মাজদিয়ার সুধীরঞ্জন লাহিড়ি কলেজে অধ্যক্ষ-নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত এসএফআই সমর্থক তিন ছাত্রকে ফের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখারই নির্দেশ দিলেন বিচারক। প্রায় এক মাস ধরে জেল বন্দি তিন ছাত্রকে শনিবার কৃষ্ণনগরে নদিয়ার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অর্জুন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে হাজির করানো হয়। বিচারক এ দিন তাঁদের জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধিরই নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিন ওই তিন ছাত্রের আইনজীবী চাপড়ার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সামসুল ইসলাম মোল্লা অবশ্য জামিনের আবেদনও করেননি। ওই তিন ছাত্রের পরিজন ও এসএফআই সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই হাইকোর্টে ওই আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা। সে কারণেই নিম্ন আদালতে শনিবার আর জামিনের আর্জি জানানো হয়নি। তবে, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া, “মাজদিয়ায় জেল আর রায়গঞ্জে বেল (জামিন)। এ ঘটনাই প্রমাণ করে সরকার প্রতিহিংসার মনোভাব নিয়ে চলছে। আমরা ধৈর্য ধরে রয়েছি। কিন্তু এ ভাবে চলতে থাকলে এক দিন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাবে।”
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবও বলেন, “সরকার যে গণতন্ত্রিক ভাবে চলছে না তা এ ঘটনায় স্পষ্ট। কলকাতার নেতাজিনগর কলেজে যারা মারধর করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন পাটুলি থানার ওসি। কিন্তু তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হল। আর মাজদিয়ার ঘটনায় ছাত্রদের জামিনের আবেদন আদালতে বার বার নাকচ হচ্ছে। কোনও নিয়মই এই সরকার মানছে না। কী ভাবে সরকার বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখা উচিত।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মাজদিয়ার তিন ছাত্রের জামিন না পাওয়ার ব্যাপারে বলেন, “আইন আইনের পথেই চলছে। মামলার গুরুত্ব অনুযায়ী বিচারক ব্যবস্থা নিচ্ছেন।”
রায়গঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ-নিগ্রহের ঘটনায় ‘শাসক’ তৃণমূলের নেতা ও তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা জড়িত থাকায় ‘জামিনযোগ্য’ ধারায় মামলা করা হয়েছিল, অথচ তাঁদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে অপেক্ষাকৃত ‘কঠোর’ ধারায় (সরকারি কর্মচারীকে কর্তব্যপালনে বাধাদানের মতো ‘জামিন-অযোগ্য’ অভিযোগে) মামলা রুজু করা হয়েছে বলে ফের অভিযোগ করেছেন এসএফআই নেতৃত্ব। প্রশাসনের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে তারা। মাজদিয়ার ঘটনার পরে মদনপুরের একটি স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষককে চড় মারার অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ এখনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার পর্যন্ত করেনি বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন বাম ছাত্র সংগঠনটির জেলা সম্পাদক কৌশিক দত্ত। |