শুভেন্দুর মন্তব্যে জল্পনা
হলদিয়া বন্দরের সঙ্কটে জাহাজ-মন্ত্রককে তোপ
লদিয়া বন্দরের সঙ্কটের জন্য সরাসরি জাহাজ মন্ত্রক এবং কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ তথা হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার হলদিয়া ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে শুভেন্দু বলেন, “পলি তোলার জন্য প্রতি বছর ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিটি) মাধ্যমে ড্রেজিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়াকে (ডিসিআই) দেয় হলদিয়া বন্দর। পলি তোলার কাজ সে ভাবে করছে না ডিসিআই। নাব্যতা-সঙ্কট ক্রমশ বাড়ছে হলদিয়ায়। বন্দরের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে। জাহাজ মন্ত্রক ও সিপিটি উদাসীন।”
শুভেন্দুর সাংবাদিক সম্মেলনের ২৪ ঘণ্টা আগে, শুক্রবারই হলদিয়া বন্দর পরিদর্শনে এবং রিভিউ মিটিংয়ে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। পরিদর্শন ও বৈঠকের পরে মুকুলবাবু বন্দরের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশার কথাই শুনিয়েছিলেন। নাব্যতার সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগোনো গিয়েছে দাবি করে মুকুলবাবু বলেছিলেন, “আগের চেয়ে ইডেন চ্যানেলে জাহাজ চলাচল বেড়েছে। ড্রেজিংয়ের জন্য জেলিংহ্যাম চ্যানেলকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
হলদিয়া ভবনে শনিবার শুভেন্দু। ছবি: আরিফ ইকবাল খান
ট্রান্স লোডিং (মোহনা থেকে দূরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে মাল নামানো ও উল্টোটা) চালু করার ক্ষেত্রে তৎপরতা চলছে বলেও দাবি করেন জাহাজ প্রতিমন্ত্রী। তার পরের দিন মুকুলবাবুর দলের সাংসদ জাহাজ মন্ত্রকের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় বন্দর কর্মচারীদের মধ্যে ‘জল্পনা’ শুরু হয়েছে। মুকুলবাবুর কথার উল্টো সুরে শুভেন্দুর অভিযোগ, “শুধু এ রাজ্য নয়, প্রতিবেশী কয়েকটি রাজ্য ও কয়েকটি দেশ হলদিয়া বন্দরের মারফৎ উপকৃত হয়। অথচ সেই বন্দরের উন্নয়নে উৎসাহী নয় জাহাজ মন্ত্রক। ট্রান্স লোডিং চালুর কথা থাকলেও তা হয়নি। ট্রান্স লোডিংয়ের বিরুদ্ধে ওড়িশা সরকার সেখানকার হাইকোর্টে মামলা করেছে। এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা উচিত ছিল সিপিটি-র। তা করা হয়নি।”
শুভেন্দু সিপিটি-র বাইরে স্বতন্ত্র হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ (এইচপিটি বা হলদিয়া পোর্ট ট্রাস্ট) গঠনের দাবি তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “কলকাতা বন্দর অলাভজনক। হলদিয়া বন্দর কিন্তু এখনও লাভজনক। অথচ সিপিটি-র অছি পরিষদে হলদিয়ার প্রতিনিধিত্ব পর্যন্ত নেই। হলদিয়া বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান কলকাতাতেই থাকেন, হলদিয়ায় নজরও দেন না।” এই অবস্থায় কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতা থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র এইচপিটি গঠনের পক্ষে সওয়াল করেন শুভেন্দু। ডিসিআই-এর পরিবর্তে বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে হলদিয়ার পলি তোলার কাজ করানোরও দাবি করেছেন তিনি।
সিপিটি-র একাংশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, “হলদিয়া বন্দরের মাধ্যমে লৌহ আকরিক রফতানি ক্রমশ কমছে। এক সময়ে সিপিএমের লক্ষ্মণ শেঠের বাণিজ্যিক স্বার্থ-সুরক্ষায় সিপিটি-র আধিকারিকেরা সক্রিয় ছিলেন। এখনও কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থার সঙ্গে অশুভ আঁতাঁতেই একাংশ আধিকারিক হলদিয়া বন্দরের ব্যবসার ক্ষতি করতে চাইছেন।” ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু

মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি এক বিচারাধীনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলের মধ্যে চিকিৎসা-পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। শনিবার সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সংশোধনাগার থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার পথে মারা যান কালাচাঁদ হাঁসদা (৩০) নামে এক বন্দি। তাঁর বাড়ি খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকার কাটরাঙ্গায়। বধূহত্যার মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত বছর ৯ মার্চ থেকে তিনি মেদিনীপুর সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। সংশোধনাগার সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ হঠাৎই ওই বন্দি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পেটে ব্যাথা শুরু হয়। প্রথমে তাঁকে জেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরের নির্দেশ হয়। পথেই মারা যান এই বন্দি। শোরগোল পড়ে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার চত্বরে। বহু বন্দির পরিজন জেলে চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা না-থাকার অভিযোগ করেন। বন্দি-মৃত্যু প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি জেল সুপার প্রহ্লাদ সিংহ কুমার। তবে, সংশোধনাগারেরই এক আধিকারিক জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.