মহিলাদের কামরা অন্ধকার,
ত্রাসের সফর কাঞ্চনজঙ্ঘায়
বাইরে অন্ধকার। ঘুটঘুটে অন্ধকার মহিলাদের কামরাতেও। নেই কোনও পুলিশ বা রেলকর্মী। রীতিমতো আতঙ্কে জনা দশেক মহিলা। রবিবার এ ভাবেই চলেছে শিয়ালদহমুখী ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস।
আতঙ্কিত মহিলা যাত্রীদের বক্তব্য, “অন্ধকার কামরায় কোনও অঘটন ঘটলে আমরা কী করতাম বলুন তো! বোলপুর ও বর্ধমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনেও কোনও রেলকর্মীর এই বিষয়টা নজরেই পড়ল না।”
বালুরঘাটের বাসিন্দা নূপুর মাহাতো মালদহ থেকে ওই ট্রেনে উঠেছিলেন। রবীন্দ্রভারতীর ওই ছাত্রী বলেন, “মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও বর্ধমানে কয়েক জন যুবক আমাদের অন্ধকার কামরায় উঠে পড়ে। তাদের নামিয়ে দিতে কোনও রেলকর্মী এগিয়ে আসেননি। আমরা, মেয়েরাই চেঁচামেচি করে ওদের নামাই।” সিউড়ির বাসিন্দা তনিমা সরকার কাঞ্চনজঙ্ঘায় উঠেছিলেন আমোদপুর স্টেশন থেকে। তাঁর বক্তব্য, “দিনভর মেঘলা ছিল। বোলপুরের পর থেকেই একটু একটু করে দিনের আলো নিভে যায়। তার পরেই দেখি, আমাদের কামরা
অন্ধকার হয়ে আসছে। বর্ধমানে তো পুরো অন্ধকার। শৌচাগারে যেতে হয়েছে মোবাইল ফোনের আলো জ্বালিয়ে।” তিনি জানান, ভয়ে এমন অবস্থা হয় যে, মোবাইল ফোন চালু রেখে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ফিরতে হয়েছে।
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের এই হাল কেন?
কোনও সদুত্তর মেলেনি রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “রেল-কর্তৃপক্ষের কাছে এই নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি।” ওই মহিলাদের বক্তব্য, “মহিলা কামরায় রেলের কেউ ছিলেন না। বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন থামার পরে রেল পুলিশকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।”

পুলিশ নেই রাতের শেষ প্যাসেঞ্জারে
শীতের রাতে থিকথিকে ভিড়ের ট্রেনে পুলিশের দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর, এমনকী লালগোলা যাওয়ার শেষ ট্রেন শিয়ালদহ থেকে ছাড়ে রাত ১১টা ৫ মিনিটে। রাতের ট্রেন, পাড়ি দিতে হবে ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ। কিন্তু ট্রেনের প্রথম শ্রেণিতে পুলিশের দেখা মিলল শুরুতে একবারই। তিনি এলেন, একবার পুরো কামরা ঘুরলেন, ব্যাস। অন্তত কৃষ্ণনগর অবধি রাস্তায় আর দেখা মিলল না তাঁর। রাতের ট্রেনের রক্ষীর বন্দুকও ছিল না। পুলিশের হাতে শুধু লাঠি। মহিলা কামরাতে অবশ্য পুলিশ ছিল। মাত্র কয়েকদিন আগেই বারহাড়োয়াতে প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ডাকাতি হয়ে গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা খুনও করেছে এক জনকে, তারপরেও কেন এই অবস্থা! শিয়ালদহের এসআরপি তাপসরঞ্জন ঘোষ বলেন, “রাতের লালগোলায় রেলকর্মী থাকার কথা। কিন্তু প্রত্যেক কামরায় রেলকর্মী রাখা সম্ভব নয়। ফলে সাধারণত মহিলা কামরার আশেপাশে থাকেন তাঁরা। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।” তবে বেঙ্গল রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পুন্ডরীকাক্ষ কীর্তনীয়া বলেন, “রাতের ট্রেনে পুলিশ থাকা খুবই জরুরি। কিন্তু পুলিশ থাকে না। আমরা একাধিকবার যাত্রী সুরক্ষার বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।” তবে ওই রাতেও লোকের কমতি নেই। রাত দেড়টায় তাহেরপুর স্টেশনে রীতিমতো ভিড়। মহিলা কামরাগুলোও ভর্তি। সাধারণ কামরাগুলোতে শুধু বসার জ্যয়গাতেই নয়, বাঙ্ক এমনকি মেঝেতেও বসে থাকেন যাত্রীরা। প্রতিটা স্টেশনেই প্রচুর জিনিসপত্র ওঠানো নামানো হয়। ওঠে সব্জি থেকে বস্তাবন্দি অন্য জিনিসপত্র। যাত্রীদের বক্তব্য, কিন্তু পুলিশ না থাকায়, কার মধ্যে কী রয়েছে, তার উপরে কোনও নজরদারিও নেই। যাত্রীদের দাবি, স্টেশন ছাড়া অন্য ফাঁকা জায়গাতেও মাঝেমধ্যে ট্রেনও দাঁড়িয়ে পড়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.