কী ভাবে মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে সরানো হল, তা নিয়ে বিতর্ক চলছেই। মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদের অভিযোগ, তাঁকে ‘বন্দুক দেখিয়ে’ পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আর এই অভিযোগ অস্বীকার করলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদ হাসান। এই বিতর্কের মধ্যেই এ দিন প্রেসিডেন্ট হাসানের ‘পাশে দাঁড়ানোর’ কথা বলে একটি চিঠি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
দেশব্যাপী ‘বিক্ষোভের মুখে’ কালই পদত্যাগ করেন মলদ্বীপের ‘প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট’ মহম্মদ নাসিদ। ১৯৯০ সালে মলদ্বীপের রাজনীতিতে তাঁর আত্মপ্রকাশ। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো বিরোধী রাজনীতিতেই নাসিদের হাতেখড়ি। দু’দশকেরও বেশি সময়ে বিরোধী দলনেতার ভূমিকা পালন করার পর স্বৈরাচারী প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল গায়ুমকে সরিয়ে ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসেন তিনি। তবে মমতার মতো তাঁর সবর্ব্যাপী জনপ্রিয়তা ছিল না। দীর্ঘদিন বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে কিছুটা একরোখা এবং একগুঁয়ে চরিত্রের হয়ে গিয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসার পরও তার কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। একরোখা, একগুঁয়েমি ছেড়ে প্রয়োজনে সমঝোতার রাস্তায় হাঁটলে হয়তো তাঁকে এ ভাবে ক্ষমতাচ্যুত হতে হতো না বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মঙ্গলবার অকস্মাৎ পদত্যাগ করার কারণ জানিয়ে এ দিন তিনি বলেন, “উর্দিধারীরা ঘিরে ধরে বলেছিল, পদত্যাগ না করলে তারা গুলি চালাতে পিছপা হবে না। এই সেনা অভ্যুত্থানের পিছনে কে রয়েছেন, তা প্রধান বিচারপতিকে দেখতে অনুরোধ করছি।” একই সঙ্গে নাসিদের অভিযোগ, এ সব কিছুই বর্তমান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদ হাসান জানতেন।
তবে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সেনা অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতা দখলের ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট পদে বসার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। প্রেসিডেন্ট হাসানের সাফ কথা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নানা দুর্নীতির অভিযোগে জনরোষ দানা বাঁধছিল। সেই চাপেই সরতে হয়েছে মহম্মদ নাসিদকে। নাসিদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর প্রতিবাদে এ দিন মলদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমর্থকেরা মিছিল করেন। বিভিন্ন জায়গায় নাসিদের সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
এ দিনই নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদ হাসানকে স্বাগত জানিয়ে চিঠি দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। চিঠিতে মনমোহন লিখেছেন, ‘‘ঘনিষ্ঠ পড়শি রাষ্ট্র হিসেবে অতীতের মতোই ভারত সব সময় সে দেশের পাশে থাকবে।” |