পাঠ্যক্রম শুরু করতে দেরি, ব্রেল পদ্ধতিতে পড়ার সরঞ্জাম না পাওয়া-সহ একাধিক অভিযোগে স্কুলে তালা দিল ‘মানভূম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষায়তন’-এর ছাত্রছাত্রীরা। শনিবার থেকে তালা পড়েছে স্কুলটিতে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, স্কুলে তালা দিতে পড়ুয়াদের ‘প্ররোচিত’ করা হয়েছে।
পুরুলিয়া-১ ব্লকের বোঙ্গাবাড়িতে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ওই স্কুলে সমস্যা দীর্ঘদিনের। আগেও বহুবার ওই স্কুলে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ বার ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, চলতি জানুযারিতে শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও ওই মাসে ক্লাস কার্যত হয়নি। ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হলেও মেলেনি ব্রেল পদ্ধতিতে পড়ার সরঞ্জাম। বস্তুত ওই পদ্ধতির পাঠ্য সরঞ্জাম না পাওয়ায় পড়াশোনা শুরু করাই সম্ভব নয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পক্ষে।
স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র পূর্ণচন্দ্র মাহাতো, পবন মাহাতো বা চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া নরেন মাহাতো, নমিতা মাহাতোদের ক্ষোভ, “পাঠ্য সরঞ্জাম নেই, হস্টেলে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়, শৌচালয়ের অবস্থাও খুব খারাপ। বারবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও ফল হয়নি।” |
এ দিন ওই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, বন্ধ গেটের সামনে শিক্ষক ও ছাত্রদের ভিড়। তবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি শিক্ষকেরা। স্কুলে পাওয়া যায়নি টিচার-ইন-চার্জ রিনা নাথকে। তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগও করা সম্ভব হয়নি। তবে পুরুলিয়ার (সদর) মহকুমাশাসক তথা ওই স্কুলটির পরিচালন সমিতির সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের আশ্বাস, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ওই স্কুলের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে তাঁরা উদ্যোগী হয়েছেন। সোমবারই স্কুলের সমস্যা নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
মহকুমাশাসক বলেন “গত অগস্ট মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পরে দেখেছি স্কুলের পরিচালনা ও উনন্নয়নের বিষয়ে পরিচালন সমিতির সম্পাদক মনোরঞ্জন মাহাতোর ভূমিকা অত্যন্ত নেতিবাচক। ফলে স্কুল পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, নতুন সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী নতুন পরিচালন সমিতি গঠন করার চেষ্টা করা হলেও তা করা যায়নি। সুদীপ্তবাবুর এ-ও দাবি, ছাত্রছাত্রীদের বাইরে থেকে ‘প্ররোচিত’ করা হচ্ছে। তবে সমস্যার স্থায়ী সমাধান দ্রুত করা হবে। সম্পাদক মনোরঞ্জনবাবু অবশ্য মহকুমাশাসকের অভিযোগ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “স্কুলের সমস্যা মেটানোর জন্য টিচার-ইন-চার্জকে বহুবার বলা হলেও ফল হয়নি। স্কুলে সমস্যার জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে টিচার-ইন-চার্জ স্কুল বন্ধ থাকার বিষয়ে এখনও আমাকে কিছু জানাননি।” |