|
|
|
|
আমাদের চিঠি |
মোগলমারির প্রত্নক্ষেত্র অসংরক্ষিত |
|
মাটির তলা থেকে উৎখনিত বৌদ্ধবিহার। |
দাঁতনের ইতিহাস অতি প্রাচীন। প্রাচীন ‘দণ্ডভুক্তি’ রাজ্যের কেন্দ্রভূমি ছিল দাঁতন। অঞ্চলটির সর্বত্র প্রত্নচিহ্ন বিদ্যমান। দাঁতন-১ ব্লকের মোগলমারি গ্রামে ঢোকার মুখেই বিশাল ঢিবি। স্থানীয় মানুষের কথায় ‘সখিসোনার ঢিবি’। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ২০০৩-০৪-এ এখানে খনন শুরু করে। পাঁচ দফায় কাজ হয়েছে। প্রতি বারই একটু একটু উন্মোচিত হয়েছে ইতিহাস। নানা সময়ের প্রায় চল্লিশ রকমের ইট, বুদ্ধমূর্তি, পোড়ামাটির প্রদীপ, অর্ঘ্যপাত্র প্রভৃতি পাওয়া গিয়েছে। গবেষকরা মনে করেন, ষষ্ঠ-সপ্তম শতকে নির্মিত এক বৌদ্ধবিহার ছিল এখানে। হিউয়েন সাঙের বিবরণে তাম্রলিপ্ত রাজ্যে যে দশটি বৌদ্ধ বিহারের উল্লেখ রয়েছে, তার একটিও এখনও পর্যন্ত অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় আবিষ্কৃত হয়নি। মোগলমারির এই বৌদ্ধবিহারটি এর অন্যতম হতে পারে। সন্ন্যাসীদের থাকার ছোট ছোট ঘর, প্রবেশদ্বার, চার দিকে প্রদক্ষিণ পথ প্রভৃতি এখানে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু প্রত্নক্ষেত্রটির অধিকাংশই এখনও মাটির তলায়। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের পক্ষ থেকে মোগলমারির বিহারকে জাতীয় স্তরের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় প্রত্নতত্ত্ব দফতরের আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা এর গুরুত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। অথচ আজ পর্যন্ত প্রত্নক্ষেত্রটিকে সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাজ হয়নি। প্রত্নক্ষেত্রটি নষ্ট হচ্ছে। প্রত্নসামগ্রী চুরি হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে এর অধিগ্রহণ ও সংরক্ষণ জরুরি। ব্যাপক খননকার্য দরকার, যাতে আমাদের ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়।
সূর্য নন্দী। দাঁতন, মেদিনীপুর
|
নিরাশার অন্ধকারে |
আমি এক জন সরকারি ট্রেনিং প্রাপ্ত ‘অ্যাক্রেডিটেড সোস্যাল হেলথ অ্যাক্টিভিস্ট’, সংক্ষেপে ‘আশা’। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের গ্রামীণ সাব-সেন্টারে কাজ করি। প্রসূতি মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিই। প্রসবের আগে ও পরে দেখভাল, শিশুদের টিকাকরণ, স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো, প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরিচর্যা, হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা বাড়ি বাড়ি ঘুরে করি। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যা। রাতে অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যায় না। পঞ্চায়েতগুলোতে অ্যাম্বুলেন্স থাকলে আসন্ন প্রসবা মায়েদের কষ্ট দূর করা যায়। হাসপাতালে আর এক ধরনের অমর্যাদা-নিরাপত্তাহীনতা। আগে এই কাজ করে ৮০০ টাকা সাম্মানিক ভাতা পেতাম। গত বছর শুরু হয়েছে ‘আশার উৎসাহ ভাতা’। এতে ছাব্বিশ ধরনের কাজ দেওয়া হয়েছে। কে কতটা কাজ করলেন, সেই মতো ভাতা দেওয়া হবে। বহু ক্ষেত্রে আমরা কাজ করার সুযোগই পাই না। কারণ প্রতি মাসে সব এলাকায় সব কেস থাকে না। যেমন, ওষুধের জোগান না থাকায় টিকাকরণ হয় না, সব গ্রামে কুষ্ঠরোগী থাকেন না। ফলে মাসে ৩০০-৪০০ টাকার বেশি জুটছে না। অথচ এই প্রকল্পের আধিকারিকরা স্বীকার করেন, ‘আশা’ কর্মীরা না থাকলে গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়বে। আমরা সংঘবদ্ধ ভাবে ব্লক ও জেলা স্তরে গণডেপুটেশন দিয়েছি। কিন্তু কোনও আশার আলো দেখিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, নতুন ‘ফরম্যাট’ বাতিল করুন। কর্মক্ষেত্রে স্থায়ীকরণ এবং উপযুক্ত বেতনের ব্যবস্থা করুন। আর সাইকেল পেলে আমাদের কাজ করতে সুবিধে হত।
জ্যোৎস্না ঘোষ। দাদপুর, হুগলি
|
বঞ্চিত |
রাজ্যের রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের অধীন ‘আশা’ কর্মীরা দায়িত্বশীল কর্তব্য পালন করা সত্ত্বেও ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত। যেমন, খয়রাশোল ব্লকের অধীনে পাঁচরা গ্রামের প্রান্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫০টি পরিবারের প্রায় ৭০০ জন মানুষের দায়িত্ব সামলান। বাড়ি বাড়ি গিয়ে যক্ষ্মা রোগীর থুথু সংগ্রহ, রক্ত সংগ্রহ, পোলিয়ো খাওয়ানো, গর্ভবতী মায়ের সম্পর্কে তথ্য গ্রহণ করেন। ২০০৮-এর অগস্টে কাজ শুরু করে ২০১০-এর ডিসেম্বর থেকে প্রথম বেতন পান মাসে আটশো টাকা। আগের বকেয়া টাকা পাননি। মাঝে শোনা গিয়েছিল, তাঁরা বর্ধিত বেতন হিসেবে পাবেন ২,২০০ টাকা। তার বদলে শুরু হল কাজ অনুযায়ী বেতন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খয়রাশোল এসে আশ্বাস দিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই ভাবা হবে। দিদি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন নয় মাস। আশা কর্মীরা কিন্তু সেই আঁধারেই।
অলোক মুখোপাধ্যায়। পাঁচরা, বীরভূম
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
আমাদের চিঠি, সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|