বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সভাতেই নিজেদের মধ্যে মারপিটে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দু’টি গোষ্ঠী। চোট পেলেন তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পর্যবেক্ষক অম্লান মণ্ডল-সহ চার জন।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তার জন্য বুধবার বেলা ১২টা নাগাদ ছাত্র সংসদ অফিসে বসেছিল প্রস্তুতি সভা। নির্বাচনে সংগঠনের কাজ দেখভালের জন্য একটি কমিটি গড়ার কথা ছিল। টিএমসিপি সূত্রের খবর, সভা শুরু হতেই সুকান্ত কোঙার ও সন্তু ক্ষেত্রপাল নামে দুই ছাত্রনেতার অনুগামীদের মধ্যে প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা, পরে মারপিট বেধে যায়। তা থামাতে গিয়ে হাত কাটে কলকাতা থেকে আসা পর্যবেক্ষক অম্লানবাবুর। তবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের সকলকেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অম্লানবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।
এম কম পার্ট ২-এর ছাত্র সুকান্ত কোঙারের অভিযোগ, “বহিরাগত ছাত্রদের নিয়ে নির্বাচন পরিচালনার কমিটি তৈরি করতে চাইছেন সন্তু। এটা আমরা মেনে নেব না। কিন্তু এ কথা বলতেই তিনি টেবিলে উঠে আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আমার মাথা ফেটে গিয়েছে। তবে যে যাই করুন, কে প্রার্থী হবে, তা আমিই ঠিক করব। সন্তুর মাতব্বরি চলবে না।” রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সন্তু ক্ষেত্রপালের পাল্টা অভিযোগ, “জেলা নেতৃত্বের মদতে সুকান্ত বরাবরই উদ্ধত আচরণ করছেন। তাঁর অনুগামীরা টিএমসিপি-র সাধারণ সদস্যদের সঙ্গেও দুর্বব্যবহার করছে। বেশ কিছু বহিরাগত ছাত্র, যাঁরা গত বছেেও এসএফআই করেছে, তাদের নিয়ে ওঁরা গোলমাল পাকাচ্ছেন। সুকান্তই প্রথমে আমায় আক্রমণ করেন। আমার হাত কেটে গিয়েছে।”
এই গোলমাল দেখে হতাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি-র অন্যতম ছাত্র নেতা সন্তু ঘোষ। কোনও মতেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “যা চলছে, তাতে কোনও ভদ্রলোকের পক্ষে এদের হয়ে লড়া সম্ভব নয়।” টিএমসিপি-র বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সহ-সভাপতি নির্ভীক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “এ ভাবে নিজেদের মধ্যে মারপিট হলে আর সংগঠন রাখা যাবে না। ছাত্রছাত্রীরা কেন আমাদের ভোট দেবেন?” এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন টিএমসিপি-র জেলা পর্যায়ের দুই নেতা অশোক রুদ্র ও বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা অবশ্য এই সংঘর্ষকে আমলই দিতে চাননি। দু’জনেরই দাবি, “তেমন কিছুই ঘটেনি। গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনে একটু ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়েই তাকে। তবে সমস্ত গোলমাল সামলে নিয়েই সভা শেষ হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য সাত জনের কমিটিও তৈরি হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বহিরাগত কিছু লোক ঢুকে নিয়মিত গোলমাল পাকাচ্ছে বলে কয়েক জন ছাত্র আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি তাঁদের বলেছি, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।” |