জোট-বার্তা ভোটের মাঝপথেও! নিজের ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে মুলায়ম সিংহ যাদব আজ ফের কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার কথা বললেন। উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো জানান, বিজেপি-র ক্ষমতায় আসা ঠেকাতে প্রয়োজনে তিনি কংগ্রেসকে সমর্থন করবেন। সপা-র দিক থেকে বারবার এই জোট-বার্তা এলেও কংগ্রেস অবশ্য এখনই নিজের অবস্থান খোলসা করতে নারাজ। উল্টে কংগ্রেস নেতৃত্ব এখনও ‘একলা চলো রে’-র কথাই বলে যাচ্ছেন প্রকাশ্যে। |
সনিয়া গাঁধী, রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশে গিয়ে একা লড়ে সরকার গঠনের কথাই বলে আসছেন। কাল দিগ্বিজয় সিংহ এমনও বলেন যে, পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে, সপা-র সঙ্গে জোট না করলে সরকার গড়া যাচ্ছে না, সে ক্ষেত্রেও সরকার থেকে দূরে থাকারই সিদ্ধান্ত নেবে কংগ্রেস। সেই পথ ধরেই আজ মুলায়মের প্রস্তাব নস্যাৎ করে দিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র রেণুকা চৌধুরী বলেন, “মুলায়মের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে, একক ভাবে সরকার গড়ার আত্মবিশ্বাস নেই সপা-র।”
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, মুলায়ম খুব ভালই জানেন যে, তিনি একা সরকার গড়তে পারবেন না। প্রাক্-নির্বাচনী কোনও সমীক্ষাতেই তাঁর দলকে ১৩০-১৩৫টি আসনের বেশি দেওয়া হচ্ছে না। একা সরকার গড়ার ক্ষমতা নেই বুঝলে উত্তরপ্রদেশের মানুষ মুলায়মকে ভোটও দেবেন না। এই আশঙ্কাতেই তিনি বলছেন, সমর্থনের ঢেউ সপা-র দিকে। প্রয়োজনে তাঁরা কংগ্রেসকেও সমর্থন করবেন। আসলে বাকি চার দফার ভোটগ্রহণের আগে মুলায়ম এমন ধারণা ছড়িয়ে দিতে চাইছেন যে, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনিই সরকার গড়বেন। কংগ্রেসের মতে, নিজস্ব ‘মুসলিম-যাদব’ ভোটব্যাঙ্ক অটুট রাখতে এটা মুলায়মের কৌশল। যে সব সংখ্যালঘু ভোটার মুলায়মের বদলে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার ভাবছেন, তাঁরা যাতে সপা-কেই ভোট দেন।
মুলায়মের এই ফাঁদেই পা দিতে চাইছে না কংগ্রেস। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে কল্যাণ সিংহের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন মুলায়ম। বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে থাকা কল্যাণের সঙ্গে মুলায়মের এই সদ্ভাব সংখ্যালঘুরা ভাল চোখে দেখেননি। তখন থেকেই মুলায়মের দিক থেকে সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেসের দিকে সরে আসা শুরু হয়। এখন মুলায়মের সঙ্গে আগাম জোটের কথা বলে সেই স্রোত আটকাতে চাইছে না কংগ্রেস।
দিগ্বিজয়ের মতো নেতারা তাই বলছেন, “মুলায়মের সঙ্গে অতীতে জোট বেঁধে ভুল করেছিল কংগ্রেস।” এআইসিসি-রও বক্তব্য, এ বার উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের একমাত্র লক্ষ্য ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানো। তাই ভোটের পরেও অন্য দলের সঙ্গে হাত মেলানো হবে, নাকি কংগ্রেস বিরোধী পক্ষে বসবে, তা স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না। তবে বিজেপি-র ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখা দিলে কংগ্রেসকে যে অন্য রণকৌশল নিতে হতে পারে, তা-ও মানছেন কংগ্রেসের নেতারা। গোটা বিষয়ে তাই প্রশ্নচিহ্ন ঝুলিয়ে রাখাটাই শ্রেয় বলে মনে করছে কংগ্রেস। |