ভালবাসার লাল গোলাপ
এ রাজ্যে ফুটবে ক’মাসেই
যে সে গোলাপ নয় ভালোবাসার লাল গোলাপ।
লম্বা, শক্ত ডাঁটি। তার গায়ে কচি সবুজ দু’টি পাতা। আর একেবারে মাথায় ছোট্ট চায়ের কাপের মতো দেখতে টুকটুকে লাল কুঁড়ি। তবে না ভালবাসার লাল গোলাপ!
১৪ ফেব্রুয়ারি, ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে সাধারণ ফুলের বাজারে যে সব লাল গোলাপ বিকিয়ে যায় নিমেষে, আন্তর্জাতিক বাজার তাকে মোটেই ওই নামে ডাকে না! এ রাজ্যে সে দুষ্প্রাপ্য। এ বছর ইউরোপেও তুষারপাতের ধাক্কায় লাল গোলাপ তেমন হয়ইনি। কিন্তু ইউরোপের বাজারে তার চাহিদা এতটাই যে, জার্মান বিমান সংস্থা লুফৎহানসা ১৪ তারিখের জন্য তিন কোটি গোলাপ উড়িয়ে আনছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা থেকে। সেই গোলাপের মিলিত ওজন ১১০০ টন!
এ দেশ থেকে লাল গোলাপের জোগানে এগিয়ে আছে বেঙ্গালুরু। এমিরেটস বিমানসংস্থা ইতিমধ্যেই সেখান থেকে ৪৫ টন গোলাপ দুবাই, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ায় চালান করে দিয়েছে। পুণেতেও তৈরি হচ্ছে গোলাপ। শুক্র ও শনিবার সেখানকার লাল গোলাপ জেট এয়ারওয়েজে চেপে কলকাতা ঘুরে উড়ে গিয়েছে কাঠমাণ্ডু, উত্তর-পূর্ব ভারতে।
পশ্চিমবঙ্গ কেন পারছে না? এ রাজ্যের ফুলচাষিদের যে সংগঠন রয়েছে, তাঁর সম্পাদক নারায়ণ নায়েক জানাচ্ছেন, ওই বিশেষ গোলাপের জন্য চাই ‘গ্রিন হাউস’। ঢাকা জায়গায়, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে চাষ করলে তবে পাওয়া যাবে কাঙ্খিত সেই কুঁড়ি। নারায়ণবাবুর কথায়, “গ্রিন হাউস করে চাষের খরচ অনেক। সরকারি সাহায্য প্রয়োজন। যা এখানে নেই।”
ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ রাজ্য থেকে হাতে গোনা যে কয়েক জন বিদেশে গোলাপ রফতানির চেষ্টা করেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অনুপ দত্ত। গত বছরেও কলকাতা থেকে তিনি রাশিয়া এবং লন্ডনে ২০০ কিলোগ্রাম গোলাপ পাঠিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “এখানকার ৫০টা গোলাপ কিনলে, খুঁজে খুঁজে একটা রফতানিযোগ্য গোলাপ পাওয়া যায়। তাহলেই বুঝে দেখুন ২০০ কিলোগ্রাম গোলাপ পাঠাতে আমাকে কত গোলাপ কিনতে হয়েছিল।” আবার রফতানির পরেও পছন্দ না হওয়ায় ১০ শতাংশ গোলাপ ভালোবাসার হাত খুঁজে পায়নি। আস্তাকুঁড়ে ঠাঁই হয়েছিল তাদের। পড়তায় পোষায়নি। এ বছর তাই রফতানির পথেই হাঁটেননি তিনি।
রাজ্যের হর্টিকালচার কর্পোরেশনের বিশেষজ্ঞ শিবাজী রায় জানান, অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাস থেকে গোলাপ চাষ শুরু হয়। গত বছর এ রাজ্যে সেই সময় বৃষ্টি হয়ে চাষের ক্ষতি হয়েছে। ফলে ৫০টা গোলাপের মধ্যে থেকেও একটা রফতানিযোগ্য গোলাপ খুঁজে পাওয়া এ বার দুষ্কর। গোলাপ চাষের এই বিষয়টি রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের আওতাধীন। সবেমাত্র ওই দফতরের দায়িত্ব নিয়েছেন তৃণমূল নেতা উজ্জ্বল বিশ্বাস। মন্ত্রীর কথায়, “গ্রিন হাউস প্রথায় চাষ করার জন্য চাষিদের উৎসাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে। শুরুও হয়েছে কিছু।” এ বছরের ভালবাসার দিনটা ‘সাধারণ’ গোলাপের হাত ধরে কেটে গেলেও কয়েক মাসের মধ্যে এ রাজ্যেও সেই বিশেষ গোলাপ তৈরি হতে থাকবে, আশ্বস্ত করছেন মন্ত্রী।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.