কলকাতার কড়চা-য় (৯-১) ‘নটসম্রাট’ স্বপনকুমার পড়ে দু’-একটি বিশেষ ঘটনা সংযোজন করতে চাই। উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জের ‘দোল উৎসব’ এক সময় (আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে) ছিল ওই এলাকার দুর্গাপুজোর চেয়েও বেশি জনপ্রিয় উৎসব। বিশাল এলাকা জুড়ে ধানখেতের মাঠে বসত এই উৎসব মেলা হিঙ্গলগঞ্জ বাজারের দিক দিয়ে, বাঁকড়ার দিক দিয়ে এবং তৎকালীন মুচিপাড়ার দিক দিয়ে, এখনকার রানিবালা গার্লস হাইস্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তা এই তিন দিক দিয়ে ওই মেলায় প্রবেশ করা যেত। সেই মেলা-উৎসবে কলকাতার স্বনামধন্য যাত্রার দলগুলি অংশ নিত। সঙ্গে থাকত ‘মরণকূপ’। শক্ত মজবুত, গোলাকৃতি বাড়িটির গা বেয়ে ২/৩ জন মোটর সাইকেল চালিয়ে উপরে উঠবে এবং আবার ওই প্রচণ্ড গতিতে চালিয়ে নীচে নামবে। গতিপথের হিসাবে দু’-এক সেকেন্ডের তারতম্য হলেই পতন এবং মরণ প্রায় অনিবার্য। বিখ্যাত সার্কাস, পুতুল নাচ, ম্যাজিক শো, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, হাজারো দোকান কী যে থাকত না, তা লিখে বোঝানো যাবে না। এ দিকে হাসনাবাদ থেকে সুন্দরবনের প্রায় সমস্ত অঞ্চলের মানুষ আসতেন। আসতেন হিঙ্গলগঞ্জের ইছামতী নদীর ও-পারের বর্তমান প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ থেকেও। মেলাস্থানের কাছে-দূরের প্রায় সমস্ত বাড়িতে দূর-দূরাঞ্চল থেকে আত্মীয় কুটুমেরা এসে থাকতেন দশ দিনের ওই দোল মেলার জন্য। হিঙ্গলগঞ্জের ওই দোল উৎসবে স্বপনকুমার অনেক বার যাত্রা করেছেন, আমার মতো অগণিত মানুষ তা দেখেছেন। অনেকে মনেও রেখেছেন। নবরঞ্জন অপেরার ‘মাইকেল’ যাত্রাপালায় নামভূমিকায় অভিনয় করতেন স্বপনকুমার। ১৯৬৬-’৬৭ সালের ঘটনা। সম্ভবত স্বপনকুমার হেলিকপ্টারে করে সুন্দরবনের যাত্রায় গিয়েছিলেন। কেননা, তাঁর দু’-দু’খানা নদী পার হওয়ার ভয় ছিল। হেলিকপ্টার থেকে নামার সময় তাঁকে দেখার জন্য এক টাকার টিকিট করা হয়েছিল এবং তাতে অনেক হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। যাত্রানায়ক স্বপনকুমার নিজে বলেছেন, লেখক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ‘সপ্তপদী’ যাত্রাপালা করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এবং ওই ‘সপ্তপদী’ যাত্রার বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল: এই যাত্রা যদি কেউ দেখে, তা হলে তার ডায়াবেটিস সেরে যাবে।
প্রবীর ঘোষ। নরেন্দ্রপুর, কলকাতা-১০৩
|
হাওড়ার সালকিয়া-ধর্মতলা রোড (পারিজাত সিনেমার কাছের রাস্তা, সালকিয়া, হাওড়া-৬) ঘন জনবসতি এলাকা। অথচ এখানে বসতবাড়ির গায়ে গায়ে ভারী ওজনের মেশিন, ক্রেন বসিয়ে কারখানা হওয়ার ফলে বাড়িঘর কাঁপে। সারা দিনরাত মেশিনের বিষম-বিকট শব্দে প্রাণ ওষ্ঠাগত। মাথা ঘোরে, বুক ধড়ফড় করে। এই আওয়াজ সুস্থ মানুষকে অসুস্থ করে তুলছে আর অসুস্থ মানুষকে একটু একটু করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন সব কিছু জেনেশুনেও নীরব। এর কোনওই প্রতিকার নেই। শব্দ-পরিবেশ-দূষণ সৃষ্টিকারী কারখানাগুলো এখান থেকে সরানো যায় না?
এ কে গুপ্ত। সালকিয়া, হাওড়া-৬
|
স্বামীজির শিক্ষে ছড়িয়ে দিতেই শিকাগোয় প্রণব’ (২৯-১) প্রতিবেদনে কিছু তথ্যগত ত্রুটি আছে বলে মনে হয়। প্রথমত, স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯৩-এর ১১ সেপ্টেম্বর যেখানে বক্তৃতা করেছিলেন সেটা আর্ট অব প্যালেস ছিল না। ছিল, শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটের বৃহত্তম কক্ষ হল অব কলম্বাস। শিকাগোর চারুকলার স্থায়ী প্রদর্শনাগার হল আর্ট ইনস্টিটিউট। বিশ্বমেলার সঙ্গে এর কোনও সম্বন্ধ না-থাকলেও এর সুপ্রশস্ত কক্ষগুলিতে মেলা সংক্রান্ত বহু অধিবেশন হয়েছিল। (সূত্র: ‘যুগনায়ক বিবেকানন্দ’- স্বামী গম্ভীরানন্দ, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ ২৩)
দ্বিতীয়ত, ১৬ দিনের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দ মোট চারটি বক্তৃতা করেননি। মূল মঞ্চে অভ্যর্থনার উত্তর ও বিদায়ী অভিভাষণ ছাড়া চারটি বিষয়ের উপর চারটি বক্তৃতা করেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি অন্যান্য মঞ্চে আরও প্রায় ৮টি বক্তৃতা করেন (সূত্র: ‘কুইজ অন বিবেকানন্দ’, স্বামী বৈকুণ্ঠানন্দ, পৃ-৪৬-৪৭)। বই দুটির প্রকাশক ‘উদ্বোধন’।
পরেশকুমার নন্দ। কলকাতা-৫৪
|
অনেক বছর আগেই ‘কলিকাতা’ নাম পাল্টে কলকাতা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বই বিক্রয় কেন্দ্রে (বউবাজারের দিকে) এখনও ‘কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পুস্তক বিক্রয় কেন্দ্র’ লেখা বোর্ড লাগানো। এটা কি অনিচ্ছাকৃত? নাকি অন্য কিছু?
অতীশচন্দ্র ভাওয়াল। কোন্নগর, হুগলি |