সম্পাদক সমীপেষু...
শৈশব কত দিন
শাশ্বতী ঘোষের ‘সন্তান পালনের ছুটি শুধু মায়েদের জন্য কেন’ (৩১-১) বিষয়ে কয়েকটা অন্য প্রসঙ্গ তোলা যায় যা নিবন্ধটিতে তেমন ভাবে আলোচিত হয়নি। প্রথমত, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা পনেরো দিনের পিতৃত্বকালীন ছুটি পান। এই রাজ্যের ‘সরকারি’ বাবারা সেই অধিকার থেকে এখনও বঞ্চিত। শ্রীমতী ঘোষের যুক্তির সঙ্গে সহমত হয়েই বলা দরকার এই ছুটিটার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। মাতৃত্বকালীন ছুটির সঙ্গে সদ্যোজাত সন্তানের ও মায়ের স্বাস্থ্য এবং পরিচর্যার বিষয়টি যুক্ত। সেখানে বাবারও একটা ভূমিকা থাকে। বিশেষ করে আজকালকার নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে সেই ভূমিকাটা অনেকটাই। গুরুত্বের বিচারে দু’বছরের ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’-এর থেকে এই ছুটির প্রয়োজনটা বেশি। অথচ সরকার তা বিবেচনাতেও আনল না।
পাশাপাশি এই ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’-এর বিষয়টা যাদের জন্য, তাদের দিক দিয়েও বিচার-বিবেচনা করে দেখা দরকার। ডাক্তারি নিয়মে বারো-তেরো বছর পেরিয়ে গেলে আর কাউকে শিশু বলা যায় না। তখন তারা সবাই কিশোর-কিশোরী। এবং মোটামুটি ভাবে স্বাবলম্বী। ক্লাস এইট নাইনের ছাত্র বা ছাত্রী। এই বয়সের ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা ও প্রতিপালনের জন্য আলাদা করে মায়েদের আর কী-ই বা ভূমিকা থাকতে পারে?
ইচ্ছে ছবির একটি দৃশ্য।
শিশুরা যত তাড়াতাড়ি স্বাবলম্বী ও পরিণত হয়ে ওঠে ততই সেটা তার অভিভাবকের পক্ষে সুবিধাজনক। তা ছাড়া এই প্রক্রিয়াটা সহজ ভাবে ঘটলে সেই ছেলেটি বা মেয়েটির ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে স্বাভাবিক ছন্দে। তাদের প্রতিপালনের নামে মায়েদের বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে এটা কি সরকারি ভাবে নাবালকত্বে প্রলম্বিত করার চেষ্টা নয়? যে চেষ্টা শেষ পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীদের ব্যক্তিত্বের বিকাশকেই বিড়ম্বিত করবে!
এই কথাটা ভুললে চলবে না, এখনকার নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে একটি দুটি সন্তান থাকায় বাবা-মা (মূলত মায়েরা) যথেষ্ট ওভার প্রোটেক্টিভ আর তারই বাড়াবাড়িতে বেড়ে-ওঠা ছেলেমেয়ের ব্যক্তিগত পরিসরে অভিভাবকরা ঢুকে পড়ছেন এক্তিয়ার বহির্ভূত ভাবেই। এতে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পারিবারিক জটিলতা ও বিশৃঙ্খলা। সাম্প্রতিক বাংলা ছবি ‘ইচ্ছে’-তে আমরা তার একটা আদল দেখেছি। আঠারো বছর পর্যন্ত সন্তানদের প্রতিপালন ও পরিচর্যার জন্য সরকারি ছুটি এই অনভিপ্রেত অভিভাবকত্বের পরিসরকে স্বীকৃতি ও উৎসাহ দেবে না তো? হয়তো দেখা যাবে এই ছুটিটার অবসরে মায়েরা ছেলেমেয়েদের অনুপস্থিতিতে তাদের পড়ার টেবিল হাতড়াচ্ছেন, তাদের মোবাইলের কল লিস্ট দেখছেন!
সন্তানের প্রতিপালনে বাবা-মায়ের যৌথ ভূমিকাকে যেমন স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন, তেমনই জরুরি অভিভাবকত্বের সীমানা নির্ধারণ করে নেওয়া ও বেড়ে ওঠা কৈশোরের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়া। সরকারি ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’ কেবলমাত্র শৈশবকে প্রলম্বিত করে কিশোর মননের বিকাশকে অবরুদ্ধ করবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যায়।
নেতাজির জন্মতারিখ
২৩ জানুয়ারি নেতাজির সঠিক জন্মতারিখের দু’দিন আগে মহাকরণে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা করা হচ্ছে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বা অন্য বাম নেতারা মন্তব্য করছেন নির্দিষ্ট তারিখের আগে কারও জন্মোৎসব পালিত হচ্ছে, এমন অদ্ভুত নজির নাকি কেউ কখনও দেখেনি।
এঁদের অবগতির জন্য জানাই রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনেই তাঁর জন্মদিন ২৫ বৈশাখের বদলে ১ বৈশাখ প্রতিপালিত হয়, যেহেতু ২৫ বৈশাখ তারিখটি বিশ্বভারতীর গ্রীষ্মাবকাশের মধ্যে পড়ে যায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.