উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থাকে বাঁচাতে কী করণীয় সে ব্যাপারে সব কটি কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধিদের পরামর্শ চাইলেন সংস্থার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শনিবার কোচবিহারে সংস্থার সদর দফতরে ডান-বাম অনুমোদিত সব ক’টি স্বীকৃত কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধি ও ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি। আগামী কাল, সোমবারের মধ্যে ওই পরামর্শ লিখিত ভাবে দেওয়ার অনুরোধ তিনি করেছেন। তাঁর কথায়, “কোন পরিস্থিতিতে ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মী সঙ্কোচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা সকলকে জানানো হয়েছে।”
কর্মী সংগঠনগুলি সংস্থাকে বাঁচানোর কাজে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। বেশির ভাগ ডিপোয় ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মী নিয়োগ নিয়ে আন্দোলনও স্থগিত হয়েছে। তবে শনিবারও বালুরঘাট ডিপোয় বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। শুক্রবার বালুরঘাট ডিপোয় তালা ঝোলানোয় কংগ্রেস কর্মীদের বিরুদ্ধে বালুরঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় অবশ্য বলেছেন, “রাতারাতি কাজ হারানো অসহায় গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।” |
শনিবার দুর্গাপুরে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার দফতরে যান পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। সেখানে কর্মীদের তিনি বলেন, “কাজের সময় ঝান্ডা ফেলে রেখে সকলে একজোট হয়ে কাজ করুন। ছয় মাস সরকার ভর্তুকি দেবে। সেই সময়সীমাকে কাজে লাগান।”
এনবিএসটিসি সূত্রে জানানো হয়েছে, ফি মাসে গড়ে যাত্রী ভাড়া বাবদ আয় হচ্ছে ৫ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে তেল বাবদ খরচ হয় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। বেতন, পেনশন-সহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মাসে দরকার হচ্ছে ১৩ কোটি টাকার বেশি।
এই অবস্থায় ৬ মাস পরে রাজ্য সরকার ভর্তুকি দেবে না জানিয়েছে। তাই খরচ কমাতে ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মী সঙ্কোচনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে রবীন্দ্রনাথবাবু জানান। পাশাপাশি, আরও বেশি বাস চালানো, টিকিট বিক্রি বাবদ আয় বৃদ্ধি, সংস্থার অব্যবহৃত জমি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার, বিজ্ঞাপন থেকে আয় বাড়ানোর মতো বেশ কিছু সিদ্ধান্তের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে সংস্থায় যে ১০০০ শূন্য পদ রয়েছে তা পূরণের কথাও জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।
এই ব্যাপারে সিটুর এনবিএসটিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক জগৎজ্যোতি দত্ত বলেন, “ঠিকাদার নিযুক্তদের সংখ্যা না-কমিয়ে তাঁদের পরিকল্পিত ভাবে কাজে লাগানোর আর্জি জানিয়েছি।” আইএনটিইউসির সত্যানন্দ দত্ত জানান, মানবিক কারণে তাঁরাও ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মীদের সংখ্যা কমানোয় আপত্তি জানিয়েছেন।
এ দিন ভোরে বালুরঘাটে বহরমপুর ডিপোর এক বাসের চালক হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তাঁর সহকর্মীদের কয়েকজনের অভিযোগ, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি দু’মাসের বেতন না-পাওয়ায় রবিবাবু দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। |