ।
জনতার দাবি, পুলিশ নিরীহ এক ব্যক্তিকে লাঠিপেটা করে। সেই খবর পৌঁছতে কয়েকশো গ্রামবাসী স্কুলের সামনে চলে আসেন। শুরু হয় বিক্ষোভ। জনতার অভিযোগ, নকল করার কাজে যারা জড়িত, তাদের বদলে সাধারণ মানুষকে পিটিয়েছে পুলিশ। অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশকে নিগ্রহের ঘটনায় কয়েক জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে সকলকে গ্রেফতার করা হবে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মানস চক্রবর্তীর কথায়, “নকল করায় বাধা দেওয়ায় কয়েক জন স্কুলে ঢুকে ভাঙচুর করে। প্রতিবাদ করা হলে পুলিশকেও মারধর করেছে ওরা। ঘটনাটি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তবে সকলের চেষ্টা পরীক্ষা শেষ করা গিয়েছে।” |