বৈঠক বয়কট, নন্দীগ্রামে বিডিও ঘেরাও তৃণমূলের
গ্রামোন্নয়নের কাজে গতি আনতে ব্লক স্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। জেলা-সফরে গিয়ে নিয়ম করে বিডিওদের সঙ্গে বৈঠকও করছেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ তাঁর নির্দেশিত পথে ‘সক্রিয়’ হতে গিয়েই শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের ঘেরাও-বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিডিও! বিডিও-র ডাকা বৈঠক ‘বয়কট’-ও করলেন তাঁরা। ‘পরিবর্তন’-এর নন্দীগ্রামেই ঘটল এ ঘটনা।
বাম-আমলে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদের সঙ্গে বার বারই ঠোকাঠুকি লেগেছে প্রশাসনের। এই দুই জেলা পরিষদেই ক্ষমতাসীন তৃণমূল। উন্নয়নে ‘ব্যর্থতা’র জন্য বাম-নেতৃত্ব সে সময়ে জেলা পরিষদ দু’টির পরিচালকদের দায়ী করতেন। জেলা পরিষদের তৃণমূল নেতৃত্ব প্রশাসনের বিরুদ্ধে পাল্টা ‘অসহযোগিতা’র অভিযোগ তুলতেন। এখন সরকারেও তৃণমূল। তার পরেও নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনের সঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতৃত্বের বিরোধ অব্যাহত।
রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা-সহ বেশ কিছু প্রকল্প বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার বিডিও (নন্দীগ্রাম ১ ব্লক) বৈঠক ডেকেছিলেন। ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত ১০টি পঞ্চায়েতেরই প্রধান, নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষেরা ‘বয়কট’ করেন সেই বৈঠক। বুধবার ব্লক অফিসে গিয়ে বেলা ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত বিডিওকে ঘেরাও করে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন তাঁরা। বিডিও-র বিরুদ্ধে সেই ‘অসহযোগিতা’র অভিযোগই তুলেছেন তৃণমূল জনপ্রতিনিধিরা। ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও হরিপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান মেঘনাদ পালের অভিযোগ “বর্তমান বিডিও বিভিন্ন কাজে পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন না। তাই দলীয় ভাবে আলোচনা করেই বিডিও’র বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত হয়।”
এই ঘটনায় কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের হস্তক্ষেপেই এ দিন বিক্ষোভ-অবস্থানে যতি পড়ে। তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেনের বক্তব্য, “স্থানীয় প্রতিনিধিদের এই কর্মসূচি আমরা সমর্থন করি না। বিডিও’র সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির জেরেই এই ঘটনা। সমস্যা মেটাতে বিডিও এবং পঞ্চায়েতের চার প্রতিনিধিকে নিয়ে হলদিয়া এসডিও অফিসে শুক্রবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।” বিডিও আরশাদ জামাল হাসানের দাবি, “অসহযোগিতার অভিযোগ ভিত্তিহীন। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনেই কাজ করছে ব্লক প্রশাসন।”
এই নির্দিষ্ট ‘পদ্ধতি’ ও ‘নিয়ম’ অনুযায়ী কাজ করতে গিয়েই বিডিও শাসক-শিবিরের কোপে পড়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। সম্প্রতি ব্লকের কালীচরণপুর পঞ্চায়েতের একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে সহায়িকা পদে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা এ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশে বিডিও বিভিন্ন পক্ষকে নিয়ে শুনানি করেন। তার পরেই ওই সহায়িকাকে অপসারণ করা হয়। ওই ঘটনার পরেই বিডিও-র সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরোধ চরমে ওঠে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তৃণমূল নেতা মেঘনাদ পালের দাবি, ওই সহায়িকাকে ‘অনৈতিক ভাবে’ অপসারণ করা হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.