শিল্প গড়ার প্রস্তাব নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতে চলতি বছরেই পশ্চিমবঙ্গে আসছেন অনাবাসী ভারতীয় বাঙালিদের সংগঠন নন-রেসিডেন্ট ওভারসিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল (এনআরওএবি)-এর প্রতিনিধিরা। সঙ্গে থাকবেন শারজা চেম্বার অফ কমার্সের শিল্পপতিরাও। তাঁদের দাবি, যে ধরনের প্রকল্পের কথা তাঁরা ভাবছেন, তাতে এক লপ্তে বড় মাপের জমি জরুরি নয়। লগ্নির অঙ্কও বেশি নয়। তবে ব্যবহৃত হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। তাই সরাসরি জমি কেনার থেকে প্রশাসনিক ঢিলেমিতে ছাড়পত্র পেতে দেরি হবে কি না, সেটাই এখন তাঁদের প্রশ্ন।
সম্প্রতি দুবাইয়ে সম্মেলন আয়োজন করে এনআরওএবি। সেখানেই স্বাস্থ্য, ইঞ্জিনিয়ারিং, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, অপ্রচলিত বিদ্যুৎ, শিক্ষার মতো ক্ষেত্রে রাজ্যে শিল্প স্থাপনের একগুচ্ছ প্রস্তাব পেশ করেন ওই বাঙালিরা। ছিলেন বেঙ্গল চেম্বারের (বিসিসিআই) প্রতিনিধিরাও।
সফর পরিকল্পনা জানিয়ে এনআরওএবি সভাপতি নীলাংশু দে বলেন, “বিসিসিআইয়ের মাধ্যমে যৌথ উদ্যোগের অংশীদার খোঁজার চেষ্টা করব আমরা। রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতেও তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।” আর বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতা এবং বণিকসভাটির ডিরেক্টর জেনারেল প্রিয়দর্শন রায়ের দাবি, “অনেক শিল্পেই এমন প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে, যা রাজ্যে বা দেশে আগে আসেনি। তা ছাড়া, অধিকাংশ লগ্নি প্রস্তাবই ছোট ও মাঝারি। তাই তার জন্য জমি পেতেও সমস্যা না হওয়ারই কথা।” তবে আগ্রহী লগ্নিকারীরা চান, লাল ফিতের ফাঁসে যেন প্রকল্পে ছাড়পত্র পেতে অযথা দেরি না-হয়।
পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তৈরি ও তা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে টরন্টোর জয়দেব সরকারের সংস্থা সারট্রেক্স। জয়দেববাবু বলেন, “আমরা রাজ্যে এই পণ্য তৈরিতে আগ্রহী। এ জন্য বড় জমিও লাগবে না। কিন্তু এ ধরনের লগ্নি টানতে রাজ্য কতটা আগ্রহী, তা জানা জরুরি। কারখানা গড়তে নানা অনুমতিও প্রয়োজন। তা যাতে দ্রুত হাতে আসে, সে বিষয়ে রাজ্যের সহযোগিতা চাইব।”
অন্য লগ্নি প্রস্তাবগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য লন্ডনবাসী প্লাস্টিক সার্জেন গৌতম বসুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পরিকল্পনা। তিনি জানান, কলকাতায় ওই হাসপাতাল তৈরি হলে, সেখানে চিকিৎসা হবে পুড়ে যাওয়া রোগীদের।
একই ভাবে, মূলত কল-কারখানায় বা বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহৃত বিশাল আকারের বৈদ্যুতিক পাখা তৈরির কারখানা গড়তে চায় কাতারের গ্রিন টেকনোলজিস। সংস্থার এমডি সুব্রত করের দাবি, “৮-২৪ ফুটের এই পাখার হাওয়া পৌঁছয় সাড়ে ১৭ হাজার বর্গ ফুট পর্যন্ত। যে কারণে তা কারখানার শেড বা রেল স্টেশনের মতো জায়গায় লাগানোর উপযুক্ত। দাম ও লাগানোর খরচ বেশি হলেও, তা লাভজনক। কারণ ৬০% বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সম্ভাবনা।”
আবার আমেরিকার লেহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অরূপ সেনগুপ্তের দাবি, “পানীয় জল আর্সেনিক-ফ্লোরাইডমুক্ত করতে একটি দ্রব্য তৈরি করেছি। ভারতে (বিশেষত গ্রামাঞ্চলে) দূষণমুক্ত পানীয় জলের সরবরাহ বাড়াতে তা সহায়ক হবে। প্লান্ট তৈরির খরচ ২ লক্ষ টাকা। বসাতে পারবেন গ্রামের মানুষই।” |