হাতির উপদ্রবে ঘুমহারা ত্রিপুরার গ্রামবাসীরা
ত্রিপুরার পাহাড় ও অরণ্য সংলগ্ন গ্রামগুলিতে মাঝেমধ্যেই চলছে বুনো হাতির তাণ্ডব। মাঠে ফসল রক্ষা করাই সমস্যা হয়ে উঠেছে গ্রামবাসীদের কাছে। হাতির হামলার ভয়ে রাতের ঘুম চলে গিয়েছে কল্যাণপুরের দীনদয়াল সর্দারপাড়া, রামকৃষ্ণ চৌধুরীপাড়া, বিদ্যামোহন চৌধুরীপাড়া, পালপাড়া, দেবপাড়া, বাগদেবপাড়া, ওয়াইখাকপাড়া বাসিন্দাদের। গভীর রাতেও হাতির উপদ্রব ঠেকাতে বেরিয়ে আসতে হেচ্ছে গ্রামবাসীদের। তাঁদের অভিযোগ, হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না বন দফতর।
মাঠে ফসল পাকতেই উপদ্রব বেড়েছে হাতিদের। ধান, আখ, শাকসব্জি সবই চলে যাচ্ছে বুনো হাতির পেটে। মাঠে হাতির দাপাদাপিতেও নষ্ট হচ্ছে বহু কষ্টে ফলানো ফসল। গ্রামবাসীদের মাটির বাড়ি ভেঙে দিচ্ছে দামাল হাতিরা। জখম হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গৃহপালিত পশুদেরও প্রাণ বিপন্ন হাতিদের উপদ্রবে। আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা সারা রাত জেগে মশাল জ্বালিয়ে, পটকা ফাটিয়ে, টিনের ড্রাম বাজিয়ে হাতির দলকে এলাকাছাড়া করতে ব্যস্ত।
তেলিয়ামুড়া মহকুমার ডিএফও চন্দনকুমার দাস জানান, পশ্চিম ত্রিপুরার বড়মুড়া, ধলাইয়ের আঠারমুড়া, উত্তর ত্রিপুরার লঙতরাই উপত্যকা ও জম্পুই এলাকার বন-পাহাড়ে বুনো হাতির বসবাস। এ সব পাহাড় সংলগ্ন গ্রামগুলিতে ফি বছরই শীতের সময় খেতের ফসল খেতে হাতিরা দল বেঁধে পাহাড় থেকে নীচে নামে। হাতির উপদ্রব ঠেকাতে বন দফতরের ‘বিশেষ বাহিনী’ রয়েছে। চন্দনবাবুর দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা বন দফতরে অভিযোগ জানালে নিয়মানুসারে সেই অভিযোগের তদন্ত করা হয়। অভিযোগের সত্য বলে প্রমাণিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়। যদিও বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। হাতির উপদ্রবপ্রবণ এলাকায়পরিখা কাটা, বিদ্যুৎবাহী তারের বেড়া-সহ নানান ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান চন্দনবাবু। হাতির উপদ্রব ঠেকাতে অনেক আগেই পরিখা কাটার কথা ছিল বন দফতরের। সেই মতো কাজও হয়েছিল কিছুটা। যদিও এলাকাবাসীরা জানান, সে কাজ এখনও অসম্পূর্ণ।
ডিএফও যা-ই দাবি করুন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার (এখন খোয়াই জেলার অন্তর্গত) কল্যাণপুরের বিদ্যামোহন চৌধুরীপাড়ার বিদ্যামোহন দেববর্মা, বিশ্বকুমার দেববর্মা, বীরকুমার দেববর্মা, সূর্যমোহন দেববর্মার অভিযোগ, গত তিন চার বছর ধরেই হাতির উপদ্রবে তাঁরা অতিষ্ঠ। তাঁদের খেতের অধিকাংশ ফসল নষ্ট হয়েছে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে তাঁরা ফসলের ক্ষয়ক্ষতির কথা লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছিলেন। আবেদন লেখার জন্য তাঁদের জন-পিছু দশ টাকা খরচ করতে হয়েছিল। কিন্তু আজও তাঁরা কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি।
বড়মুড়া পাহাড়ের পাদদেশে, খোয়াই নদী সংলগ্ন তেলিয়ামুড়া, মুঙ্গিয়াভ্যালি, কল্যাণপুর, জাতীয় সড়ক সংলগ্ন আমবাসার গ্রামগুলিতেও হাতির উপদ্রব চলছে, স্বীকার করেন ডিএফও চন্দন দাস। ক্ষতি হচ্ছে ফসলেরও।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.