উত্তর দিনাজপুর
জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ তিলকের
ত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করলেন তৃণমূল নেতা তিলক চৌধুরী ও তাঁর অনুগামীরা।
মঙ্গলবার রায়গঞ্জের মহাত্মা গাঁধী রোডের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে তিলকবাবু অভিযোগ করেন, কংগ্রেসের লোকজনকে ‘তৃণমূলের জ্যাকেট’ পরিয়ে ‘অহঙ্কারী’ অমলবাবু দলের ক্ষতি করছেন। সে জন্য প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বকে সব জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিলকবাবু। তাঁর বক্তব্য, “রাজ্য নেতৃত্ব অমলবাবুকে জেলা সভাপতির পদে বসিয়েছেন। আমাদের বাধ্য হয়ে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়েছে। কিন্তু অমলবাবু জেলা সভাপতি হওয়ার যোগ্য নন। তিনি জেলা সভাপতির পদে বসেই কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছেন।”
তবে অমলবাবু বলেছেন, “বিষয়টিকে আদৌ কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না। সবই দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে জানিয়েছি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ না-নিয়ে কোনও কাজ আমি করি না।” জেলা সভাপতির অনুগামীদের অনেকেরই বক্তব্য, “রায়গঞ্জ কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিগ্রহের মামলায় নেতৃত্ব দিয়ে যিনি দলের মুখ পুড়িয়েছেন, তাঁর কথায় গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই।”

অমল আচার্য

তিলক চৌধুরী
তিলকবাবুর অভিযোগ, “ওঁর (অমলবাবু) ঔদ্ধত্য সীমাহীন। ইটাহার ছাড়া কোথাও তৃণমূলের কর্মীরা ওঁকে আপদে-বিপদে পান না। উনি মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীর সমালোচনা করে দলের ক্ষতি করছেন। এটা মানতে পারছি না বলে সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলতে বাধ্য হলাম।” তিলকবাবুকে সমর্থন করেছেন ইসলামপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমার নেতৃত্বে এসএফআই সদস্যরা টিএমসিপিতে যোগ দেওয়ায় আমরা ইসলামপুর কলেজের ক্ষমতা দখল করেছি। কিন্তু অমলবাবু বলেছেন এই বিষয়ে আমার ভূমিকা নাকি লজ্জাজনক। তিনি জেলা সভাপতির পদে থাকলে দলের কী অবস্থা হবে তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।”
তিলকবাবু দীর্ঘদিন তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলার কার্যনির্বাহী সভাপতি ছিলেন। দলের অন্দরে তিনি ‘ডাকসাইটে’ নেতা হিসেবে পরিচিত। গত ৫ জানুয়ারি রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপ দে সরকারকে মারধর ও প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। তিলকবাবুর নেতৃত্বেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে নিগৃহীত অধ্যক্ষ লিখিত ভাবে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। ওই ঘটনার পরে রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্র রায়গঞ্জে গিয়ে তৃণমূলের তৎকালীন জেলা সভাপতি অসীম ঘোষকে পদ থেকে সরিয়ে দেন। সেই জায়গায় অমলবাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তৃণমূলের অন্দরের খবর, জেলা সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিলকবাবুর সঙ্গে অমলবাবুর সংঘাত শুরু হয়। দলের কয়েকজন প্রবীণ কর্মী জানান, অসীমবাবু সভাপতি থাকাকালীন নানা ব্যাপারে তিলকবাবুই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে বাইরের লোকজনকে নিয়ে যাওয়া উচিত নয় বলে পরামর্শ দিয়েছিলেন অসীমবাবুর অনুগামীরা। কিন্তু, তিলকবাবু রায়গঞ্জ কলেজে যান। অমলবাবুর এক ঘনিষ্ঠ অনুগামীর কথায়, “মর্জিমাফিক সিদ্ধান্ত নিলে যে দলই বিতর্কে পড়ে তা তো রায়গঞ্জ-কাণ্ডেই স্পষ্ট হয়েছে।” রায়গঞ্জ ব্লক কমিটির সভাপতি মির আবেদ আলি কিন্তু তিলকবাবুকে সমর্থন করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “অমলবাবু কংগ্রেসের কর্মীদের দিয়ে দলের সভার চিঠি বিলি করাচ্ছেন। কংগ্রেসের হাত শক্ত করতে তিনি চক্রান্ত শুরু করেছেন। দল বাঁচাতে আমরা তিলকদার পাশে আছি।” এই অবস্থায় আজ, বুধবার রায়গঞ্জের ইনিস্টিটিউট মঞ্চে দলের জেলা কমিটির তরফে কর্মীসভার ডাক দিয়েছেন অমলবাবু। সেখানে ইসলামপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী যাবেন না বলে ঘোষণা করেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.