একটা নয় দু’টো নয় একেবারে ছ’ ছ’টা গ্র্যামি জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পপ গায়িকা অ্যাডেল। লেডি গাগা, রিহানাকে হারিয়ে কাল রাতের গ্র্যামির মঞ্চ মূলত শাসন করেছে তিনিই। আর এই ছ’টা গ্র্যামি জিতে পপ তারকা বেয়ন্সের সঙ্গে এক আসনে উঠে এলেন অ্যাডেল। দু’বছর আগে ছ’টি গ্র্যামি জিতে সর্বাধিক মহিলা গ্র্যামি পুরস্কার বিজেতা হিসেবে রেকর্ড করেন বেয়ন্সে। দৃশ্যতই বাকরুদ্ধ অ্যাডেল পরে এই পুরস্কার প্রাপ্তির পিছনে তাঁর মায়ের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
গত নভেম্বরেই গলায় অস্ত্রোপচার হয়েছে। অনেকেরই আশঙ্কা ছিল, এর পরে তিনি আর গান গাইতে পারবেন কি না। কিন্তু এ বারে গ্র্যামির মঞ্চে তাঁর প্রবল উপস্থিতি ভক্তদের সব আশঙ্কা থামিয়ে দিয়েছে। চিরকালই একটু ভারী চেহারার অ্যাডেল যুগের সঙ্গে গা ভাসাতে রাজি নন। তাঁর চেহারা নিয়ে যথেষ্ট খুশি তিনি। এক বার এক সাক্ষাৎকারে অ্যাডেল বলেছিলেন, “নিজেকে বিশ্বের আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের প্রতিনিধি বলে ভাবতে ভাল লাগে। চেহারা নিয়ে আমি যথেষ্ট গর্বিত।” |
১৯৮৮ সালের ৫ মে লন্ডনের টটেনহ্যামে জন্মেছিলেন অ্যাডেল। পুরো নাম অ্যাডেল লরি ব্লু অ্যাডকিনস। চার বছর বয়স থেকেই গান গাইতে শুরু করেন অ্যাডেল। নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে অ্যাডেল জানিয়েছিলেন, মহিলা গানের ব্যান্ড ‘স্পাইস গার্ল’ তাঁর গায়িকা হওয়ার প্রেরণা জুগিয়েছিল। প্রসঙ্গত ফুটবলার বেকহ্যামের স্ত্রী ভিক্টোরিয়া বেকহ্যাম এক ‘স্পাইস গার্ল’-এর অন্যতম গায়িকা। ২০০৬-এ এক বান্ধবী তাঁর গান একটি ওয়েবসাইটে দিয়েছিলেন। সেখানে গান শুনে পছন্দ হওয়ায় এক্স এল রেকর্ডিং অ্যাডেলের সঙ্গে চুক্তি করে। ২০০৮ সালে তাঁর প্রথম অ্যালবাম ‘১৯’ সারা ফেলে দেয় সঙ্গীতমহলে। আর সেই অ্যালবামের জেরেই ২০০৯ সালে ‘সেরা নতুন তারকা’ এবং ‘সেরা পপ গায়িকা’-র তকমা পান অ্যাডেল। ২০১১ সালে তাঁর দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘২১’ প্রকাশিত হয়। দেশ ছাড়িয়ে তাঁর গানের জাদুতে মেতে ওঠেন আমেরিকা-সহ সারা বিশ্বের সঙ্গীতপ্রেমীরা। শুধু ইংল্যান্ডেই গত বছর তাঁর ৩০ লক্ষ অ্যালবামের বিক্রি রেকর্ড গড়েছে। আমেরিকায় বিক্রি হয়েছে ৬০ লক্ষ কপি। এর আগে এক বছরে কারও এত গানের রেকর্ড বিক্রি সে দেশে নেই। মাত্র দু’টো অ্যালবাম। তাতেই সফল। ‘রোলিং ইন দ্য ডিপ’, ‘সামওয়ান লাইক ইউ’, ‘মেক ইউ ফিল মাই লাভ’ প্রভৃতি গান এখনকার তরুণ প্রজন্মের মুখে মুখে ঘুরছে। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও তিনি মনোনীত হয়েছিলেন।
এ বারের গ্র্যামির যে ছ’টি বিভাগে মনোনীত হন সব ক’টিতেই পুরস্কার জিতেছেন অ্যাডেল। গানের জগতে তাঁর যন্ত্রের বিশেষ ভূমিকা স্মরণ করে অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জোবসকে মরণোত্তর গ্র্যামি দেওয়া হয়েছে। গ্র্যামি পুরস্কার জিতেছেন টেলর সুইফট, টনি বেনেট। প্রয়াত পপ গায়িকা হুইটনি হিউস্টনের সঙ্গে যৌথ ভাবে গাওয়া ‘বডি অ্যান্ড সোল’-এর জন্য পুরস্কার জেতেন টনি। |