লোহাচুর-দুর্নীতির ঘটনায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের রফতানি বিভাগে কর্মরত আরও ছ’জন অফিসারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। সিআইডি’র দাবি: তাদের হাতে এমন সব নথি রয়েছে, যার ভিত্তিতে প্রমাণ করা যাবে যে, ওই ছয় অফিসারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া ওই তিনশো কোটিরও বেশি টাকার নয়ছয় সম্ভব ছিল না। ওঁদের গ্রেফতারও করা হতে পারে বলে সিআইডি জানিয়েছে।
সিআইডি-সূত্রের খবর: ২০০৪-২০০৫ সালে নিগমের রফতানি বিভাগে ৪৫ জন অফিসার ছিলেন। তাঁদের মধ্য থেকে ওই ছয় অফিসারকে বেছে নিয়ে লোহাচুর রফতানির কাজ দেখাশোনার ভার দেওয়া হয়।
লোহাচুর-কেলেঙ্কারিতে জড়িত অভিযোগে সিআইডি ইতিমধ্যে কর্মরত আইএএস দেবাদিত্য চক্রবর্তী এবং অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আরএম জামিরকে গ্রেফতার করেছে। সিআইডি-কর্তারা এখন চাইছেন রফতানি বিভগের ওই ছয় অফিসারকে দেবাদিত্য-জামিরের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে। আদালতের নির্দেশে ওঁরা দু’জন ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকবেন। তার মধ্যে জেরা শেষ করতে চাইছেন সিআইডি-র গোয়েন্দারা।
ছয় অফিসার সম্পর্কে সিআইডি’র বক্তব্য কী? সিআইডি-র অভিযোগ: রফতানির ‘লেটার অফ ক্রেডিট’-এর আসল (অরিজিনাল) কপির বদলে প্রতিলিপি (ফোটোকপি) জমা দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বহু বার টাকা তুলেছেন এক অফিসার। এক জন নিয়ম ভেঙে একাই রফতানির ১৭২টি ফাইল বানিয়েছিলেন। এক জন অফিসার অবৈধ ভাবে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে (যার বেশ কয়েকটি ভুয়ো) রফতানির বরাত পাইয়ে দেন, পাশাপাশি ‘পোস্ট ডেটেড’ (তারিখ আগাম বসানো) চেকগুলোও নিজের কাছে রেখেছিলেন। এক জন রফতানির জন্য জাহাজ ভাড়া করার দায়িত্বে ছিলেন। কী দরে, কোন সংস্থার জাহাজ ভাড়া নেওয়া হবে, সংস্থাকে ভাড়ার টাকা আগাম দেওয়া হবে কি না, ইত্যাদি বিষয় তাঁর এক্তিয়ারে ছিল। সিআইডি-র অভিযোগ, এতেও অনিয়ম ধরা পড়েছে। বিভিন্ন ফাইলে ওই অফিসারের হাতে লেখা ‘নোট’ রয়েছে,গোয়েন্দাদের দাবি। আর কী কী অনিয়ম হয়েছে লোহাচুর রফতানিতে? সিআইডি-র এক অফিসার জানান, হলদিয়া, পারাদ্বীপ বন্দরে লোহাচুর মজুত এবং মজুত মাল জাহাজে তোলার সময়েও একাধিক নিয়ম ভাঙা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বন্দরে মজুত করা লোহাচুরের পরিমাণের সঙ্গে জাহাজে তোলা লোহাচুরের পরিমাণ মেলেনি। সিআইডি-সূত্রের খবর: এই দুর্নীতি-মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এমন অনেক অফিসারের বিরুদ্ধে বেআইনি কাজকর্মের প্রমাণ মিলেছে, যাঁরা চাকরি থেকে অবসর নিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা ঠিক করতে দরকারে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
|
চলতি আর্থিক বছরে এ রাজ্যে জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন শুরু না হলে বহু কর্মী কর্মচ্যুত হবেন। শনিবার বিধাননগরে সপ্তম কলকাতা সরস মেলায় এক অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে কাছে পেয়ে এমনই আশঙ্কার কথা জানালেন স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনার কর্মীরা। কর্মীদের বক্তব্য, ইতিমধ্যে ২৩টি রাজ্যে ওই প্রকল্প শুরু হয়ে গিয়েছে। এই রাজ্যে হয়নি। মাচের্র মধ্যে প্রকল্প শুরু না হলে কাজ হারাবেন তাঁরা। সরস মেলা শুরু হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি। পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, “এই মেলার উদ্বোধন করার ইচ্ছা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু উত্তরবঙ্গে সরকারি কর্মসূচি থাকায় তা হয়নি। তবে তিনি মেলায় আসবেন।” |