বেনজির চিঠি রাষ্ট্রপতিকে
খুরশিদ ‘অবাধ্য’, নালিশ কমিশনের
ত্তরপ্রদেশে নির্বাচন চলাকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদের সংখ্যালঘু সংরক্ষণ নিয়ে বিবৃতি বন্ধ করতে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের দ্বারস্থ হল নির্বাচন কমিশন। কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কমিশনের এমন কড়া পদক্ষেপ বেনজির ঘটনা। কমিশনের সব সদস্যের স্বাক্ষর করা একটি চিঠি এ দিন রাতে রাষ্টপতিকে পাঠানো হয়। তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ‘অবাধ্য ও আগ্রাসী’ বলে মন্তব্য করে বলা হয়েছে, তাঁর ‘অবৈধ’ আচরণে উত্তরপ্রদেশে অবাধ নির্বাচন করাটাই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করতে রাষ্ট্রপতি যেন ‘অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট’ হস্তক্ষেপ করেন। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাওয়ার পরেই রাষ্ট্রপতি তা বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। শনিবারের সন্ধ্যার এই নাটকীয় ঘটনায় উত্তরপ্রদেশে নির্বাচন চলাকালীন নতুন করে বিপাকে পড়ল কংগ্রেস।
কমিশনের এই চিঠির পরে উত্তরপ্রদেশে খুরশিদের প্রচার বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপি-র পক্ষে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে এই দাবি জানানো হয়েছে। বিজেপি নেতা বলবীর পুঞ্জ আরও এক ধাপ এগিয়ে অবিলম্বে খুরশিদকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “খোদ কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অমান্য করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। তার পরে তাঁর আর মন্ত্রী থাকার কোনও অধিকার নেই।” বিব্রত কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য ঘটনার গতি-প্রকৃতি খতিয়ে না দেখে এখনই মুখ খুলতে নারাজ। দলের মুখপাত্র রশিদ আলভি বলেন, “কমিশন রাষ্ট্রপতিকে কী চিঠি দিয়েছেন আমরা এখনও জানি না। সেই চিঠি দেখে তবে যা বলার বলা হবে।”
উত্তরপ্রদেশের ফারুকাবাদ কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন খুরশিদের স্ত্রী লুইস। ওই কেন্দ্রে প্রচারের গিয়ে খুরশিদ বলেছিলেন, পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ বাড়ানো হবে। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের আইন রয়েছে। খুরশিদ বলেছিলেন, ওই ২৭ শতাংশের মধ্যে ৯ শতাংশ সংখ্যালঘুদের জন্য বরাদ্দ করবে কেন্দ্র। বিজেপি কমিশনকে চিঠি দিয়ে নালিশ করে, নির্বাচন চলাকালীন এই ঘোষণা করে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। বিষয়টি খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশন খুরশিদকে সতর্ক করে দেয়। তাঁর ঘোষণাকে আচরণবিধি লঙ্ঘন বলেও মেনে নেয়। কিন্তু শুক্রবার খুরশিদ একটি জনসভায় কমিশনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানান। আইনমন্ত্রী বলেন, কমিশন তাঁকে ফাঁসি দিলেও পসনন্দা মুসলিমদের সংরক্ষণের দাবিতে তিনি গলা চড়িয়ে যাবেন।
এর পরে আজ আলোচনায় বসে নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বয়ং রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরেই রাষ্ট্রপতি ভবনে চিঠি পাঠানো হয়। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে, আইনমন্ত্রীর আচরণ ‘অন্যায় ও অবৈধ’। এর ফলে উত্তরপ্রদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন যাতে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করতে পারে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর তা নিশ্চিত করার কথা। কিন্তু তার বদলে তিনি নির্বাচন কমিশনকে খাটো করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। তাঁকে নিবৃত্ত করতে রাষ্ট্রপতি যেন ‘অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট’ হস্তক্ষেপ করেন।
নির্বাচন কমিশনের চিঠিকে রাষ্ট্রপতিও যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন, তা তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই স্পষ্ট। কালবিলম্ব না করে রাষ্ট্রপতি কমিশনের চিঠি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়ে দেন। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে তা সাংবাদিকদের জানিয়েও দেওয়া হয়। এখন প্রধানমন্ত্রী কী সিদ্ধান্ত নেন, সে দিকেই নজর সকলের।
উত্তরপ্রদেশে প্রচারে গিয়ে অন্য বিষয়েও বিতর্কে জড়িয়েছেন খুরশিদ। ২০০৮ সালে দিল্লির বাটলা হাউসে জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ ভুয়ো কি না, তা নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম সেই প্রশ্নে কান না দিয়ে তদন্তের দাবি উড়িয়ে দেন। সম্প্রতি খুরশিদ এক জনসভায় বলেন, “বাটলা সংঘর্ষের ছবি দেখে সনিয়া গাঁধীর চোখে জল এসে গিয়েছিল।” খুরশিদের এই মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়। শনিবার অবশ্য নিজের অবস্থান বদলে আইনমন্ত্রী বলেছেন, “আমার মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.