|
|
|
|
থমকে রয়েছে ৩২টি জল প্রকল্প |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
জমি বিবাদের জেরে থমকে যেতে বসেছে মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটি ব্লকে আর্সেনিক দূষণ মুক্ত পানীয় জলের ৩২টি প্রকল্প।
ওই ৩২টি প্রকল্প তৈরি হচ্ছে লালগোলা, ভগবানগেোলা ১ নম্বর এবং ২ নম্বর মিলে মোট তিনটি ব্লকের ৫৫ জনের জমির উপর। বছর তিনেক ধরে ওই প্রকল্প গুলি তৈরির কাজ চললেও জমি কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকার অধিগ্রহণ করেনি। এমনকি ওই জমি সরকার কিনেও নেয়নি। ওই অভিযোগ তুলে জমির মালিকরা শুক্রবার বহরমপুরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জেলা কার্যলয়ের প্রাঙ্গণে ধর্নায় বসেন। এক একটি জল প্রকল্প থেকে অন্তত ১০ হাজার মানুষের কাছে আর্সেনিক দূষণ মুক্ত পানীয় জল সরবরাহ করার কথা। ফলে জমি মালিকরা বেঁকে বসায় ওই তিনটি ব্লকের মোট প্রায় সোয়া তিন লক্ষ মানুষের আর্সেনিক দূষণ মুক্ত পানীয় জল পাওয়ার সুযোগ আপাতত থমকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জমির মালিকরা দাবি আদায়ের জন্য একটি সংগঠন গড়েছেন। ‘ওয়াটার ট্যাঙ্ক ল্যান্ড লুজার ইউনিয়ন’ নামের ওই সংগঠনের সহ-সভাপতি তৌফিক মহম্মদ ইফতিকার বলেন, “বাজার দরের থেকে শতকরা ৩০ ভাগ বেশি দাম দেওয়া হবে ও ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক পরিবারের এক জনকে চাকরি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই সব জমিতে আর্সেনিক দূষণ মুক্ত পানীয় জলের প্রকল্প তৈরির কাজ শুরু করা হয় বছর তিনেক আগে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমাদেরকে জমির দাম দেওয়া হয়নি। চাকরিও দেওয়া হয়নি। এমনকি জমি অধিগ্রহণও করা হয়নি। ফলে নির্মীয়মান ওই জল প্রকল্প গুলির কাজ আর করতে দেওয়া হবে না। তিন বছর আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হলে তবেই ওই সব প্রকল্পের কাজ করতে দেওয়া হবে। নচেৎ নয়।”
মুর্শিদাবাদ জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার ঋতম ভট্টাচার্য বলেন, “কাজ শুরু করতে না পারলে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা ফেরত চলে যেত। এ কারণে ওই সব জমিতে জল প্রকল্প তৈরি করায় সম্মতি রয়েছে জানিয়ে মালিকদের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়। তারপর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এখন ওই সব জমি হয় কিনে নেওয়া হবে, নয়তো অধিগ্রহণ করা হবে। সেই সব সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বেশ কিছু আইনি পদক্ষেপ রয়েছে। তার জন্য সময় লাগছে।”
একটি জলাধার নির্মান ও ভূগর্ভ থেকে জল তুলে ওই জলাধারে সঞ্চিত করার জন্য দু’টি থেকে তিনটি গভীর নলকূপ বসানোর জন্য প্রয়োজন ৩৩ শতক থেকে ৪১ শতক জমি। জলাধার ও নলকূপের মধ্যে অন্তত ৫০০ মিটার দূরত্ব থাকতে হবে। এ কারণে একটি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় জমির মালিক একাধিক জন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কত জনকে চাকরি দেওয়া হবে?
ঋতমবাবু বলেন, “প্রকল্প তৈরি হওয়ার পর তা পরিচালনার ভার দেওয়া হবে ঠিকাদার সংস্থাকে। ওই ঠিকাদার সংস্থার অধীন একটি প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত চাষি পরিবারের গুলির মধ্যে থেকে এক জনকেই চাকরি দেওয়া হবে। কাকে সেই চাকরি দেওয়া হবে তা একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলি নিজেদের মধ্যে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবে। সেই মতো একটি প্রকল্পে ঠিকাদার সংস্থার অধীন এক জনকেই চুক্তি ভিত্তিক চাকরি দেওয়া হবে। তবে তা কার্যকর হবে প্রকল্পটি তৈরি হওয়ার পর।” |
|
|
|
|
|