গোলকিপার বদলাতে চান না ইস্টবেঙ্গল কোচেরা
বড় ম্যাচে গুরপ্রীত কিন্তু ঝুঁকি: ভাস্কর
ই লিগে কলকাতা বনাম গোয়ার ধুন্ধুমার যুদ্ধে দাঁড়িপাল্লার কাঁটা আবার ঝুঁকে পড়ল গোয়ার দিকে। বুধবার মুম্বই এফ সি-কে ২-০ গোলে হারিয়ে শুধু পয়েন্টের ব্যবধান নয়, আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়েও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানকে অনেকটা পিছনে ফেলে দিল ডেম্পো।
আট ম্যাচ এখনও বাকি। ১৮ ম্যাচে ডেম্পো যেখানে ৪০ পয়েন্টে পৌঁছে গেল, ইস্টবেঙ্গল সেখানে ৩৪, মোহনবাগান ৩৩, প্রয়াগ ইউনাইটেড ৩২। লিগ খেতাবের দৌড়ে থাকা গোয়ার আরও দু’টি দল চার্চিল ও সালগাওকর। দু’টি ম্যাচে কম খেলে চার্চিল ৩০, একটি ম্যাচ কম খেলে সালগাওকর ২৯।
চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে ছিল পুণে এফ সি-ও। অভ্র মণ্ডল গোলের নীচে দাঁড়ানোর সময় শেষ বারোটি ম্যাচে তারা হারেনি। এ দিন অভ্রও নেই, পুণে এফ সিও ২-০ এগিয়ে ২-৪ হেরে গেল স্পোর্টিংয়ের কাছে। ১৮ ম্যাচে ২৮ পয়েন্টে তারা পিছিয়েই গেল দৌড়ে। লাজং ১-০ হ্যালকে হারাল।
ডেম্পো ৪০-এ পৌছে যাওয়ায় শনিবারের বড় ম্যাচকেই পাখির কোচ করেছেন সুব্রত ভট্টাচার্য এবং ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। আই লিগের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে এই ম্যাচ জিততেই হবে। প্রয়াগ ইউনাইটেডের কাছে নাটকীয় হারের প্রভাব শনিবারের বড় ম্যাচে পড়বে না বলেই মনে করছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
হারের পরদিন মর্গ্যান প্র্যাক্টিস রাখেননি সিনিয়রদের। কিন্তু তিনি নিজে চলে আসেন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে। কয়েক জন চোট পাওয়া ফুটবলার প্র্যাক্টিসে ছিলেন। মর্গ্যান তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন বেশ কিছু সময়। তার পরে বেরিয়ে যান। তাঁর কথায়, “যা ঘটে গিয়েছে তা অতীত। সেটাকে ধরে নিয়ে বসে থাকলে আর এগোন যাবে না। একই ভুল তো আর প্রত্যেক ম্যাচে হয় না? আমরা শনিবারের ম্যাচের জন্য তৈরি।”
আই লিগে প্রথম ছয়
  খেলা জয় ড্র হার গোল পয়েন্ট
ডেম্পো ১৮ ১৩ ৪১-১৫ ৪০
ইস্টবেঙ্গল ১৮ ১০ ৩২-১৫ ৩৪
মোহনবাগান ১৮ ১০ ৩৫-২৪ ৩৩
প্রয়াগ ইউনাইটেড ১৮ ২৮-১৭ ৩২
চার্চিল ব্রাদার্স ১৬ ২৭-১৬ ৩০
সালগাওকর ১৭ ২৬-১৪ ২৯
গুরপ্রীত সিংহকে নিয়ে নিজের অবস্থানেও অনড় মর্গ্যান। বুধবার তিনি বলছিলেন, “প্রয়াগ ম্যাচে গুরপ্রীতের কোনও দোষ ছিল না। আমরা একটা পরিকল্পনা করেছিলাম। ও শুধু সেটা মেনে কাজ করেছে।” তিনি বা অতনু ভট্টাচার্য দু’জনেই বড় ম্যাচে গুরপ্রীতকে খেলাতে চান। অতনু বলেন, “আমি গুরপ্রীতের সঙ্গে ইচ্ছে করে কথা বলিনি। টেনশন-ফ্রি থাকুক। যা কথা বলার কাল কথা হবে।” বড় ম্যাচের কথা ভেবে রাজু গায়কোয়াড়কে তড়িঘড়ি নথিকরণ করতে পারে ইস্টবেঙ্গল।
গুরপ্রীতকে বড় ম্যাচে খেলানোর ব্যাপারে মর্গ্যান-অতনু একমত হলেও ইস্টবেঙ্গল-অন্ত প্রাণ গোলকিপার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের কিন্তু অন্য মত। গোলটা দেখে মারাত্মক ক্ষুব্ধ। তাঁর স্পষ্ট কথা, কিছুতেই শনিবার গুরপ্রীতকে খেলানো ঠিক নয়। “ও বাচ্চা ছেলে। টেনশনে পড়ে গিয়েছে। ওকে বাঘের মুখে ঠেলে দেওয়া উচিত হবে না।” আপনি হলে কাকে খেলাতেন? ভাস্কর প্রথমে বললেন, “সন্দীপ নন্দীকে খেলানো উচিত।” পরে অনেক ভেবে বললেন, “মর্গ্যান তো আবার সন্দীপকে বিশ্রামে পাঠিয়েছিল। সেটাও খুব ভুল হয়েছে। তেমন হলে জয়ন্ত পালকে খেলাক না। নতুন ছেলে। ভাল কিপার। ওকে কি শুধু বসিয়ে রাখার জন্য সই করানো হয়েছে?” টিভিতে গুরপ্রীতের গোল দেখে বিস্মিত সর্বকালের অন্যতম সেরা ভারতীয় কিপার। ভাস্কর বললেন, “টিভিতে বিদেশি ফুটবল দেখে নকল করতে যায় অনেকে। কিন্তু এখানে তো মর্গ্যান, গুরপ্রীতের নির্বুদ্ধিতাই বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুরপ্রীত যখন উপরে উঠল, তখন মেহতাব কেন ছোট কর্নার করল? ওকে কেন বলা হয়নি বড় কর্নার করতে?”
তিন সেরা দলের বাকি ম্যাচ
ডেম্পো: পুণে এফ সি, হ্যাল, ইস্টবেঙ্গল, চার্চিল, স্পোর্টিং (মারগাও) পৈলান অ্যারোজ, মোহনবাগান, প্রয়াগ ইউনাইটেড (কলকাতা)।
ইস্টবেঙ্গল: মোহনবাগান, সালগাওকর, মুম্বই, স্পোর্টিং, চিরাগ কেরল (কলকাতা), ডেম্পো (গোয়া), লাজং (শিলং), এয়ার ইন্ডিয়া (পুণে)।
মোহনবাগান: ইস্টবেঙ্গল, মুম্বই এফ সি, ডেম্পো, হ্যাল, লাজং, পুণে (কলকাতা), সালগাওকর (মারগাও) এয়ার ইন্ডিয়া (পুণে)।
পঞ্জাবের ছেলে গুরপ্রীতকে জাতীয় যুব দলে পাঁচ বছর কোচিং করিয়েছেন তনুময় বসু। প্রি অলিম্পিক, এ এফ সি অনূর্ধ্ব ১৬, ১৯ টুর্নামেন্টে। তিনিও ‘হাতের তালুর মতো চেনা’ গুরপ্রীতকে দেখে বিস্মিত। “ওর সেই আত্মবিশ্বাস নেই ওপরে ওঠার। হেডিং, শুটিং ভাল নয়। ওকে নিশ্চয়ই কেউ উপরে যেতে বলেছে। যে পাঁচ বছরে কোনও দিন এই সাহস দেখায়নি, তা হঠাৎ দেখাবে কেন? আমি ওকে গোল করতে যেতে দেখে বিস্মিত হয়ে গেছি।” এ সব বলেও তনুময় মনে করছেন, বড় ম্যাচে গুরপ্রীতকেই খেলানো উচিত। “একটা ভুল করতেই পারে। কিন্তু পারফরম্যান্স দেখলে ইস্টবেঙ্গলে ওই এখন এক নম্বর। পরে জয়ন্ত পাল। জয়ন্তকে এখনই খেলানো উচিত নয়। ও তো আরও বাচ্চা।” গুরপ্রীতকে নিয়ে বিতর্কের পাশে জল্পনা চলছে, আই লিগে কলকাতার ক্লাবের ভবিষ্যৎ নিয়ে। লিগ তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রথম তিনটে দল তাদের বাকি আটটা ম্যাচ কে কোথায় খেলবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে। ডেম্পোর পাঁচটি ম্যাচ বাকি গোয়ায়, তিনটি কলকাতায়। ইস্টবেঙ্গলের পাঁচটা ম্যাচ কলকাতায়, মোহনবাগানের ছ’টা। প্রয়াগ ইউনাইটেড বড় ম্যাচ জেতার পরে বড় ধাক্কা খেল। তাদের জয়ন্ত সেন এক মাস বাইরে চলে গেলেন চোট পেয়ে। গোলদাতা কেন ভিনসেন্টও চোটের জন্য গোয়া যেতে পারবেন না।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.