পরিবেশ বাঁচাচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত
র নয় কংক্রিটের রিসর্ট । দূষণ এড়াতে নির্মাণ কাজে ব্যবহার করতে হবে পরিবেশ বান্ধব উপাদান। কটেজ চত্বরে বুনতে হবে রকমারি গাছ। গরুমারা জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার প্রকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় দাওয়াই ঠিক করেছেন লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান গোবিন্দ দাস বলেন, “লাটাগুড়ি এলাকায় প্রচুর কংক্রিটের রিসর্ট তৈরি হয়েছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় এটা ঠিক হয়নি। আমরা ঠিক করেছি, যা হওয়ার হয়েছে। এখন থেকে নতুন কোনও কংক্রিটের রিসর্ট তৈরির অনুমতি দেওয়া হবে না।” বন সংলগ্ন লাটাগুড়ি পাল্টাচ্ছে ঝড়ের গতিতে। সবুজের টানে প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে সেখানে। ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রিসর্টের সংখ্যা। আদল পাল্টে ক্রমশ কংক্রিটের বর্মে শরীর ঢাকছে ছোট্ট জনপদ। পর্যটন শিল্প বিকাশের হাত ধরে এলাকার দ্রুত উন্নয়ন নিয়ে খুশির আবহেও দুশ্চিন্তা ছায়া মেলেছে। পরিবেশপ্রেমী বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে এ ভাবে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে পর্যটন শিল্প কতদিন টিঁকে থাকবে! লাটাগুড়ি সায়েন্স অ্যাণ্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক কল্যাণ সিংহ বলেন, “পর্যটকরা লাটাগুড়িতে আসেন সবুজ প্রকৃতির কোলে নিরালায় সময় কাটাতে। এখানে পৌঁছে যদি কংক্রিটের জঙ্গল দেখেন তবে কী আর আসবেন!” ১৯৯৫ সাল থেকে লাটাগুড়ির ছবি পাল্টাতে শুরু করে। ২০০০ সালের পরে পরিবর্তন ঝড়ের গতি পায়। সবুজকে আড়াল করে বেড়ে চলে কংক্রিটের জঙ্গল। লাটাগুড়ি, উত্তর ঝাড়মাটিয়ালি এবং উত্তর মাটিয়ালি মৌজা নিয়ে তৈরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লাটাগুড়ি এবং উত্তর ঝাড়মাটিয়ালি মৌজায় অন্তত ৫০টি রিসর্ট গড়ে ওঠে। লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা জানান, রিসর্টের সংখ্যা বেড়ে চলায় প্রচুর পর্যটক এখানে রাত কাটানোর সুযোগ পাচ্ছে। কর্মসংস্থানের সুযোগও বেড়েছে। কিন্তু উন্নয়নের উল্টো পিঠে বেড়ে চলা দূষণ তাঁদের কপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছে। কী সেই দূষণ! পঞ্চায়েত প্রধানের কথায়, “সবুজ পরিবেশে বড্ড বেমানান কংক্রিটের রিসর্ট। এটা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ক্ষেত্রে বড় বিপদ। কিন্তু চালু রিসর্ট বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা ঠিক করেছি নতুন রিসর্ট তৈরির সময় কংক্রিটের ব্যবহার কমাতে হবে। এটা নিশ্চিত হয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।” পঞ্চায়েতের তরফে নতুন রিসর্ট তৈরির ক্ষেত্রে যে দুটি প্রধান নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে তা হল-নির্মাণ কাজে পরিবেশ বান্ধব উপাদান ব্যবহার করতে হবে। দ্বিতীয়ত, রিসর্ট চত্বরে প্রচুর গাছ বুনতে হবে। লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কমল ভৌমিক দুই শর্তের সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, “লাটাগুড়িতে গাছ কেটে একটিও রিসর্ট তৈরি হয়নি। উল্টে প্রত্যেকে গাছ বুনেছেন। তবে আরও গাছ বুনতে হবে। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ পরিবেশ বান্ধব উপাদানের সাহায্যে এখানে রিসর্ট তৈরির নিয়ম চালু করলে ভাল হবে।” লাটাগুড়িকে প্লাস্টিক মুক্ত রাখতে ইতিমধ্যে দু’জন কর্মী নিয়োগ করেছে গ্রাম পঞ্চায়েত। রাত ন’টার পরে রিসর্টে গান বাজনাও নিষিদ্ধ হয়েছে। এ বার রিসর্ট তৈরির ক্ষেত্রে নিয়ম চালুর উদ্যোগে খুশি বন দফতর। জলপাইগুড়ি বনবিভাগের ডিএফও কল্যাণ দাস বলেন, “ভাল উদ্যোগ। কড়া নিয়ম প্রয়োগ করতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.