|
|
|
|
ঘাটতি মেটাতে মরিয়া কেন্দ্র |
ওএনজিসি-র ৫ শতাংশ
শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
|
|
‘নবরত্ন’ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির অন্যতম অয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস কমিশনের (ওএনজিসি) ৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিল প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন মন্ত্রিগোষ্ঠী। এই শেয়ার নিলামের ফলে সরকারের ঘরে ১২ হাজার কোটি টাকার মতো আসতে পারে বলে ধারণা অর্থ মন্ত্রকের। রাজকোষ ঘাটতি সামালাতে চটজলদি যত বেশি সম্ভব আয়ের পথ তৈরি করতে চাইছে মনমোহন সিংহের সরকার। সেই জন্যই নিলামের সিদ্ধান্ত।
তবে চলতি অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছিল, তা কোনও ভাবেই পূরণ হচ্ছে না। গত বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিলগ্নিকরণ থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা আয় হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের কোষাগারে এসেছে মাত্র ১১৪৪ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। তার মূল কারণ অবশ্যই শেয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা। এ বছরে ওএনজিসি ছাড়াও স্টিল অথরিটি (সেল), ভেল (ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস), হিন্দুস্তান কপার, ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেড (এনবিসিসি) এবং রাষ্ট্রীয় ইস্পাত নিগমের বিলগ্নিকরণের পরিকল্পনা নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু আমেরিকা-ইউরোপের আর্থিক মন্দার জের এ দেশের শেয়ার বাজারেও এসে পড়ায় বিলগ্নিকরণের দিকে বিশেষ এগোতে পারেননি প্রণববাবু। একমাত্র পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশনের বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে কিছু টাকা ইতিমধ্যেই ঘরে এসেছে।
শেয়ার বাজারের পতনের কারণে গত নভেম্বরে ওএনজিসি-র শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েও পিছিয়ে আসতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। আজ ভেল-এর ১০ শতাংশ শেয়ার নিলাম করা নিয়ে মন্ত্রিগোষ্ঠীতে আলোচনা হয়। কিন্তু শেয়ার বাজারে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলির ছবি বিশেষ উজ্জ্বল নয় বলে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। ভারী শিল্পমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল জানান, মন্ত্রিগোষ্ঠীর পরের বৈঠকে ফের এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে চলতি অর্থবর্ষে ভেলের বিলগ্নিকরণ সম্ভব নয় বলেই সরকারি কর্তাদের ধারণা।
এ দিকে, এ দিকে হিসেব মতো আয় না হওয়ায় রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর। তাই শেষবেলায় ওএনজিসি-র শেয়ার নিলাম করে পরিস্থিতি খানিকটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। যদিও এখন শেয়ার বিক্রি কার্যত সময়ের সঙ্গে লড়াই। চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর ঠিক দেড় মাস বাকি। কিন্তু নিলামের খুঁটিনাটি কিছুই আজ ঠিক হয়নি। পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী এস জয়পাল রেড্ডি আজ বলেন, “নিলামের মাধ্যমে ওএনজিসি-র বিলগ্নিকরণ হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কোনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। খুব শীঘ্রই ফের মন্ত্রিগোষ্ঠী ফের বৈঠকে বসবে।”
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে ফের মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক বসবে। সেখানেই নিলামের দিনক্ষণ, ন্যূনতম মূল্য ঠিক হবে। অর্থাৎ এক মাসের মধ্যে গোটা বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে। দেশের বৃহত্তম গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম উত্তোলনকারী এই সংস্থার মোট শেয়ার মূল্যের পরিমাণ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মধ্যে সব থেকে বেশি। এর ৭৪.১৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব এখন সরকারের হাতে রয়েছে।
এর পরেও রাজকোষ ঘাটতি ৪.৬ শতাংশে বেঁধে রাখার যে লক্ষ্যমাত্রা গত বাজেটে নিয়েছিলেন প্রণববাবু, তা পূরণ হবে না। কিন্তু যতটা সম্ভব রাশ টানতে বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়ায় গতি আনতে চাইছেন প্রণব-মনমোহন। এনবিসিসি-র বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া এ বছরে শেষ করার চেষ্টা চলছে কেন্দ্র। সেখান থেকেও আড়াইশো কোটি টাকা আয় হতে পারে। আর কোনও ভাবে যদি ভেলের শেয়ার বিক্রি করা যায়, তা হলে কোষাগারে আড়াই হাজার কোটি টাকা আসতে পারে। |
|
|
|
|
|