বিকাশ সিংহের ‘হারিয়েই ফেলব’ (৩-১) প্রবন্ধটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দীর্ঘ দিন এক জন নগণ্য প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হিসাবে যে সামান্য অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছি সেই অভিজ্ঞতায় বলি, বিকাশবাবুর মতো যদি দু’চার জন প্রকৃতই গভীর মনের মানুষ এ রাজ্যের শিক্ষার প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত থাকতেন, তা হলে হয়তো এ রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষার এ রকম দৈন্যদশা থাকত না। তাঁর ওই প্রবন্ধের শেষ বিভাগ ‘পাপক্ষয়’ অংশের শেষ দুটি অনুচ্ছেদ এ রাজ্যের প্রতিটি শিক্ষাদরদি মানুষকে বার বার পড়ার জন্য অনুরোধ জানাই। অনুরোধ জানাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বিদ্যালয় শিক্ষার প্রাথমিক স্তর সম্পর্কে বার বার ভাববার কথা বলেছেন। প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে একটি বিরাট অট্টালিকার ভিত্তির তুলনা করেছেন। |
আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ওই কথা আমিও বিভিন্ন জায়গায় শুনিয়ে আসছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের! দুর্ভাগ্য আমাদের রাজ্যের হতভাগ্য অধিবাসীদের! প্রাথমিক শিক্ষা এ রাজ্যে হেলাফেলাই হয়ে থাকল। কী শিক্ষক নিয়োগ কী ছাত্র শিক্ষক অনুপাতে। একটু খোঁজ নিলেই দেখা যাবে, রাজনীতির ফাঁসে সব আটকে রয়েছে। বিগত সরকারে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে তো এমনই ধারণা হয় আর যে কোনও কাজ না-পারুক, প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবে। আমি বর্তমানে যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত আছি সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৯০। কিন্তু শিক্ষক ৩ জন।
বেশ কয়েক বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু চিঠি লেখা পর্যন্ত নতুন শিক্ষক আসেননি। অথচ জেলায় এমন অনেক স্কুল আছে, যেখানে শিক্ষার্থী ৪০/৫০ জন থাকলেও শিক্ষক ৪/৫ জন বহাল তবিয়তে রয়েছেন। তাই আবার ধন্যবাদ জানাই বিকাশবাবুকে। সত্যি সত্যিই কি আমরা প্রাথমিক শিক্ষাকে হারিয়েই ফেলব?
তপনকুমার দাস। প্রধান শিক্ষক, কাপাসহাঁড়িয়া অক্ষয় প্রাথমিক বিদ্যালয় (জনাই চক্র), বড়া, হুগলি |