সরকারি হোম থেকে তালা ভেঙে পালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি ৯ নাবালকের রবিরার পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি। শুক্রবার গভীর রাতে বহরমপুরের ‘আনন্দ আশ্রম’ নামের ওই সরকারি হোমের দরজার তালা ভেঙে পালিয়ে যায় ১২-১৬ বছর বয়সী ওই ৯ জন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের অপরাধে ধৃত ওই বালকদের জুভেনিয়াল কোর্টের নির্দেশে হোমে বন্দি রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে কারও সাজার মেয়াদ অবশ্য শেষ হয়েছে তিন মাস আগে, কারও বছর খানেক আগে।
মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক অজয়কুমার ঘোষ বলেন, “আদালতের নির্দেশে ওই নাবালকদের আশ্রমে রাখা হয়। সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া ওই নাবালকদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পদ্ধতিগত কাজও চলছিল। তার মধ্যেই শুক্রবার গভীর রাতে ৯ নাবালক পালিয়ে যায়। গোটা বিষয়টি জানিয়ে রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতরে একটি বিস্তৃত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তও হবে।” পুলিশ জানায়, পলাতকদের নাম সুমন আলি, নয়ন আলি, কালু আলি, রবিউল ইসলাম, মিলন শেখ, জীবন ইসলাম, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস ও খোরসেদ আলি। |
এ দিকে ওই ঘটনার মধ্যে সোমবার মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন রাজীবকুমার। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলেন। জেলাশাসকের অনুমোদন পেলেই টিম গড়ে হোম-কাণ্ডের তদন্ত শুরু হবে বলে জেলাপ্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদ পুলিশ সুপার হুমায়ন কবীর বলেন, “জেলার সব থানাকে ওই নাবালক পালানোর ঘটনা জানানো হয়েছে। সেই মতো ২৬টি থানার পুলিশ অফিসারদের নজরদজারি বাড়াতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তাদের কোনও খোঁজ মেলেনি।”
‘আনন্দ আশ্রম’ নামের ওই সরকারি হোমের দোতলার একটি হলঘরে ছিল সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন মিলিয়ে মোট ১৭ জন নাবালক বন্দি। তার মধ্যে ১৩ জন বাংলাদেশি। জামিল শেখ নামের ১৫ বছরের এক কিশোরেরও বাড়ি বাংলাদেশের নবাবগঞ্জ জেলায়। জামিল জানায়, “রাত সাড়ে তিনটেয় ঘুম ভেঙে গেলে দেখি, ওই ঘরের ৯ জন তালা ভেঙে পালিয়ে গিয়েছে।” হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই নাবালকেরা সীমান্তে চোরাচালানের ‘ক্যারিয়ার’-এর কাজ করতে দিয়ে ধরা পড়ে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র এবং ওই দফতরের মুখ্যসচিব টুকটুক মিত্র আগামী বৃহস্পতিবার জেলায় আসছেন। ওই দিন বহরমপুর সার্কিট হাউসে জেলার সমস্ত আধিকারিকদের নিয়ে তাঁরা বৈঠক করবেন। অজয়বাবু বলেন, “ওই বৈঠকে আনন্দআশ্রম হোম সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। এর আগে হোমের উন্নয়নের জন্য জেলাপ্রশাসনের তরফে বেশ কিছু পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছিল। ওই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে ওই দিনের বৈঠকে আলোচনা করা হবে।” |