হোটেলের ঘরে উদ্ধার পপ-গায়িকা হুইটনির দেহ
লে গেলেন পপ-সম্রাজ্ঞী হুইটনি হিউস্টন। গ্র্যামি-পুরস্কার রজনীর প্রাক্কালে অসম্ভব জনপ্রিয় এই পপ-গায়িকা এবং অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ সঙ্গীত-দুনিয়া।
লস অ্যাঞ্জেলেসের বেভারলি হিল্টন হোটেলের একটি ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হুইটনির দেহ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৮। বেভারলি হিলস পুলিশ শনিবার ভোর চারটে নাগাদ হুইটনির মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনও অস্পষ্ট বলে জানিয়েছেন হুইটনির ম্যানেজার ক্রিস্টেন ফস্টার। পুলিশের দাবি, আপাত ভাবে এই মৃত্যুর সঙ্গে অপরাধের কোনও সম্পর্ক নেই। গত বছর জুলাইয়ে অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে লন্ডনে নিজের বাড়িতে মৃত্যু হয়েছিল আর এক গায়িকা অ্যামি ওয়াইনহাউসেরও। আশির দশক থেকে হুইটনির সুরের জাদুতে পাগল সঙ্গীতপ্রেমীরা। ‘আই উইল অলওয়েজ লাভ ইউ’-এর মতো গানে তিনি মাতিয়েছেন ভক্তকুলকে। এই গানটি ১৯৯২-এ গ্র্যামির সেরার তকমা পেয়েছিল। যে গ্র্যামির মঞ্চ এক সময় অক্লেশে শাসন করেছেন হুইটনি, সোমবারও সেখানে তাঁকে দেখার আশায় ছিলেন সবাই।
গ্র্যামি শুরুর আগের বিশেষ নৈশভোজেও থাকার কথা ছিল হুইটনি হিউস্টনের। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা আগেই সঙ্গীতপ্রেমীদের বিদায় জানিয়েছেন পপ-সম্রাজ্ঞী। খ্যাতির শিখরে পৌঁছেও মাদকের নেশায় টালমাটাল হয়ে গিয়েছিল হুইটনির সঙ্গীতজীবন। আর এক গায়ক ববি ব্রাউনের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্যজীবনও সুখের ছিল না। ২০০৭ সালে বিবাহবিচ্ছেদ। কিন্তু লড়াই ছাড়েননি হুইটনি। ১৯৯২-এ ‘দ্য বডিগার্ড’ ছবিতে অভিনয় করেও তাক লাগিয়ে দেন তিনি। ‘দ্য বডিগার্ড’ ছবিতেই ব্যবহার হয়েছিল ‘আই উইল অলওয়েজ লাভ ইউ’ গানটি। আশি থেকে নব্বইয়ের দশক জুড়ে ‘হাউ উইল আই নো’, ‘দ্য গ্রেটেস্ট লাভ অফ অল’, ‘আই ওয়ান্ট টু ডান্স উইথ সামবডি’, ‘সেভিং অল মাই লাভ ফর ইউ’ এর মতো একের পর এক দারুণ জনপ্রিয় গানে শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন অনায়াসেই। শুধু আমেরিকাতেই হুইটনির গানের ৫ কোটি ৫০ লক্ষেরও বেশি রেকর্ড বিক্রি হয়েছিল।
১৯৬৩-র ৯ অগস্ট নিউ জার্সির নেওয়ার্কে জন্ম এই পপ-তারকার। গির্জায় গান গেয়ে সঙ্গীত-জগতে প্রবেশ। মা সিসি হিউস্টন গির্জায় ধর্মসঙ্গীতের প্রধান গায়িকা ছিলেন। কিছু দিনের মধ্যেই হুইটনি গাইতে শুরু করেন নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন নাইটক্লাবে। করেছেন মডেলিং-ও। প্রায় ২০ বছর গান গাওয়ার পরে নাইটক্লাবে গান শুনেই তাঁর প্রতিভা বুঝতে পারেন সঙ্গীত প্রযোজক ক্লাইভ ডেভিস। ১৯৮৫-তে বের হল প্রথম অ্যালবাম ‘হুইটনি হিউস্টন’। বিক্রি হয় হু হু করে। ‘সেভিং অল মাই লাভ ফর ইউ’ গেয়ে পেলেন প্রথম গ্র্যামি।
এর পরে শুধুই খ্যাতির হাতছানি। বেশ কয়েকটি গ্র্যামি পাওয়ার পাশাপাশি ‘ওয়েটিং টু এক্সেল’ এবং ‘দ্য প্রিচারস ওয়াইফ’ ছবিতে অভিনয় করেও প্রশংসা পেয়েছেন। পর পর বেরিয়েছে গানের অসংখ্য অ্যালবাম ‘হুইটনি’ (১৯৮৭), ‘আই অ্যাম ইওর বেবি টুনাইট’ (১৯৯০), ‘মাই লাভ ইজ ইওর লাভ’ (১৯৯৮), ‘জাস্ট হুইটনি’ (২০০২), ‘ওয়ান উইশ: দ্য হলিডে অ্যালবাম’ (২০০৩) ইত্যাদি। তার পর মাদকের প্রভাবে প্রচারের আলো থেকে দূরে সরে যেতে হয়েছিল বেশ কিছু দিনের জন্য। অ্যালবামের বিক্রি কমে গিয়েছিল। পরের দিকের গানগুলো সে ভাবে জনপ্রিয়তাও পাচ্ছিল না। নেশার আধিক্যে নিজের অনুষ্ঠান বাতিল করে দিচ্ছিলেন।
একটি সাক্ষাৎকারে হুইটনি নিজেই বলেছিলেন, “আমিই সব চেয়ে বড় শয়তান। আমি হয় আমার খুব ভাল বন্ধু অথবা ভয়ঙ্কর শত্রু।” তবে শেষ অ্যালবাম ‘আই লুক টু ইউ’-এর জন্য ফের পা রাখেন রেকর্ডিং স্টুডিওয়। ২০০৯-এ প্রকাশিত এই অ্যালবাম আবার জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। পপ-সম্রাজ্ঞীর অকাল-মৃত্যুতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারে শোকবার্তা জানিয়েছেন কেটি পেরি, রিয়ানা, মারিয়া ক্যারি, ক্রিস্টিনা অগিলেরার মতো পপ তারকারা। হুইটনির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ল্যারি কিং-এর কথায়, “ও শুধু গান গাইত না। সেটা অনুভব করত। এত কম বয়সে মৃত্যু! খবরটা অসম্ভব ধাক্কা দিল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.