|
|
|
|
বহরমপুরের হোটেলে শিক্ষকের মৃতদেহ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
মুর্শিদাবাদে বহরমপুরের একটি হোটেলে মিলল বর্ধমানের এক স্কুলশিক্ষকের মৃতদেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর নাম নন্টু মাঝি (২৫)। বাড়ি বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার শ্রীগ্রামে। শুক্রবার সকালে হোটেলের কর্মী ঘরে চা দিতে গিয়ে কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ বহরমপুর থানায় খবর দেন। পুলিশ দরজা ভেঙে হোটেলের ঘরে ঢুকে দেখে, বাথরুমের শাওয়ার থেকে গলায় বেল্টের ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে ওই শিক্ষকের মৃতদেহ।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের জেরে মানসিক অবসাদ থেকেই ওই শিক্ষক আত্মঘাতী হন বলে প্রাথমিক তদন্তে আমাদের অনুমান। হোটেলের ঘর থেকে ওই শিক্ষকের ডায়েরি, চিঠি ও মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে নন্টু মাঝি বর্ধমান থানার যদুপল্লি বড়শূল জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। স্কুলের কাছাকাছি এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে তিনি থাকতেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদে বেড়াতে গিয়ে তিনি বহরমপুর গ্রান্ট হল লাগোয়া একটি হোটেলে সবচেয়ে দামি ঘর ভাড়া নেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানান, প্রতি দিন সকালে হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতেন তিনি। সারা দিন ঘুরে সন্ধ্যায় হোটেলে ফিরতেন। ঘটনার দিন সকালেও তিনি ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। পরে হোটেলে ফিরে সাড়ে ৮টা নাগাদ রাতের খাবারও ঘরে চেয়ে নেন। যদিও ওই খাবার তিনি খাননি। টেবিলের উপরে ঢাকা দেওয়া খাবার পড়ে ছিল।
বহরমপুর থানার আইসি মেহায়মেনুল হক বলেন, “ওই শিক্ষককে লেখা এক মহিলার চিঠি ও ডায়েরি হোটেলের ঘর থেকে পাওয়া গিয়েছে। ওই চিঠির বয়ান থেকে মনে হয়েছে, ওই মহিলার সঙ্গে নন্টুবাবুর সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। ওই সম্পর্কের জেরে মানসিক অবসাদ থেকেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।” পুলিশের কাছে খবর পেয়ে দুপুরেই কেতুগ্রাম থেকে শিক্ষকের পরিবারের লোকজন বহরমপুরে গিয়ে পৌঁছন। তাঁর মামা শুকদেব মাঝি বলেন, “কৃষিজীবী ওই পরিবারে চার ভাইবোনের মধ্যে নন্টু বড়। ছোট দুই ভাইবোন স্কুলে পড়াশোনা করে। এক বোন বিবাহিত। নন্টু নিজের চেষ্টায় পড়াশোনা করে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে ঢোকার পরে পরিবারটি সুখের মুখ দেখেছিল।”
মৃতের মা শঙ্করী মাঝি অবশ্য বলেন, “সরস্বতী পুজোর ছুটিতে নন্টু বাড়িতে গিয়েছিল। বিয়ের সম্বন্ধ করার কথা বললেই রেগে যেত। এখনই বিয়েতে তার সম্মতি ছিল না। কিন্তু কোনও মেয়ের সঙ্গে ওর সম্পর্ক রয়েছে কি না তা আমরা জানতে পারিনি। ছেলে কাউকে ভালবাসে জানলে তার সঙ্গেই বিয়ে দিতাম। এত বড় সিদ্ধান্ত কেন নিল, জানতেই পারলাম না।” |
|
|
|
|
|