ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া এলাকা থেকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড সরানোর দাবিতে পুরসভার মাসিক সভায় সরব হলেন বিরোধীরা। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভায় ওই এলাকার দূষণ নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে ডাম্পিং গ্রাউন্ডকে পুঁটিমারিতে সরানোর দাবি তোলেন তাঁরা। মিটিং শেষে পুরসভার সাফাই বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে আলাদা করে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। সাফাই নিয়ে বাসিন্দাদের যে ভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগ পুরোপুরি ব্যর্থ বলে তাঁদের দাবি। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্প শুরু করতে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবর্জনা থেকে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতে পারে সে ব্যাপারে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফে যে সমীক্ষা করা হয়েছিল উভয় ক্ষেত্রেই ইতিবাচক রিপোর্ট মিলেছে। দ্রুত প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে চাই।” তিনি জানান, ডাম্পিং গ্রাউন্ডকে পুঁটিমারিতে সরাতে জমি দেখে বিগত পুরবোর্ড। সেখানে জমির সীমানা নিয়েও সমস্যা রয়েছে। ভূমি সংস্কার দফতরকে তা দেখতে বলা হয়েছে। তবে ওই এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ সেখানে আবর্জনা ফেলতে দিতে রাজি নন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৫০ থেকে ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে শহরের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ক্রমেই ওই এলাকায় বসতি বেড়েছে। বাম জমানায় পুরবোর্ডও ওই এলাকায় বাসিন্দাদের বসবাসের অনুমতি দিয়েছে। পুরসভার অনেক জমি বেদখলও হয়ে গিয়েছে। তা উদ্ধার করতে যথাযথ ব্যবস্থা হয়নি। সমস্যা মেটাতে বর্তমান পুর বোর্ড সচেষ্ট। এ দিন বাম কাউন্সিলর দিলীপ সিংহ বলেন, “ওই এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড থাকুক তা চাইছেন না বাসিন্দারা। বিগত বোর্ডে আমরা পুঁটিমারিতে তা সরানোর চেষ্টা করলেও বিরোধীরা নানা ভাবে বাধা দিয়েছিল। এখন সমস্যা তাদেরকেই মেটাতে হবে।” বাম কাউন্সিলর মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, “সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদের সরে দাঁড়ানো উচিত। বাসিন্দাদের সমস্যা তিনি মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সাফাই বিভাগের কাজকর্ম নিয়ে আমরা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকেও জানাতে চাই।” সাফাই বিভাগের কাজ নিয়ে সম্প্রতি পুরসভার সর্বদল বৈঠকে বিজেপি নেতা নন্দন দাসও সরব হন। তিনি বলেন, “ডাম্পিং গ্রাউন্ডের ১ কিলোমিটারের মধ্যে বসতি এলাকা থাকার কথা নয়। যেভাবে ওই এলাকায় আবর্জনা ফেলা হচ্ছে তাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন মানা হচ্ছে না।” অন্য দিকে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত শিলিগুড়ি পুরসভার সংযোজিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ক্ষতিপূরণের টাকা আসেনি বলে সরব হন মুকুলবাবুরা। তিনি বলেন, “শহরের ৩৩ টি ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য টাকা এলেও তাঁরা পাচ্ছেন না। অন্য দিকে সংযোজিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য কোনও টাকাই আসেনি। একই শহরের বাসিন্দাদের জন্য বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।” পুরসভার জমিতে ৫, ১৪, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারীদের জমির সত্ত্ব দিতে এ দিন বিরোধী দলনেতা প্রস্তাব আনলেও কংগ্রেস, তৃণমূল কাউন্সিলররা তাতে রাজি না থাকায় খারিজ হয়ে যায়। মেয়র জানান, তারা কাউকে উচ্ছেদ করছেন না। পুরসভার তরফেই ওই বাসিন্দাদের সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। |