উত্তরের চিঠি
শৈশব কাটে আবর্জনার স্তূপে
প্রাথমিক শিক্ষার আগেই উপার্জনের আশায়।
কেউ বাবলু, কারও নাম টাবু, সুনীল কিংবা সামাদ। এদের দিন কাটে রাস্তায় ঘুরে, কাগজ, প্লাস্টিক কুড়িয়ে। প্রাথমিক শিক্ষাটুকুও জোটেনি ওদের। দিন গুজরানের তাগিদে ওরা দলবেঁধে নেমে পড়েছে উপার্জনের আশায়। ময়লা ছেঁড়া জামাকাপড়ে নোংরা ঘেঁটে প্রতি দিন এক বস্তা করে শিশি-বোতল-প্লাস্টিক সংগ্রহ করে। আয় হয় গড়ে কুড়ি থেকে পঁচিশ টাকা। সর্বশিক্ষা অভিযান, মিড-ডে-মিল’-এর বাস্তব প্রয়োগেও প্রাথমিক শিক্ষাটুকু এখনও আমরা দিতে পারিনি ওদের। সত্যি এ এক লজ্জা। স্বাধীনতার ছয় দশক কেটে গেলেও সংবিধানে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-কাজ-এর অধিকারের কথা অনুচ্চারিত।
উত্তরে এ ছবি আরও প্রকট। নেই শিল্প, ভারী কলকারখানা। ফলে বেকারত্বের হার ক্রমবর্ধমান। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি বাধ্য করে সামাজিক মূল্যবোধকে হারিয়ে দিতে। আর তখনই প্রজাতন্ত্র দিবসের আনন্দ ম্লান হয়ে আসে। শৈশব কেটে যায় আবর্জনার স্তূপে, উপার্জনের আশায়।
স্কুলে নাট্যশিক্ষা
ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার মান উন্নয়ন বিষয়ে নানা চিন্তা-ভাবনা বরাবরই চলে আসছে। সব অভিভাবকই প্রত্যাশা করেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনো শিখুক। কিন্তু দীর্ঘ দিন শিক্ষকতা করে মনে হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা অনেকেই কিছু দিন পর লেখাপড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। বিশেষ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা। তারা অনেকেই খুব ছোট বয়স থেকে জীবন-যুদ্ধে রত। স্বভাবতই স্কুলে আসতে তাদের ভাল লাগে না। বিদ্যালয়েও এরা অনেক সময় তিরস্কৃত হয়। ছাত্রছাত্রী অত্যধিক হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকার পক্ষেও প্রত্যেকের প্রতি ব্যক্তিগত মনোযোগ দেওয়া সব সময় সম্ভব হয় না। অথচ এদের অনেকের মধ্যেই যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। যা হয়তো সারা জীবনে প্রকাশের পথই পায় না।
মনে হয়, এই সমস্যা মেটাতে নাট্যশিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। নাটকের ভেতর ছেলেমেয়েরা জীবনকে খুঁজে পাবে। তবে শিক্ষক-শিক্ষিকাকেও যথেষ্ট আন্তরিক হতে হবে। সাম্প্রতিক কালে এর জলজ্যান্ত উদাহরণ হিসেবে রত্নাকর দস্যু ‘নাইজেল ওকার’র ‘বাল্মীকি’তে রূপান্তরিত হওয়ার বিষয় স্মরণ করতে পারি। রবি ঠাকুরের ‘বাল্মীকি প্রতিভা’য় বাল্মীকির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ১৮টি অপরাধে অপরাধী দাগি আসামি নাইজেল। নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়ের প্রচেষ্টায় তিনি নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন। নাটকের ভেতর দিয়ে আমরাও যথাযথ পথ দেখাতে পারলে ছাত্রছাত্রীরা সামাজিক দিক দিয়ে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে জীবনকে দেখতে শিখবে। একটা গঠনমূলক চিন্তাধারাও তৈরি হবে। বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘শিক্ষা হল মানুষের ভেতরের পূর্ণতারই প্রকাশ’। গাছ যেমন সূর্যের আলো খোঁজে, শিশুও উজ্জ্বল আলোকবিন্দুর খোঁজ করে। নাটক মনে হয়, শিশুর এই আকাঙ্ক্ষা অনেকটাই মেটাবে।
রেলগেটে যন্ত্রণা
উত্তরবঙ্গে বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র শিলিগুড়ি। এই শহরের ব্যস্ততা চোখে পড়ার মতো। পার্শ্ববর্তী বিস্তীর্ণ তরাই-ডুয়ার্সের অসংখ্য মানুষ রুজি-রুটি’র চাহিদা মেটাতে নিত্যই শিলিগুড়িতে ভিড় জমান। ফলে যোগাযোগ মাধ্যম এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে। যার অন্যতম হল উত্তর-পূর্ব রেল। দৈনিক স্থানীয় ও দূরপাল্লার বহু ট্রেন যোগাযোগ রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে আসছে। যে সংখ্যাটি ক্রমশ বেড়েই চলেছে। সমস্যা শুরু সেখান থেকেই। শিলিগুড়ির ঠিক কেন্দ্রেই অবস্থিত ঐতিহাসিক ‘টাউন স্টেশন’। এর পাশ ঘেঁষেই এনজেপিগামী গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বলতে গেলে এই পথ শিলিগুড়ির প্রবেশ দ্বার হিসেবে চিহ্নিত। অথচ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এই পথে যাতায়াতের প্রধান বাধা হল রেল-ফটক। প্রহরী বিহীন। তার ওপর দিনের অধিকাংশ সময় পথ আটকে দাঁড়িয়ে থাকে অসংখ্য মালগাড়ি। কারণ নিকটবর্তী টাউন স্টেশনের স্বল্পপরিসরতা। ফলে প্রাণ হাতে নিয়ে মানুষকে ট্রেনের নিচে মাথা গুঁজে পারাপার করতে হয়। এই পথেই রয়েছে বহু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। পড়ুয়াদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে লাইন পেরোতে হয়।
এই বিষয়টি রেল দফতরকে বহু বার জানানো হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে এ মর্মে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়েছে বহু বার। নিট ফল শূন্য। রেল দফতর থেকে আন্ডারপাস করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। বরং সমস্যা বেড়েই চলেছে। এখনই এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। ওখানে প্রহরী সহ রেল-ফটক তৈরি হলে ভবিষ্যতের বড় কোনও দুর্ঘটনা ঠেকানো সম্ভব হবে।
চিঠি পাঠান নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
‘উত্তরের চিঠি’
এ বি পি প্রাঃ লিঃ, ১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.